• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

সংবাদমাধ্যমের ক্লিকবেইট শিরোনাম যেভাবে বিভ্রান্তি ছড়ায় সোশ্যাল

প্রকাশিত: ১৫:২০, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

ফন্ট সাইজ
সংবাদমাধ্যমের ক্লিকবেইট শিরোনাম যেভাবে বিভ্রান্তি ছড়ায় সোশ্যাল

সম্প্রতি মেট্রোরেলের দরজায় শাড়ি আটকে নারীর করুণ মৃত্যু শিরোনামের একটি খবর ফটোকার্ডের মাধ্যমে ছড়াতে দেখা গেছে ফেসবুকে। একাধিক গণমাধ্যমও খবরটি প্রকাশ করেছে। তবে খবরের শিরোনামে স্থানের নাম উল্লেখ না থাকায় সেটি পাঠকদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।

নারী মৃত্যুর এই ঘটনাটি আসলে ভারতে ঘটলেও, শিরোনামে স্থানের উল্লেখ না থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই খবরটি শেয়ার করেছেন বাংলাদেশের ভেবে। খবরটির শিরোনামে যে স্থানের উল্লেখ থাকা উচিৎ ছিল– এমন মন্তব্যও করেছেন অনেকে।  

গত ১৪ ডিসেম্বর ভারতের রাজধানী দিল্লির ইন্দরলোক স্টেশনে ঘটেছিল দুর্ঘটনাটি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় মেট্রোরেলের দরজায় শাড়ি আটকে যাওয়া সেই নারীর। সেই সূত্র ধরেই সংবাদ প্রকাশ করে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যম (১, ২, ৩)। কিন্তু সংবাদের শিরোনামে তারা উল্লেখ করেনি যে ঘটনাটি ভারতের।

পরবর্তীতে দ্য বাংলাদেশ মোমেন্টস নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে এ সংক্রান্ত একটি ফটোকার্ড প্রচার করা হয়। একাধিক পেজ (১, ২), গ্রুপ (১, ২) ও ব্যক্তিগত প্রোফাইলে (১, ২, ৩) দ্য বাংলাদেশ মোমেন্টস-এর ফটোকার্ডটি শেয়ার হতে দেখা যায়। সেখানেও ভারতের নাম উল্লেখ না থাকায় বিস্তারিত প্রতিবেদন না পড়েই অনেকে ফটোকার্ডটি শেয়ার করেছেন বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে। আবার অনেকে সেই পোস্টে খবরটি বাংলাদেশের বলে বিভিন্ন মন্তব্যও করেন। 

“বাংলাদেশের এই অবস্থায় হবে” লিখে মন্তব্য করেন এক ব্যবহারকারী। আরেকজন লিখেছেন “বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে, কিন্তু জনগণের ক্ষতি হবে না। তা কি কখনো হয়?”। “ওইটা ও বিএনপি করছে বাংলাদেশের পুলিশ বলবে” লিখে কমেন্ট করেছেন আরেক ব্যবহারকারী। পরবর্তীতে এটি নিয়ে যাচাই প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

সংবাদের শিরোনাম সংক্রান্ত বিভ্রান্তির এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। চলতি মাসেই ভারতের কর্ণাটকের একটি ঘটনার ক্ষেত্রে এমনটি দেখা গেছে। আর্থিক সংকটের কারণে একটি পরিবারের সদস্যদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে সেখানে। পরবর্তীতে এ নিয়ে বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে (১, ২) প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ও ফেসবুকে প্রচারিত ফটোকার্ডে ঘটনাটির স্থানের নাম উল্লেখ না করে সংবাদটি প্রচার করা হয়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা (১, ২, ৩) বিষয়টি বাংলাদেশের ঘটনা মনে করে ফেসবুকে প্রচার করতে থাকেন। এই বিভ্রান্তি নিরসনে সে সময়ও একটি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার।

ডিসেম্বরের আরেকটি সংবাদেও দেখা যায় এমন বিভ্রান্তি। সেটিও প্রকৃতপক্ষে ভারতের ঘটনা। তবে এক্ষেত্রেও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনামে স্থানের উল্লেখ না থাকায় ব্যবহারকারীরা ঘটনাটিকে বাংলাদেশের মনে করে বিভ্রান্ত হন। মূলত, ভারতের ঝাড়খন্ডের কংগ্রেস রাজ্যসভার এমপি ধীরাজ প্রসাদ সাহু’র বাড়ি থেকে ৪৬৬ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে মূলধারার গণমাধ্যম কালবেলা। যার শিরোনাম ছিল, “এমপির বাড়ি থেকে উদ্ধার ৪৬৬ কোটি টাকা!” পরে উক্ত ঘটনা নিয়ে নিজেদের ফেসবুকে পেজে ফটোকার্ডও শেয়ার করে তারা। সেখানেও বলা হয়নি যে ঘটনাটি ভারতের। ফলে পুরো প্রতিবেদন না পড়ে একাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী (১, ২, ৩) ঘটনাটি বাংলাদেশের বলে শেয়ার করতে থাকেন। বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্যও দেখা যায় উক্ত ফটোকার্ড পোস্টে।

স্থানের নাম উল্লেখ না থাকায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আরেকটি খবর বাংলাদেশের বলে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল গত মার্চে। সে সময় ঝাড়খণ্ডে মুরগির এইচ৫এন১ ভাইরাস বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ছড়ানোয় সতর্কতা জারি করেছিল দেশটির স্থানীয় সরকার। কিন্তু এ নিয়ে বাংলাদেশে প্রচারিত সংবাদ প্রতিবেদনগুলোর শিরোনামে (১, ২, ৩) ভারতের নাম উল্লেখ ছিল না। এক্ষেত্রেও এটিকে বাংলাদেশের ঘটনা ধরে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট (১, ২, ৩) দিয়েছিলেন অনেকে। সে সময় ঘটনাটি ভাইরাল হয় ফেসবুকে।

শুধু ভারতের নয়, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রতিবেদন নিয়েও দেখা গেছে এমন বিভ্রান্তি ছড়ানোর চিত্র। কোনো শিক্ষিকা বাচ্চা নিলে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিতে হবে- এমন একটি বিভ্রান্তিকর শিরোনামে গত মার্চে খবর প্রকাশিত করে দৈনিক যুগান্তর। খবরটি ছিল মূলত বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার একটি স্কুলের যৌন হয়রানি সংক্রান্ত বিষয়কে ঘিরে। কিন্তু শিরোনামে ঘটনাস্থলের নাম উল্লেখ না করার কারণে পাঠকের মনে শঙ্কা তৈরি হয় যে বাংলাদেশের সব স্কুলের শিক্ষিকাকেই হয়তো বাচ্চা নেয়ার আগে তাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিতে হবে। সে সময়ে সরকারি নির্দেশনা ভেবে অনেকেই খবরটি শেয়ার করছেন ফেসবুকে। পুরো প্রতিবেদন পড়তে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে। 

সুত্র: ডিসমিসল্যাব 

বিভি/ এসআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2