সাইবার হামলার শিকার বিচার বিভাগ, র্যানসমওয়্যার দাবি ফ্রান্সে

আর্ন্তজাতিক একাধিক গণমাধ্যম বলছে, সাইবার হামলার শিকার হয়েছে ফ্রান্সের বিচার বিভাগ। তবে, হামলা সম্পর্কে এখনোও বিস্তারিত কোন তথ্য মেলেনি। সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় হলো, হামলার দিন গুগলের উপর আরোপিত ১১ কোটি ডলার জরিমানা বহাল রাখার দেয় ফ্রান্সের সুপ্রিম কোর্ট।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিচার মন্ত্রণালয়ের ওপর সাইবার হামলার এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) হামলার দিন ফ্রান্সের নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে গুগলকে ১১ কোটি ডলারের জরিমানা করেছে ফ্রান্সের ডেটা নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ সিএনআইএল। তবে, ঘটনা দুটি একই সুত্রে গাঁথা কি না, এখনো পরিষ্কার নয়।
পলিটিকো’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘লকবিট ২.০’ র্যানসমওয়্যার গ্যাং-এর দাবি ফ্রান্সের বিচার মন্ত্রণালয় তাদের ভিকটিম তালিকায় রয়েছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের দাবিকৃত অর্থ পরিশোধ না করলে তাদের কাছে তথ্য ডার্ক ওয়েবে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে গ্যাংটি।
এই বিষয়ে সরকারের একজন মুখপাত্র তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন, ফ্রান্স সরকার বিষয়টি নিয়ে সতর্ক এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সমাধানের জন্য কাজ করছে।
সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম ট্রেন্ড মাইক্রো’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছুদিন থেকেই গ্রুপটি বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে কাজ করছে।
তবে, এ বিষয়ে ফ্রান্সের সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি (এএনএসএসআই) এই ঘটনার তাৎক্ষনিক কোন উত্তর দেননি।
ইউরোপভিত্তিক সাইবার নিউজ পত্রিকা ‘ইউরাকটিভ.কম’ তাদের প্রতিবেদনে বলছে, গ্রুপটি মোট ৯,৮৫৯ টি ফাইল প্রস্তুত রেখেছে। যদি, তাদের চাহিদা মতো র্যানসমওয়্যার না দেওয়া হয়, তাহলে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির পর সেগুলো প্রকাশ করা হবে। হ্যাকার গ্রুপটি এ বিষয়ে একটি কাউন্টডাউন তাদের ব্লগে দিয়ে রেখেছে।
ফ্রান্সের প্রভাবশালি গণমাধ্যম ‘পাবলিক অ্যাক্টরস’ এর সাংবাদিক এমিলি মারজোফ ফ্রান্সের বিচার মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে টুইটারে লেখেন, হ্যাকার গ্রুপ লকবিট ২.০ র্যানসমওয়্যারের দাবিটি সত্য।
ইউরাক্টিভ ফ্রান্স নিশ্চিত করেছে যে, মন্ত্রণালয়ের পরিষেবাগুলি একটি অনুপ্রবেশের প্রযুক্তিগত চিহ্ন শনাক্ত করেছে। তবুও, হামলার পরিমাণ, নথি চুরির প্রকৃতি এবং মুক্তিপণের পরিমাণ আপাতত অজানা।
লকবিট ২.০ প্যারিসের উপকণ্ঠে সেন্ট-ক্লাউডের টাউন হলের পরিষেবাগুলিতে অনুরূপ আক্রমণের জন্যও দায় স্বীকার করেছে। ফরাসি দৈনিক ‘লে প্যারিসিয়েন’ জানিয়েছে, শহরের মেয়র ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন যে তিনি মুক্তিপণ দেবেন না।
হামলাগুলো ফরাসি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে হ্যাকারদের দ্বারা পরিচালিত পিআর স্ট্যান্ট বা সত্যিকারের সংবেদনশীল তথ্যের ভিত্তিতে হুমকি হতে পারে কি না তা বিচার করা এখনও কঠিন বলে মনে করছে ইউরোকটিভ।
হ্যাকার গ্রুপটি থ্যালেস গ্রুপের অংশ থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস মুক্তিপণ না দেওয়ায় ১৭ জানুয়ারিতে প্রায় ১৩২০টি অভ্যন্তরীণ নথি প্রকাশ করে।
ফ্রান্সের সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি (এএনএসএসআই) এর ২০২০ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯ সালের তুলনায় এই ধরনের সাইবার হুমকির সংখ্যা চারগুণ বেড়েছে।
ফরাসি কর্তৃপক্ষ বলছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, হাসপাতাল এবং শিল্পপতিরা এই আক্রমণের প্রাথমিক শিকার হয়েছে।
বিভি/এসআই/এসডি
মন্তব্য করুন: