শুরু হলো #জিরো ডিজিটাল ডিভাইড গ্লোবাল কর্মসূচি

সবার জন্য মানসম্মত ই- সেবা প্রাপ্তির সমতা প্রতিষ্ঠায় ডিজিটাল বৈষম্য শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে শুরু হলো হ্যাসট্যাগ জিরো ডিজিটাল ডিভাইড আন্দোলন। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সম্মেলন কেন্দ্রে দেশের ৬৪ জেলা থেকে অংশীজনদের অনলাইন অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করলো এটুআই।
উদ্যোগের অধীনে ডিজিটাল ডিভাইস এবং ইন্টারনেট সবার মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য একটি ডোনেশন হাব তৈরি করার কথা উঠে আসে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। সাউথ-সাউথ ও ট্রায়াঙ্গুলার কো-অপারেশনের মাধ্যমে ডিজিটাল সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বময় এই কার্যক্রমে সহযোগী হয়েছে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপি।
এটুআই নীতি উপদেষ্টা আনীর চৌধুরীর সঞ্চালনায় ‘#জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’ নিয়ে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআই হেড অব কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশন পুরবী মতিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এটুআই প্রকল্প পরিচালক মামুনুর রশিদ ভূইয়া।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার ও তাতে অংশগ্রহণে সমতা নিশ্চিত করতে ই-কোয়ালিটি সেন্টার চালু করছে বাংলাদেশ। সেই সেন্টার প্রতিষ্ঠাকে ঘিরে ডিজিটাল বৈষম্য শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই বৈশ্বিক ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে বিশ্বের পিছিয়ে পড়া দেশগুলোতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এই ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে মূল আলোচনায় অংশ নেন জাতিসংঘের অ্যাসিটেন্ট জেনারেল সেক্রেটারি কান্নি উইগনারাজা, বিআইএসএস চেয়ারম্যান এএফএম গাউছুল আজম সরকার, উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম উই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও কমনওয়েলথ ডিজঅ্যাবলড পিপলস ফোরামের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মহুয়া পাল।
সভাপতির বক্তব্যে পলক বলেন, ডিজিটাল বৈষম্য ঘুচতে সবার আগে আমি ডিভাইস ডোনেসন কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করবো। প্রত্যেকের হাতে ডিজিটাল ডিভাইস আর ইন্টারনেট থাকলে সবার জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ব্যান্ডউইথের দাম কমিয়ে এবং টেলিকম ব্যবসায়ের প্রতিযোগিতা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশে এখন ১৩ মিলিয়ন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে। ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবয়নে সব নাগরিকদের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে আমরা ‘ট্রিপল এ’ কৌশল হাতে নিয়েছি। এটি হচ্ছে অ্যাভেইলেবল টু অল, অ্যাফোর্ডেবল টু অল এবং অ্যাওয়ারনেস। এজন্য আমি সবার প্রতি ইন্টারনেট-কে ব্যক্তি পর্যায়ে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানাই। কেননা ইন্টারনেট ছাড়া আমরা দক্ষতা উন্নয়ন, ব্যবসা পরিচালনা কিংবা শেখা সম্ভব নয়। ইন্টারনেট শিক্ষা, ব্যবসা, বিচার, স্বাস্থ্য, সাংবাদিকতা কোনো কিছুতেই এক্সট্রা ভ্যালু যোগ করা সম্ভব নয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতিসংঘের অ্যাসিটেন্ট জেনারেল সেক্রেটারি কান্নি উইগনারাজা বলেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় অন্ধকার দিক হলো বিভাজন। এই শূন্যতা ঘুচতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। যদি আমরা এই অন্ধকার দিকটা শনাক্ত করতে পারি তাহলে কোনো ভাবে বিশ্বের ৩ বিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেটের শক্তির বাইরে থাকতে পারে না। এখনো ১.৩ বিলিয়ন স্কুল গামী শিশু নতুন এই শিক্ষা মাধ্যম থেকে দূরে রয়েছে। তবে ২০২০ সালে পর আবার আমি বাংলাদেশে এসে আশার আলো দেখতে পেয়েছি। ডিজিটাল বিভাজন ঘুচতে বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি হিসেবে স্টেফান লিলার, অতিরিক্ত সচিব নাভিদ শফিউল্লাহ, শিশু নোবেল জয়ী সাদাত রহমান, মনের বন্ধু প্রতিষ্ঠাতা তাওহিদা শিরোপা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/ এসআই
মন্তব্য করুন: