আসিফের তথ্য-প্রযুক্তি আইনের মামলা ছয় মাসের জন্য স্থগিত

জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলার বিচারকাজ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
সোমবার (১১ এপ্রিল) বিকালে আসিফ আকবার তাঁর ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেইজে এই তথ্য জানিয়েছেন। ২০১৮ সালের ৫ জুন দিনগত মধ্যরাতে এফডিসির পার্শ্ববর্তী নিজ স্টুডিও থেকে সিআইডি’র একটি টিম তাঁকে গ্রেফতার করে। তেজগাঁও থানায় দায়ের করা মামলায় আইসিটি এ্যাক্ট ও প্রতারণার অভিযোগে আসিফ আকবরকে গ্রেফতার করা হয়। মামলা নং ১৫।
এরপর কয়েকমাস জেলে খেটে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এই মামলায় গত ৮ নভেম্বর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস-সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালতে আদেশের জন্য ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম শিল্পী আসিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আবেদন জানান। অন্যদিকে, আসিফের আইনজীবী জজ আহমেদ মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন।
পরে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস-সামছ জগলুল হোসেন উভয়পক্ষের শুনানি শেষে অধিকতর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে সংগীতশিল্পী শফিক তুহিনের দায়ের করা মামলায় আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক বিচার কার্য শুরু হয়।
এই বিষয়ে আসিফ আকবরের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু দেওয়া হলো
আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ’র। আজ মহামান্য হাইকোর্ট আমার বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন- ২০০৬ মামলাটি ছয়মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছেন। মাননীয় বিচারপতি মোহাম্মদ আবু জাফর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি মোহাম্মদ মাহমুদ হাসান তালুকদার মহোদয়ের বেঞ্চ আজ এই আদেশ দেন। মহামান্য উচ্চ আদালতের মাননীয় বিচারক মহোদয়দের এই আদেশ শুনে মনে হলো আমার গলায় লটকে থাকা অপবাদের জ্বলন্ত দগদগে লাল লোহার শিকলটি খসে পড়লো। আলহামদুলিল্লাহ।
আমার ছোটবেলার বন্ধু ব্যারিষ্টার মইন ফিরোজী মাকিন এবং তাঁর আইনজীবী স্ত্রী বন্ধু সাবরিনা সামাদ ফিরোজী - তাদের চালিয়ে যাওয়া জোরালো লড়াইয়ের ফসল এই স্থগিতাদেশ। ছোটভাই এডভোকেট জাকির হোসেন এডভোকেট মনিরসহ সংশ্লিষ্ট সবার জন্য ভালবাসা। আমি আজ মুক্ত, উড়ে বেড়ানোর জন্য আমার আকাশ আবার উন্মূক্ত। দীর্ঘ চার বছরের অপমান অপবাদ গ্লানি থেকে মুক্তি পেয়েছি। এক রমজানে গ্রেফতার হয়েছি, আরেক রমজানে পাওয়া এই আদেশে আমি মহান আল্লাহর প্রতি যারপরনাই কৃতজ্ঞ।
গতকাল ইমরান খানের অপমান দেখেছি, দেখেছি খান সাহেবের জন্য হিমালয়ের মতো অবিচল হয়ে পাশে থাকা আলী মুহাম্মদ খান এর মত সেরা বন্ধুকে। মইন খবর পেয়ে স্বেচ্ছায় এই মামলা নিয়েছে। ওর মতো এতোবড় একজন ব্যারিষ্টার সাধারণত লোয়ার কোর্টে যেতে চায়না। সে প্রতিটা ডেট এ নিম্ন আদালতে আমার সাথে পায়ে হেঁটে সাততলা নয়তলার সিড়ি ভেঙ্গে উঠেছে বি না বিরক্তিতে। আমাকে বকেছে শাসন করেছে আবার আগলে রেখেছে তার বুকের ভিতর লুকিয়ে থাকা নরম কুসুমের মতো আবেগের জায়গাটায়। তুই ভালো থাকিস মামু, আই লাভ ইউ। আমার জন্য দোয়া করেছেন সারাদেশের মানুষ, আমি কৃতজ্ঞ। যারা কোনো সত্য না জেনে আমার মরহুম বাবা মা’কে গালাগাল করেছে তাদেরও ধন্যবাদ। আমার পরিবার বন্ধুমহল ইন্ডাষ্ট্রীর সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। গীতিকার শফিক তুহিনকেও ধন্যবাদ আমাকে জেলে পাঠিয়ে নতুন অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে চাই আইনজীবীর সন্তান এবং দেশের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে।
ভালবাসা অবিরাম.......
বিভি/এসএইচ/এএন
মন্তব্য করুন: