ছাত্রীর সঙ্গে অশ্লীল ফোনালাপ ফাঁস, পার পেতে মরিয়া দুই শিক্ষক!

ছাত্রীর সঙ্গে অশ্লীল ফোনালাপের অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ার অভিযোগ রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করেছেন ওই দুই শিক্ষক। এই অভিযোগ হতে পার পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। এতে সহযোগিতা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র কিছু শিক্ষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের জুলাইয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ডঃ মিজানুর রহমানের সঙ্গে এক নারী শিক্ষার্থীর অশ্লীল প্রেমালাপের অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। মুহূর্তেই যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসি’র পরিচালকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সেই সাথে আগামী সাত দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রার বরাবর কারণ দর্শাতে বলা হয়।
এদিকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুনকে আহ্বায়ক করা হয়। কমিটির অন্য দুজন সদস্য হলেন- শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।
এদিকে একই অভিযোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনের বিরুদ্ধে। ছাত্রীর সাথে অশ্লিল ফোনালাপের অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। এছাড়াও ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর এই শিক্ষক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রভাষক পদের নিয়োগ বাছাই বোর্ডের বিশেষজ্ঞ ছিলেন। সেই বোর্ডে তার আপন ছোট ভাই ড. মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন প্রভাষক পদে প্রার্থী ছিলেন।
বিষয়টি অধ্যাপক আরফিন ইবি কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে তথ্য গোপন করেন। ফলে বিষয়টি জানতে পেরে এই শিক্ষকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬২তম সিন্ডিকেট সভায় কালো তালিকাভুক্ত করে। পরে অধ্যাপক আরফিন এই বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ২০ এপ্রিল ড. আরফিনের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করে বিষয়টি থেকে তাকে অবমুক্ত করার জন্য সুপারিশ করেছেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মু. আতাউর রহমান।
এসব অভিযোগ হতে অব্যাহতি পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন অভিযুক্ত দুই শিক্ষক। এতে কিছু সিনিয়র শিক্ষক সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠছে। এসব বিষয় নিয়ে শিক্ষক মহলে ফের সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘অব্যাহতি চেয়ে আমি কোন ধরনের লিখিত দেইনি। অভিযোগ প্রশাসন করেছে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা তারাই নিবেন।’
এবিষয়ে অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রতিবেদকের সাথে সশরীরে কথা বলতে চান তিনি।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মু. আতাউর রহমান বলেন, ‘অব্যাহতি চেয়ে উভয় শিক্ষক লিখিত দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত ফাইলটি ভিসি স্যারকে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী করণীয় তার হাতে।’
অডিও ফাঁস তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন বলেন, ‘করোনার কারনে আমরা এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারিনি। তবে এ সংক্রান্ত অনলাইনে সভা করেছিলাম আমরা।’
বিভি/আইএস/এইচএস
মন্তব্য করুন: