শারীরিক মিলনেও ছড়াতে পারে মাঙ্কিপক্স!

করোনা মহামারী এখনো দাপট কমায়নি। এরই মধ্যে বিশ্ববাসীর চিন্তা বাড়াচ্ছে মাঙ্কিপক্স ভাইরাস। এটি এমন একটি রোগ যা সাধারণত আফ্রিকার বাইরে খুব কমই দেখা যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে ১৫টিরও বেশি দেশে শতাধিক মানুষ শনাক্তের খবর নিশ্চিত হওয়ায় উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। রোগটি এমন মানুষদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে যারা আফ্রিকায় কখনই যাননি।
মাঙ্কিপক্স কী? মাঙ্কিপক্স একটি ভাইরাস যা ইঁদুর এবং বানর গোত্রীয় বন্য প্রাণীর মধ্যে দেখা যায় এবং মাঝে মাঝে মানুষের দেহেও এর সংক্রমণ ঘটে। বেশিরভাগই মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকার মানুষের ক্ষেত্রে এই রোগটি দেখা গিয়েছে। ১৯৫৮ সালে গবেষণার জন্য রাখা বানরদের মধ্যে গুটিবসন্তের মতো রোগের দু’টি প্রাদুর্ভাব ঘটলে বিজ্ঞানীরা এই রোগটি প্রথম শনাক্ত করেন। এই কারণেই ভাইরসাটির নাম মাঙ্কিপক্স। প্রথম মানব সংক্রমণ ঘটে ১৯৭০ সালে কঙ্গোর প্রত্যন্ত অংশে ৯ বছর বয়সী এক শিশুর দেহে।
মাঙ্কিপক্স গুটিবসন্তের মতো একই ভাইরাস পরিবারের অন্তর্গত। বেশিরভাগ রোগীই জ্বর, শরীরে ব্যথা, ঠাণ্ডা এবং ক্লান্তি অনুভব করেন। আরও গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের মুখে এবং হাতে ফুসকুড়ি এবং ক্ষত হতে পারে যা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। প্রায় পাঁচ দিন থেকে তিন সপ্তাহ ভোগায় এই রোগ। বেশিরভাগ মানুষেরই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয় না।
মাঙ্কিপক্স ১০ জনের মধ্যে একজনের জন্য মারাত্মক হতে পারে এবং শিশুদের মধ্যে এটি আরও গুরুতর হয়ে দেখা দিতে পারে। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের গুটিবসন্তের টিকাই দেওয়া হয় যা মাঙ্কিপক্সের বিরুদ্ধেও কার্যকরী বলে দেখা গিয়েছে।
এই মাঙ্কিপক্স ভাইরাস একটু আলাদা কেন? আফ্রিকায় ভ্রমণ করেনি এমন মানুষদের মধ্যে এই প্রথম মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন আক্রান্ত পুরুষ জড়িত যারা পুরুষদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করেছে। ইউরোপে, ব্রিটেন, ইতালি, পর্তুগাল, স্পেন এবং সুইডেনে সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
মাঙ্কিপক্স কি যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে? বিষয়টি সম্ভব, কিন্তু এই মুহূর্তে তা অস্পষ্ট। মাঙ্কিপক্স আগে যৌনতার মাধ্যমে ছড়ায়নি। তবে সংক্রামিত ব্যক্তিদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণে শরীরের তরল এবং পোশাক বা বিছানার চাদরের মাধ্যমে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ হতে পারে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ভাইরোলজিস্ট মাইকেল স্কিনার জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের পুরুষরা কীভাবে সংক্রামিত হয়েছে তা নির্ধারণ করা এতই তাড়াতাড়ি সম্ভব না। “যৌন ক্রিয়াকলাপে অন্তরঙ্গ যোগাযোগ প্রয়োজন হয়। সুতরাং ব্যক্তি যে ধরনের যৌন অভ্যাসেই অভ্যস্ত হন না কেন সংক্রমণের সম্ভাবনা বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকেই,” বলেন স্কিনার। খবর : নিউজ এইটিন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: