• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

অযত্ন ও অব্যবস্থাপনায় হাবিপ্রবি’র ১০ তলা একাডেমিক ভবন

মো. রাফিউল হুদা, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:০৯, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

ফন্ট সাইজ
অযত্ন ও অব্যবস্থাপনায় হাবিপ্রবি’র ১০ তলা একাডেমিক ভবন

নতুন হওয়া একমাত্র ১০ তলা একাডেমিক ভবনের অব্যবস্থাপনা ও অযত্নের ফলে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) যেন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভবনটি। জানা গেছে এ অবস্থায় কোনো বিভাগ দশ তলা ভবনে যেতে চাচ্ছে না।

গত ২০১৮ সালের ২৭ মে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ (দশ) তলা বিশিষ্ট এই একাডেমিক ভবন নির্মাণের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম।

ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের প্রায় ৫ বছর পর ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল মিটিং এর মাধ্যমে দশতলা ভবন উদ্বোধন করেছিলেন। এই দশ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবনটির নাম দেওয়া হয় ড. কুদরত-ই-খুদা একাডেমিক ভবন। দশ তলা বিশিষ্ট এই একাডেমিক ভবনটি প্রতিটি তলা ৪ হাজার স্কয়ার মিটার নিয়ে মোট ৪০ হাজার স্কয়ার মিটার জায়গায় নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। 

উদ্দেশ্য ছিলো, গবেষণা ও ক্লাসরুম সংকট সমাধান করে ১০ তলা বিশিষ্ট এই একাডেমিক ভবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি তলায় যাতায়াতের জন্য থাকবে উন্নতমানের ৭টি লিফট। কিন্তু বাস্তবে ৭ টি লিফট থাকলেও সেগুলোর মান নিয়ে সংশয়ে দিন পার করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। ১০ তলা ভবনের ৭ টি লিফটের ৫ টি লিফটই প্রায় সময় নষ্ট হয়ে বন্ধ থাকে। এছাড়াও শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের লিফটে আটকে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা যেনো স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

লিফটের ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ার শাখার সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার তরিকুল ইসলাম বলেন, লিফট পরিচালনা ও ভালো সার্ভিস দেওয়ার জন্য প্রয়োজন লিফটম্যানের। আমরা বিভিন্ন সময় লিফটম্যান নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসলেও তা পায়নি। এছাড়াও মেইনটেনেন্স এর জন্য আগের প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন প্রতিষ্ঠানকে টেন্ডারের মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আশা করছি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

দশতলা এই একাডেমিক ভবনের প্রতিটি তলায় থাকার কথা ছিলো ক্লাসরুম ও ল্যাব। ডীন, চেয়ারম্যান ও অন্যান্য শিক্ষকদের জন্য থাকবে নিজস্ব চেম্বার। ক্লাসরুম আর ল্যাব থাকলেও অধিকাংশ ক্লাস রুম আর ল্যাব ফাঁকায় পড়ে আছে, নেই কোনো চেয়ার টেবিল অথবা ডেস্ক। ল্যবগুলোর নেই সুনির্দিষ্ট কোনো কাঠামো নেই কোনো ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ। এইসব কারণে বিভাগ ও অনুষদগুলো দশ তলা একাডেমিক ভবনে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখনো দশতলা ভবনের রুম, ফ্লোর বণ্টন সম্পূর্ণ হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানের আগে জগাখিচুড়ি ভাবে প্রায় সব ফ্যাকাল্টি বিভাগকে একটি করে রুম বণ্টন করে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রশাসন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নতুন করে বণ্টন কমিটি হলেও এখনো বণ্টন করে দেওয়া হয়নি।

এছাড়াও নিচতলায় শিক্ষার্থীদের জন্য থাকার কথা উন্নতমানের ক্যাফেটেরিয়া, থাকার কথা ক্লাস শেষে পড়াশোনা সম্পর্কে বিভিন্ন আলোচনা ও ক্লাসের অবসর সময়ে বিনোদনের জন্য স্টুডেন্ট গেদারিং পয়েন্ট। ছেলে ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য থাকার কথা পৃথক পৃথক নামাজ ঘর ও ওজুখানার ব্যবস্থা এবং ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য থাকার কথা আলাদা কমনরুমেরও ব্যবস্থা। শুধু তাই নয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য সেমিনার রুম এবং কনফারেন্স রুমও থাকার কথা কিন্তু রুম আর স্পেস পড়ে থাকলেও  কোনো সুবিধা এখন পর্যন্ত চালু না হওয়ায় নিচতলা পড়ে আছে অযত্নে আর  ধুলা ময়লার স্তূপ হয়ে। শুধু নিচ তলায় নয়, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে পুরো ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরই পড়ে আছে ময়লা ও অপরিচ্ছন্নভাবে। 

একাধিক অনুষদের ডিনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্লাসরুম আর ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ ও প্রোপার রুম এবং ফ্লোর ডিস্ট্রিবিউশন না হওয়ার কারণে বিভাগগুলো সুষ্ঠভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। এছাড়াও ল্যাব গুলো এস্ট্যাবলিশ না হওয়ায় বিপাকে রয়েছে টেকনিক্যাল সাব্জেক্ট রিলেটেড অনুষদ গুলো। এছাড়াও অনেক রুম অযথা ফাঁকা পড়ে আছে, কোনো কাজেই লাগানো হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর কবির বলেন, নতুন ডিস্ট্রিবিউশন কমিটি ইতোমধ্যেই আমাদের কাছে একটি প্রাথমিক রিপোর্ট দিয়েছে। আমরা সেই আলোকে শীঘ্রই কমিটির সাথে বসে যৌক্তিকভাবে প্রয়োজনীয়তা অনুসারে  রুম আর ফ্লোর বণ্টন করে দিবো। আর দশ তলা একাডেমিক ভবনের অনেক কাজ এখনো বাকি। আগের প্রশাসন এসব কাজ বাকি রেখেই ভবন বুঝে নিয়েছে, চালু করে দিয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সিকিউরিটি মানিও অনেকটায় ফেরত দিয়ে দিয়েছে যার ফলে আমরা চাইলেও বাকি কাজ করতে পারছি না। সামনে আসতে আসতে সমস্যা গুলো সমাধান করা হবে।

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই ইউজিসির সাথে কর্মচারী, নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে কথা বলেছি। ফ্রিল্যান্সিং কর্মচারী অর্থাৎ টেন্ডারের মাধ্যমে দ্রুততম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা নিরাপত্তা কর্মীসহ কর্মচারী নিয়োগ দিবো। এর মধ্যে থাকবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মী। আর বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা করে লিফটম্যান নিয়োগ দেওয়ার সক্ষমতা নেই। তবে ফ্রিল্যান্সিং কর্মচারীদের ট্রেনিং দিয়ে লিফটম্যানের চাহিদা পূরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

বিভি এ/আই

মন্তব্য করুন:

Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2