লাখ টাকা ছাড়িয়েছে পানি-বিদ্যুৎ বিল
চার বছরে ভাড়া না দিয়ে উল্টো ভর্তুকি পাচ্ছে বেরোবি’র ক্যাফেটেরিয়ার ঠিকাদার

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় চার বছর থেকে ভাড়া না দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এস. এস. ক্যাটারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান। শুধু ভাড়াই নয়, এখন পর্যন্ত দেয়নি বিদ্যুৎ ও পানির বিলও। অথচ ১৫ হাজার টাকা ভর্তুকি পেয়েছে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনাকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এস. এস. ক্যাটারিং।
চুক্তিপত্র সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৭মার্চ তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ট্রেজারারের দায়িত্ব পালনকালে এই চুক্তি করেন। চুক্তি অনুসারে প্রতিমাসে ১০হাজার টাকা ভাড়া ইংরেজি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে এবং বিদ্যুৎ ও পানির বিল কাগজ পাওয়ার সাত দিনের বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিশোধ করাতে হবে। এছাড়া চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার দুইবছর পরে ১০শতাংশ হারে ভাড়া বৃদ্ধির কথাও উল্লেখ আছে চুক্তিপত্রে।
কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন টাকাই দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। ক্যাফেটেরিয়ার বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২২ থেকে উঠে এসেছে এমন তথ্য। এতে দেখা যায়, ৭মার্চ ২০১৯ থেকে ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ কোন ভাড়া দেইনি। মাসিক ভাড়া দশ হাজার হিসেবে মোট তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা বাকি, অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিল হিসেবে আনুমানিক তিন হাজার টাকা করে এক লাখ ২ হাজার টাকা বাকি আছে। কোন বিল পরিশোধ করেনি (পুরো টাকা বাকি) বলে মন্তব্য করা হয় প্রতিবেদনে।
এছাড়াও ক্যাফেটেরিয়ার আবর্জনা ফেলার জন্য নেই নির্দিষ্ট স্থান। ক্যাফেটেরিয়ার এক সাইডে গর্ত করে ফেলা হচ্ছে এসব আবর্জনা আর ময়লা পানি, যা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। ফলে ক্যাফেটেরিয়া সংলগ্ন আশেপাশের জায়গাগুলোতে হাটাচলা ও অবস্থান করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আমাদের তো আলাদা করে আড্ডা দেয়া বা সংস্কৃতি চর্চার জায়গা নেই, ক্যাফেটেরিয়ার সামনের, পাশে বসে আমরা এই কাজগুলো করতাম কিন্তু এখন দুর্গন্ধে এখানে থাকা যায় না। কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত।
ভাড়া না দেয়ার ব্যাপারে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনাকারী ঠিকাদারের প্রতিনিধি সেলিম ইসলাম জানান, আমরা ক্যাফেটেরিয়া নেয়ার কিছুদিন পরে করোনা মহামারী শুরু হয়, ফলে দীর্ঘদিন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আমরা করোনাকালীন ভাড়া মওকুফের আবেদন দিয়েছি। এরপরের মাসগুলোর ভাড়া কেনো দেননি এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ভাড়া দিয়ে দিবো সামনে।
এসব বিষয় নিয়ে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, ক্যাফেটেরিয়ার আবর্জনা বা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছি, দ্রুত সমাধান আশা করছি। আর ভাড়ার বিষয়ে ট্রেজারার মহোদয় অবগত আছেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
চুক্তির নিয়ম মেনে ভাড়া না দেয়ার বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মজিব উদ্দিন আহমদকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি বলেন, আমি কাজ শুরু করেছি বিষয়টি নিয়ে, পরে কথা বলবো।
প্রসঙ্গত, উদ্বোধন হওয়ার পরে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া। পরে শিক্ষার্থীদের দাবীর মুখে ২০১৯ সালে এটি চালু করার জন্য এস. এস. ক্যাটারিং নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: