শাহাদত চৌধুরী একজন`ই

শাহাদত চৌধুরী
কাল জগলুলের (ঢের আগে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জগলুল আলম) সঙ্গে কথা হচ্ছিল শাহাদত ভাইকে নিয়ে। তাঁর নেতৃত্বের কথা, তাঁর সাহসের কথা, আমাদের ব্যক্তিগত বন্ধনে আটকে রাখার কথা বলছিলাম আমরা। জগলুলকে একদিনের ঘটনা বলছিলাম। সম্ভবত বিচিত্রার এক ঈদ সংখ্যায় প্রকাশের ঘটনা। একটি গল্পের একটি বাক্য নিয়ে কেউ একজন আভিযোগ জানিয়েছে। ফজরের আজান শুনতে কেমন লাগে সে কথা লেখক লিখেছেন। তা নাকি অভিযোগকারীর অনুভূতিতে আঘাত করেছে। তখন একজন বিখ্যাত শিক্ষক নেতা সরকারের কাছে বিচিত্রা বন্ধ করে দেওয়ার দাবী জানিয়েছেন। যথারীতি সম্পাদক শাহাদত ভাইকে তলব করেছেন হুদা ভাই (তথ্যমন্ত্রী শামসুল হুদা চৌধুরী)।
সরকার বিচিত্রা নিয়ে খুব স্বস্তিতে ছিল না। মাটির ডাক কর্মসূচীর অসারতা, পাঁচ দফা আন্দোলনের পক্ষে প্রতিবেদন, বিরোধী দলীয় নেত্রীদের নিয়ে প্রচ্ছদ কাহিনী ইত্যাদি বিচিত্রার আমলনামা খারাপ করে দিয়েছিল। অন্যদিকে কিছু ভুঁইফোড় পত্রিকা বিচিত্রার বিরুদ্ধে লেগেছিল।
যাহোক, মন্ত্রীর সামনে হাজিরার দিন সকালে শাহদত ভাই আমাকে ডেকে বললেন, 'চলো, মন্ত্রী দেখে আসি।' বেলা দশটা, কিছুটা বৃষ্টি হচ্ছিল। আমরা যেয়ে তাঁর পিএসকে জানাতে আমাদের দেরি করতে হলো না। হুদা ভাইয়ের টেবিলে তাঁর মুখোমুখি বসলেন শাহাদত ভাই। আমি তাঁর পাশে। আমরা যেতেই হুদা ভাই তথ্য সচিবকে (সম্ভবত মোকাম্মেল হক) ফোনে ডেকে নিলেন। তিনি এসে বসলেন আমার ডানে, টেবিলের পাশের দিকটায়। হুদা ভাই বিচিত্রার বিরুদ্ধে অভিযোগের বয়ান করে জানতে চাইলেন কাজটা কে করেছে, মানে কার হাত দিয়ে তা প্রেসে গেছে। শাহাদত ভাই সেটা কিছুতেই বলবেন না। এক পর্যায়ে, হুদা ভাই বলে বসলেন, 'আমাদের কাগজে কে কী করছে আমরা কেন তা জানতে পারবো না?' শাহাদত ভাই ততক্ষনে ক্ষেপে গিয়েছেন। হুদা ভাইয়ের মুখের উপর বলে দিলেন, 'আপনাদের কাগজ মানে?'
- বিচিত্রা সরকারী কাগজ। আরা আমরা সরকারে আছি।
-সরকারী কাগজ মানে, জনগণের কাগজ। আর আপনারা চিরস্থায়ী সরকার না। কাগজটা আমরা চালাই। এটা আমাদের কাগজ।
হুদাভাই তখন পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য বললেন, 'বস্ , চা খা। এই এখানে চা দাও।' শাহাদত ভাই ততক্ষণে উঠে দাঁড়িয়েছেন। বললেন, 'না, আপনার চা খাবো না।'
মন্তব্য করুন: