স্কুলের মাঠে চলছে বসতঘর নির্মাণের প্রস্তুতি, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

মাছপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের ১২২ নম্বর মাছপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে বসতঘর নির্মাণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বুদ্ধিমন্ত বিশ্বাস নামে জনৈক এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়টির মাঠ দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন তাঁরা।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার ওই গ্রামের ভূবন বিশ্বাসের ছেলে বুদ্ধিমন্ত বিশ্বাস লোকজন নিয়ে টিন, কাঠ, নেটজাল ও বাঁশের বেড়া দিয়ে বিদ্যালয়টির মাঠ দখল করে নেন। বুধবার (১৬ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে মাঠ দখলের সত্যাতা পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সেতু বিশ্বাস ও প্রমি বিশ্বাস জানায়, তারা বিদ্যালয়টির মাঠে খেলাধুলা করতো। এখন আর খেলাধুলা করতে পারে না। এমনকি বিদ্যালয় শুরুর আগে সমাবেশও করতে পারছে না। মাঠটি দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে এই দুই শিক্ষার্থী।
বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মিনু বিশ্বাস জানান, বিদ্যালয়টির মাঠ অনেক নিচু ছিল। সরকারি অর্থে মাঠটি ভরাট করা হয়েছে। মাঠটিতে এখন শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে। মাঠ ভরাটের সময় বুদ্ধিমন্ত বিশ্বাস বাধা দেননি। এখন তিনি মাঠটি তার বলে দাবি করে দখল করে নিয়েছেন। বিষয়টি তিনি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা নিরোধ বরণ বিশ্বাস জানান, ১৯৮৫ সালে বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের অর্থায়নে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯১ সালে এই বিদ্যালয়টি সরকারি ভাবে অনুমোদন পায়। ২০১৩সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় এলাকার শিক্ষানুরাগী অমল কৃষ্ণ বিশ্বাস ৩৩ শতাংশ জমি দান করেছিলেন। এ জন্য বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক হিসেবে অমল কৃষ্ণ বিশ্বাসকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
বিদ্যালয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক ও জমিদাতা অমল কৃষ্ণ বিশ্বাস জানান, তিনি বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় তিনি ৩৩ শতাংশ জায়গা দান করেছিলেন। এর মধ্যে ৮ শতাংশ জায়গা ছিল তার ভাতিজা বুদ্ধিমন্ত বিশ্বাসের। সে কারণে অন্য জায়গা থেকে বুদ্ধিমন্তকে ৮ শতাংশ জায়গা দেওয়া হয়েছিল। যা সে এখনও ভোগদখল করছে। সেই ৮ শতাংশ জায়গা ভোগ দখল করা সত্যেও বুদ্ধিমন্ত জোরপূর্বক বিদ্যালয়ের মাঠের ৮ শতাংশ জায়গা দখল করে নিয়েছে।
এ বিষয়ে বুদ্ধিমন্ত বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যালয়টির মাঠে আমার বৈধ ৮ শতাংশ জায়গা রয়েছে। সেই জায়গায় আমি ঘর তোলার জন্য টিন, বাঁশ, কাঠ এনেছি।
দখল হয়ে যাওয়া মাঠটি উদ্ধারে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আমজাদ হোসেন।
বিভি/এমএস/কেএস
মন্তব্য করুন: