প্রযুক্তির পরিবর্তন দ্রুত হলেও, আইন ততটা দ্রুত আসছে না: সুমন আহমেদ সাবির

আমাদের প্রযুক্তি যত দ্রুততার সাতে পরিবর্তিত হচ্ছে, সেই সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের আমাদের আইনের কার্যক্রম ততটা পরিবর্তিত হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ফাইবার অ্যাট হোমের চিফ টেকনোলজি অফিসার (সিটিও) সুমন আহমেদ সাবির।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের তিন দিন ব্যাপী সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন শুক্রবারের শেষ অধিবেশন গভর্নিং ডাটা অ্যান্ড প্রোটেকশন প্রাইভেসি : প্রোগ্রেস, চ্যালেঞ্জেস, অপারচুনিটি অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড সেমিনারে এই মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই ডেটা গর্ভনেন্স, ডেটা সলভেনসি, ডেটা ইন্টিগ্রিটি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কিভাবে ডেটা ম্যানেজমেন্ট করা যায় সেদিকে নজর দিতে হবে।
বেসিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সামিরা জুবেরি হিমিকা বলেন, আমাদের এখনো কোন ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট নেই ফলে বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি নিজেদের গাইডলাইন অনুযায়ী আমাদের দেশে ব্যবসা পরিচালনা করছে। এর ফলে আমাদের ডেটার কোন নিয়ন্ত্রণ থাকছে না, যথেচ্ছা ব্যবহার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের যদি ডেটা প্রটেকশন আইন থাকতো, তাহলে অবশ্যই বিদেশি এসব কোম্পানির সাথে আলাপ-আলোচনা করে একটা গ্রহণযোগ্য পন্থায় তারা এই দেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারতো। এক্ষেত্রে অবশ্যই সকল স্টক হোল্ডারদের সাথে কোলারেশনের প্রয়োজনীয়তা দেখেন তিনি।
এদিকে কুমিল্লা’র মতো নানা দুর্ঘটনার জন্ম দিয়ে ফেসবুক আর ফেক নিউজ সমান্তরাল অবস্থানে রয়েছে। তাই ডাটা সুরক্ষার পাশাপাশি ফেসবুক ব্যবহারে সতর্ক হওয়া দরকার। কারিগরি প্রকৌশল বা আইন দিয়ে এসব রোধ করা যাবে না। এ জন্য বিবেককে কাজে লাগানোর কথা বলেন বক্তারা।
ফেসবুকের খবর বিশ্বাস না করে নেট বার্তাকে যাচাই করার আহ্বান জানিয়ে সেমিনারের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেছেন,উন্নত দেশগুলো ফ্রিডম অব স্পিচ নিয়ে সোচ্চার থাকলেও তাদের ইন্টারনেট প্রশাসনের প্রয়োজন হয় না। তারা বিবেক দিয়েই ইন্টারনেটের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। কিন্তু আমাদের দেশে ফেসবুকের কোন তথ্য না যাচাই করেই আমরা তা বিশ্বাস করি। অথচ ফেসবুকের তথ্য নিউজ নয়। তাই ইন্টারনেটে যেসব তথ্য আছে তা যাচাই ছাড়া বিশ্বাস করা উচিত নয়। ডাটা সুরক্ষায় আইনের চেয়ে সচেতনতাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের ১২ কোটি মোবাইল ফোন এবং দেড় কোটি পিসি ইন্টারনেটে সংযুক্ত। তাই ল্যাপটপ ও পিসি’র চেয়ে ম্যালওয়্যারের ঝুঁকি বেশি মোবাইলে। একারণে মোবাইল ব্যবহারে আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজিবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার নাজমুস সালেহীন। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটি’র অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ সাইফুল আলম খান ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ সালেহ আক্রাম।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে ফেসবুক ব্যবহার সতর্ক করে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন বলেন, ধোঁকা দিয়ে এখন ফেসবুকে সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং চলছে। তাই ফেসবুক ব্যবহারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা উচিত।
বিভি/এসআই
মন্তব্য করুন: