শুরু হলো স্মার্টভার্স; বেসিসের ৩/৩ ফর্মূলা

শুরু হলো তিন দিন ব্যাপী বেসিস সফট এক্সপো। বৃহসপতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে এক্সপোর উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। এসময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, দেশে-বিদেশে ক্রমবর্ধমান সফটওয়্যার এর চাহিদা মেটাতে বেসিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন দেশের জন্য কল্যাণকর বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রী সেটা অবশ্যই বিবেচনা করবেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বেসিসে ৩ লাখ মেধাবী ওয়ার্কফোর্স এর অনেকেই ২০০৯ সালে স্কুল-কলেজে পড়তো। সজীব ওয়াজেদ জয় ভাই আইসিটি নীতিমালা প্রণয়ন করে দেয়ায় ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমি-সরকারের মধ্যে মিতালী হয়েছে। আইসিটি এখন অন্যতম শিল্প খাত হয়ে উঠেছে। ২০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। আইটি রফতানিতে ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সেতুবন্ধনে আইসিটি বিভাগের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন পলক আরো বলেন, এক লাখ ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েটদের প্রশিক্ষণ ও মেন্টরশিপের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। প্রবলেম সলভার তৈরিতে প্রাথমিক থেকেই কোডিং শেখানো হচ্ছে।
বেসিস সদস্যদের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিদেশের প্রয়োজন মেটাতে এআই নিয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে বেসিস সফলতার সাথে বাংলাদেশের আইসিটি শিল্পকে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং আইসিটি শিল্পের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশে ১ লক্ষ তরুণকে প্রশিক্ষণ, ইনকিউবেশন ও মেন্টরিংয়ের মাধ্যমে দক্ষ ওয়ার্কফোর্সে পরিণত করে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে ইন্ডাষ্ট্রিকে উপহার দিতে চাই।
এসময় রোবটিক্স ও সাইবার সিকিউরিটিতে চ্যালেঞ্জ নিতে আইসিটি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশে সফলতা নির্ভর করবে বেসিস এর সফলতার ওপর।
বেসিসের সাবেক সভাপতি এবং ডাক ও টেলিযোগা মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের এখন রফতানি বিক্রেন্দ্রীকরণ করতে হবে। কেননা প্রযুক্তি বা সফটওয়্যার সেবা খাত থেকে শত ভাগ ভ্যালু এডিশন হয়। আর সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতরা দেশের সবচেয়ে মেধাবী সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়েছে।
স্মার্ট বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি জনশক্তি উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, বিজ্ঞান বা কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়ুয়ারাই সব নয়; সাধারণ শিক্ষিতরাই বড় অবদান রাখছে।
বেসিস সদ্যসের সবাই কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ে ব্যবসা শুরু করেনি। আর প্রধানমন্ত্রী যে স্মার্ট জনশক্তির কথা বলেছেন, তার জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন করা দরকার। শিক্ষাদান ও শিক্ষা উপকরণের ডিজিটাল রূপান্তরের ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে রাসেল টি আহমেদ বলেন, সঙ্কটের সময়ে ব্যবসায় পূণর্জাগরণে এই সম্মেলন। ক্রাউডসোর্সের মাধ্যমে আমরা এটা বাস্তবায়ন করছি। সমস্যার মাধ্যে সমাধনের পথে হেঁটে যেতে সম্মেলনে আমাদের এই শিল্পের সক্ষমতা তুলে ধরার পাশাপাশি সম্ভাবনাকে খুঁজে বের করা হবে। ব্যবসায়ী ও নতুন প্রজন্মকে এক জায়গায় করতে, চাঙ্গা করতে এই আয়োজন। ১৭ কোটি মানুষ এখন স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হতে চায়।
বক্তব্যে ৩/৩ ফর্মুলা পেশ করে পলিসির সঙ্গে তা বাস্তবায়নের স্বাধীনতা চেয়ে রাসেল টি আহমেদ আরো বলেন, ২০২৫ খুব বেশি দূরে নয়। কাল বাদে পরশু। আমরা বাজার বিশ্লেষণ করে দেখেছি, আইসিটি খাতে বিশ্বে বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে আইসিটি খাতে। সেক্ষেত্রে নৌকা আমাদের ঘাটে অপেক্ষা করছে।
কিন্তু এখনো একাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি এবং ইন্ডাস্ট্রি-সরকার এর মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে অনেক হতাশা রয়েছে। তাই যদি একাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি ও সরকারকে একসাথে কাজ করতে হবে। তাহলে এই খাত থেকে ২০৩১ সালের মধ্যে ২০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করা সম্ভব।
বাংলাদেশ কম্পিউাটার সমিতির সভাপতি সুব্রত সরকার, আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক, ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/ এসআই
মন্তব্য করুন: