• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বিমানে কেন স্মার্টফোন “ফ্লাইট মোডে” রাখা হয়?

প্রকাশিত: ১৬:১৭, ১৭ এপ্রিল ২০২৩

ফন্ট সাইজ
বিমানে কেন স্মার্টফোন “ফ্লাইট মোডে” রাখা হয়?

যানের বিমানে চড়ার অভিজ্ঞতা আছে তারা কিছু কমন বাক্যের সাথে পরিচিত। যেমন, 'অনুগ্রহ করে আপনার আসনটি আপরাইট (হেলান দেওয়ার অংশটি খাড়াভাবে রাখা) পজিশনে রাখুন, ট্রে টেবিল ভাঁজ করে রাখুন, জানালার পর্দা উঠিয়ে রাখুন, ল্যাপটপ মাথার ওপর বিনে রাখুন এবং ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ফ্লাইট মোডে রাখুন ইত্যাদি। 

বিমান চলাচলে বাড়তি ঝুঁকি এড়াতে মোবাইল ফোন ফ্লাইট মোডে রাখার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু আমরা কি আসলে জানি, এই ঝুঁকিটা আসলে কতটা যুক্তিসঙ্গত? চলাচল কিংবা ল্যান্ডিংয়ের সময় পাইলটের সাথে গ্রাউন্ড স্টেশনের যোগাযোগ হয় রেডিও সিগনালের মাধ্যমে। তাই এই সেবায় কোন সিগনাল বাধাগ্রস্ত হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে। যদিও ১৯২০ এর দশক থেকেই নিরাপদ বিমান চলাচলের জন্য এই রেডিও যোগাযোগের মান ধারাবাহিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। 

গবেষণা বলছে, ব্যক্তিগত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস থেকে বিমানের চলাচল ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো একই তরঙ্গের সিগন্যাল উৎপন্ন হতে পারে, যা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ঝুঁকি তৈরি করে।  কিন্তু ১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অথোরিটি ও বোয়িংয়ের এক স্বতন্ত্র গবেষণায় দেখা যায়, ফ্লাইটের উড্ডয়ন এবং অবতরণের মুহূর্ত ছাড়া বিমানে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার কোনো বাড়তি ঝুঁকি তৈরি করে না। 

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশন বিভিন্ন অবস্থার জন্য বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডউইথ বরাদ্দ রাখার নির্দেশনা জারি করেছে। যেমন- মোবাইল ফোনের জন্য এবং বিমান চলাচল ও যোগাযোগের জন্য আলাদা আলাদা ফ্রিকোয়েন্সি। ফলে একটির সঙ্গে আরেকটির সংঘাতের সম্ভাবনা থাকে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারগুলোও এই কৌশল গ্রহণ করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৪ সালেই ফ্লাইটে যাত্রীদের মোবাইল 'ফ্লাইট মোডে' রাখার নির্দেশনা প্রত্যাহার করেছে। 

২০২ কোটি যাত্রী: 

নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ আদর্শ নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও কেন এখনো বিমানে যাত্রীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ? অবাক হলেও সত্যি, এর মূল কারণ নেটওয়ার্ক টাওয়ারের সীমাবদ্ধতা। ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক ভূমিতে থাকা অনেকগুলো টাওয়ারের সঙ্গে যুক্ত থাকে। বিমানে ভ্রমণরত যাত্রীরা যদি সবাই ফোন ব্যবহার করতে থাকে, তাহলে টাওয়ারগুলোর ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে। ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ২০২ কোটি যাত্রী বিমানভ্রমণ করেছে, যা ২০১৯ সালের তুলনায় অর্ধেক। তাই গ্রাউন্ড অপারেশন্স থেকে আপত্তি তোলাটা এ ক্ষেত্রে হয়তো যৌক্তিক। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্কের নাটকীয় উন্নতি হয়েছে। উচ্চ সক্ষমতার ফাইভজি প্রযুক্তি নিয়ে অ্যাভিয়েশন শিল্প সংশ্লিষ্ট অনেকে উদ্বেগ জানিয়েছে। বর্তমানে অ্যাভিয়েশন শিল্পে যে ব্যান্ডউইথ স্পেকট্রাম ব্যবহৃত হচ্ছে, তা নির্ধারিত সক্ষমতার প্রায় কাছাকাছি। ফলে বিমানবন্দরের কাছাকাছি নেভিগেশন ব্যবস্থায় এটি প্রতিবন্ধকতার ঝুঁকি তৈরি করে। 

ফাইভজি প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারে ইতোমধ্যে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার বিমানবন্দরগুলোর অপারেটররা। তারা বিমানবন্দরের আশেপাশে ফাইভজি নিষিদ্ধের দাবিও তুলেছেন। অনেক এয়ারলাইন্সই এখন যাত্রীদের অর্থের বিনিময়ে বা ফ্রি ওয়াইফাই সেবা দিচ্ছে। ফলে যাত্রীরা বিমানের ওয়াইফাই দিয়েই মোবাইলে অডিও বা ভিডিও কল করতে পারছেন। 

তবে বিমান ক্রুদের জন্য এটি বাড়তি ঝামেলাও তৈরি করেছে। যাত্রীর কী লাগবে, তা জিজ্ঞেস করতে গিয়ে অনেক কেবিন ক্রুকেই যাত্রীর মোবাইলে কথা বলা শেষ হওয়ার পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ফলে ফ্লাইটের ভেতর নির্ধারিত সেবা সম্পন্ন করতে আগের তুলনায় বেশি সময় লাগছে। 

সারকথা হচ্ছে, বিমানে যাত্রীদের মোবাইল ফোন ফ্লাইট মোডে না থাকাটা এখন অতটা ঝুঁকিপূর্ণ না, এটা সত্যি। তবে বিমানে ওয়াইফাই সেবার ফলে বিমান ক্রুদের কাজ শেষ করতে বাড়তি সময় লাগছে। 
সুত্র: দ্য ডেইলি স্টার 

বিভি/ এসআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2