অবিকল সত্যজিৎ হয়ে উঠতে অভিনেতা জিতু যা করেছেন শুনে সবাই অবাক!

শুধু মাত্র চরিত্রের খাতিরে চূড়ান্ত লেভেলের ডেডিকেশন কলকাতার অভিনেতা জিতু ! চিকিৎসকের সাহায্যে নিয়ে নানা রকম শারীরিক পরিবর্তনও ঘটিয়েছেন আকাশ আট চ্যানেলে ‘হয়তো তোমারই জন্য’ খ্যাত এই অভিনেতা।
সাংবাদিকদের জিতুর অভিনেত্রী স্ত্রী নবনীতা জানিয়েছেন, ‘‘গত জুলাই বা আগস্টে ঠিক হয়েছে জিতু সত্যজিতের চরিত্রে অভিনয় করবেন। দু’জনের চেহারায় কী করে মিল আনা যায়, সেই আলোচনাও চলছে। সত্যজিৎতের সাক্ষাৎকার দেখে জিতুর মনে হয়েছে তার সঙ্গে দাঁতের পাটিতে একটুও মিল নেই! সত্যজিতের দাঁতে অনেকটাই ফাঁক। জিতুর দাঁতের পাটিতে তুলনামুলক বেশ কম ফাঁক। একই সঙ্গে একটু উঁচু নিচু।’’ এ কথা জিতুকেও বলেন কয়েক জন।
অভিনেতা কাউকে কোনও উত্তর দেননি। পরিবারেও কিচ্ছু জানাননি। চুপচাপ চলে গিয়েছিলেন দাঁতের চিকিৎসকের কাছে।
সেখান থেকে ভিডিও তুলে পাঠিয়েছেন নবনীতাকে। অভিনেত্রী সেই ভিডিও দেখতে দেখতে শিউরে উঠেছেন। দাঁতের পাটিতে বদল আনতে জিতুকে মাড়ি ও ঠোঁটে ইনজেকশন নিতে হয়েছে কয়েকটি। তার পর ড্রিল মেশিন দিয়ে ঘষে ঘষে ফাঁক করা হয়েছে দাঁত। ড্রিলের ঘর্ষণে মাড়ি কেটে রক্ত পড়েছে গলগলিয়ে। কয়েক বার উঠে গিয়ে পাশের বেসিনে মুখে জমে থাকা রক্ত ফেলেছেন। সব দেখে ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা অভিনেতার স্বজনদের।এ ভাবে বেশ কয়েক বার গিয়ে অবশেষে দাঁতের পাটির দিক থেকেও অবিকল সত্যজিৎ হয়ে উঠেছেন এই প্রজন্মের অভিনেতা।
নবনীতার জানান, ‘‘জিতু তখন আকাশ আট চ্যানেলে ‘হয়তো তোমারই জন্য’ ধারাবাহিকে অভিনয় করছে। দাঁতে অস্ত্রোপচারের কারণে গালের এক পাশ ফোলা। কথাও বলতে পারছে না। বেশ কিছু দিন শ্যুটে যেতে পারেনি। ছবির রিহার্সালেও অংশ নিতে পারেনি।’’ কয়েকদিন বরফ সেঁক দিতে দিতে ধীরে ধীরে ফোলা, ব্যথা সব কমেছে। ড্রিলিং মেশিনের আওয়াজ, দাঁতের গুঁড়োর গন্ধ অনেক দিন জিতুকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিলো।
দাঁতের পাটির পরিবর্তনের পর আর শক্ত খাবার খেতে পারেন না জিতু। পাঁঠার মাংসের হাড় চিবোনোর সুখ আর নিতে পারবেন না কখনো। মুরগির মাংসও নরম করে খেতে হয়। দাঁতের ফাঁকে আঁশ আটকে যাওয়ার ভয়ে লেবু রস করে খেতে হয়। ডাঁসা পেয়ারায় কামড় বসানো এ জীবনে আর হবে না। ড্রিল মেশিনের দাপটে মাড়ি কমজোরি। এ দিকে নীচ থেকে ক্যাপ বসানো হয়েছে দাঁতে। শক্ত খাবার খেলে সেই ক্যাপে মাড়ি কেটে রক্তপাত অবশ্যম্ভাবী।
বদল শুধু দাঁতে নয় সত্যজিৎ হয়ে উঠতে বাহ্যিক আরো অনেক বদল এনেছে জিতু। রূপসজ্জা শিল্পী সোমনাথ কুণ্ডুকে দিয়ে প্রস্থেটিক রূপটান করিয়ে গালে ব্রণের দাগ এনেছেন। গায়ের রঙ বদলে শ্যামলা করেছেন। চিবুকে এখন বড় আঁচিল। এ সবের পাশাপাশি অন্তরেও ধীরে ধীরে সত্যজিৎ রায় হয়ে উঠতে হয়েছে জিতু কমলকে। মোকটকথা অবিকল সত্যজিৎ হয়ে উঠতে চেষ্টার কোন ত্রুটি ছিল না জিতুর।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন
মন্তব্য করুন: