চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেডে হাতিশাবকের জন্ম

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পাহাড় ও টিলা বেষ্টিত প্রাকৃতিক বনভূমিতে বিচরণ ছিলো নানান প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের। সময়ের পরিক্রমায় মানুষের লালসা ও অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্তের বলি হতে হয়েছে সেখানকার প্রানবৈচিত্র্যের। বাসস্থান হারা, খাদ্য সংকটে ক্লিষ্ট প্রানীরা নিরবে ভিটেমাটি হারিয়ে বিলীন হয়েছে মানুষের কাছে হার মেনে।
এমনই প্রাকৃতিক পরিমন্ডলের ২৪৯২ একর প্রাকৃতিক বনভূমিতে গড়ে তোলা হয়েছে কোরিয়ান ইপিজেড। দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে বৈচিত্র্যময় প্রানীর আবাসে পাহাড়, টিলা, জলাশয়, বন ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সমন্বয়ে রচিত হাতির করিডোরে এখন হাতিরা অচ্ছুৎ। কর্তৃপক্ষ চান অবিলম্বে তাদের অপসারণ। হাতির উপস্থিতি আর সহ্য করা হবে না এই এলাকায়।
আজ কোরিয়ার ইপিজেডে বিচরণরত বন্যহাতি উচ্ছেদে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের জোরালো দাবি অলঙ্ঘনীয় ও অকাট্য। তাঁদের দাবি হাতিকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে কোথাও আটকে রাখতে। নিরাপদ করতে হাতির করিডোরে স্থাপিত শিল্পনগরী। প্রকৃতির চেয়ে প্রচুর্যের কাছে থমকে দাঁড়ায় আমাদের বিবেক ও বিবেচনা বোধ।
অস্ফুটে প্রশ্ন করি, কোথায় যাবে ওঁরা, এই নিরীহ প্রকৃতির সন্তানদের পায়ের নিচে কি একটুও মাটি আমরা ছাড় দিতে পারবোনা?
স্রষ্টার অসীম মহিমা বুঝা বড় দায়। কোরিয়ান ইপিজেডের বনে বিচরণরত হাতিদের কোল আলোকিত করে এসেছে এক ফুটফুটে পূর্ণশশী। নিদারুণ নিগ্রহের মাঝেও ওরা ধারণ করেছে ক্লান্তিকর ও ঝুকিপূর্ণ দীর্ঘ ২২ মাসের গর্ভকাল। কর্তৃপক্ষের বিতাড়ন, রক্তচক্ষু ও নিগ্রহের বিপরীতে ওরা আজ বিশ্ব প্রকৃতিকে উপহার দিয়েছে কলিজা নিংড়ানো অমূল্য সর্বস্রেষ্ট উপহার, নান্দনিক নৈবেদ্য।
বন্যহাতিদের কোল জুড়ে আলোর মশাল প্রজ্জ্বলিত হলেও আমার হৃদয়টি প্রকম্পিত, শংকিত ও ভীতি বিহ্বল হচ্ছে বারবার। সদ্যজাত বাচ্চাটির ভবিষ্যৎ ও তার নিরাপত্তার চিন্তায় শিহরিত হচ্ছি, আতঙ্কিত হচ্ছি তার অমুলক অনিষ্ট আশংকায়।
দেশবাসীর কাছে ওর জন্য দোয়া কামনা করে মহান আল্লাহর দরবারে হাতিকূলের নিরাপত্তার দায়িত্ব সঁপে দিলাম কায়মনোবাক্যে।
বিভি/কেএস/এএন
মন্তব্য করুন: