এসএমএস, কল লগ সবই পড়ছে রিয়েলমি স্মার্টফোন: ভয়ঙ্কর অভিযোগ ব্যবহারকারীর

রিয়েলমি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য যথেষ্ট ভয়ের কারণ রয়েছে। এই কোম্পানির ফোন যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের তথ্য খুব সম্ভবত চুরি হচ্ছে। আর রিয়েলমি নিজেই সেই কাণ্ডটা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রত্যেক স্মার্টফোনেই বেশিরভাগ অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহকের কিছু ডেটা সংগ্রহের একটা প্রক্রিয়া থাকে। সেগুলি ততটাও বিপজ্জনক হয় না।
আর হলেও গুগল তার প্লে স্টোর থেকে অ্যাপগুলিকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু রিয়েলমি ফোনের সেটিংস অপশনে এমনই ডিফল্ট অপশন রয়েছে, যা ব্যবহারকারীর অজান্তেই তাঁদের তথ্য চুরি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক টুইটার ব্যবহারকারী বিষয়টি নিয়ে সরব হওয়ার পর থেকেই রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
রিয়েলমি’র বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ?
ঋষি বাগরি নামের এক টুইটার ব্যবহারকারী রিয়েলমি ফোনে একটি ফিচার লক্ষ্য করেছেন, যার নাম ‘Enhanced Intelligent Services’। তিনি রিয়েলমি স্মার্টফোন ব্যবহারের পরেই লক্ষ্য করেন, সেটিংসের মধ্যেই এই বৈশিষ্ট্যটি একপ্রকারের লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
খন উদ্বেগের বিষয়টি হল, ফিচারটি সত্যিই রয়েছে এবং তা ডিফল্ট হিসেবেই ফোনে দেওয়া হয়েছে। Realme Smartphone থেকে আপনি যদি Settings > Additional Settings > System Services-এ যান, তাহলেই দেখতে পাবেন এই ফিচারটি।
রিয়েলমি একটা স্বতন্ত্র ব্র্যান্ড হিসেবে তাদের পথচলা শুরু করার সময় থেকেই একটা বিষয় জানিয়ে এসেছে, গ্রাহকের কোনও তথ্য যদি তারা সংগ্রহ করে তাহলে সে বিষয়ে আগেভাগেই জানিয়ে সতর্কবার্তা দেওয়া হবে।
রিয়েলমি-র ‘ডিসক্লোজ়ার’ অনুযায়ী, তারা ব্যবহারকারীর লোকেশন এবং সবথেকে ভয়ঙ্কর বিষয়টি হল ইন্টারনেটে কানেক্ট করা এবং ক্যালেন্ডার ইভেন্ট থেকে শুরু করে কল লগ এবং SMS-ও পড়তে পারে। এখন সমস্যার বিষয়টি হল, এই কাজটাই তারা করে আসছে ‘ডিফল্ট’ রূপে।
সত্যিই কি চুপিসাড়ে গ্রাহকের তথ্য সংগ্রহ করে রিয়েলমি?
রিয়েলমি-র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্যবহারকারীরা কীভাবে তাদের ডিভাইস ব্যবহার করে তার উপর ভিত্তি করে ডিভাইসের কার্যকারিতা এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করার জন্য এই ডেটা সংগ্রহ করা হয়। মূলত, চার্জিং অপ্টিমাইজ় করে এবং গ্রাহকের কাছ থেকে সংগৃহীত তথ্য অনুসারে তাঁকে বা তাঁদের ওয়ালপেপারের মতো আরও নানাবিধ পার্সোনালাইজ়ড বৈশিষ্ট্য দিতে পারে।
ঋষি বাগরি কী বলছেন?
টুইটার ব্যবহারকারী ঋষি বাগরির অভিযোগ, “ভারতের ব্যবহারকারীদের অন্ধকারে রেখে দিয়ে তাদের তথ্য শেয়ার করতে বাধ্য করা হয়। একপ্রকার জোর করেই তাঁদের অনুমতি নিয়ে নেওয়া হয়, কারণ ফিচারটি ডিফল্ট।” টুইটারেই বাগরির প্রশ্ন, “এই তথ্যগুলি কি চিনে পাঠানো হয়?” রিয়েলমি এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও উত্তর দেয়নি।
তবে, টুইটার ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন যে, ব্র্যান্ডের মধ্যে রিয়েলমি-ই একমাত্র সংস্থা নয়, যারা গ্রাহকের তথ্য গোপনে চুরি করে। রিয়েলমির পাশাপাশি অপো ফোনেও রয়েছে এই Enhanced Intelligent Services, টুইটারে ওই পোস্টেই অভিযোগ করেছেন ওপ্পো স্মার্টফোন ইউজাররা।
Financial Express-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, রিয়েলমি, অপো, এবং ওয়ানপ্লাস ফোনগুলি যেহেতু একই কোডবেসের, কালার ওএস অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে এই একই কাণ্ড ঘটতে পারে।
তবে ওই রিপোর্টেই উল্লেখ করা হয়েছে, ভিভো, আইকিউওও’র মতো অন্যান্য বিবিকে ইলেকট্রনিক্স মোবাইলগুলিতে এরকম কোনও ফিচার লক্ষ্য করা যায়নি।
কি বলছেন মন্ত্রী?
ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় আইটি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখরের নজরে এসেছে ঋষি বাগরির ওই ভয়ঙ্কর অভিযোগ। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, কেন্দ্র এ বিষয়ে তদন্ত করে দেখবে।
সুত্র: টিভি৯ বাংলা
বিভি/ এসআই
মন্তব্য করুন: