• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

বাংলাদেশের পণ্য রফতানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলো ভারত

প্রকাশিত: ১৮:০৫, ৯ এপ্রিল ২০২৫

ফন্ট সাইজ
বাংলাদেশের পণ্য রফতানির ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলো ভারত

ভারতীয় স্থল শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে বন্দর ও বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে পণ্য রফতানির জন্য বাংলাদেশকে দেওয়া দীর্ঘদিনের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। 

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাংলাদেশের এই সুবিধা বাতিল করেছে। খবর দ্য হিন্দুর। 

এর আগে, ভারতের রফতানিকারকরা—বিশেষ করে পোশাকখাতের—প্রতিবেশী বাংলাদেশকে দেওয়া এই সুবিধা প্রত্যাহারের জন্য নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার (পিটিআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই সুবিধার ফলে ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের মতো দেশে বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য বাণিজ্য প্রবাহ বাধাহীন ছিল। ভারত ২০২০ সালের জুনে বাংলাদেশকে পণ্য রফতানির এই সুবিধা দিয়েছিল।

৮ এপ্রিল জারি করা ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ২৯ জুনের জারি করা সার্কুলার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধিত এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। তবে আগের সার্কুলারের প্রক্রিয়া অনুযায়ী এরইমধ্যে ভারতে প্রবেশ করা বাংলাদেশি কার্গোকে ভারতীয় অঞ্চল ত্যাগ করার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার এমন এক সময়ে ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধা বাতিল করল, যার কয়েক দিন আগে ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের কয়েক ডজন দেশ ও অঞ্চলের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রার শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

আগের বিজ্ঞপ্তিতে ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে যাওয়ার পথে দেশটির স্থল শুল্ক স্টেশন (এলসিএসএস) ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় দেশে রফতানি কার্গো ট্রান্সশিপমেন্টের অনুমতি দেওয়া হতো। ভারতীয় বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের সরকারের এই সিদ্ধান্ত পোশাক, পাদুকা, রত্ন ও গহনার মতো কয়েকটি ভারতীয় রফতানি খাতের জন্য সহায়ক হবে।

বিশ্ব বাণিজ্যে পোশাকখাতে ভারতের অন্যতম বড় প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ। ভারতীয় রফতানিকারকদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনসের (এফআইইও) মহাপরিচালক অজয় সাহাই বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন আমাদের কার্গো পরিবহনে অতিরিক্ত সক্ষমতা থাকবে। অতীতে রফতানিকারকরা বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ার কারণে বন্দর ও বিমানবন্দরে স্থান কম পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করতেন।

এর আগে, ভারতের পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন এইপিসি বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধার আদেশ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছিল। ওই সুবিধার ফলে দিল্লি এয়ার কার্গো ভবনের মাধ্যমে বাংলাদেশের রফতানি কার্গো তৃতীয় দেশে ট্রান্স-শিপমেন্টের অনুমতি পেতো।

এপিসির চেয়ারম্যান সুধীর সেখরি বলেছেন, প্রত্যেক দিন গড়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০টি পণ্যবাহী ট্রাক দিল্লিতে আসে। যা কার্গোর চলাচল ধীর করে দেয় এবং এয়ারলাইনসগুলো এই ধীরগতির কারণে অযৌক্তিক সুবিধা নিচ্ছে।

ভারতীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, এই সুবিধা প্রত্যাহার করায় বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, পূর্ববর্তী প্রক্রিয়ায় ট্রানজিটের সময় এবং ব্যয় হ্রাস করার লক্ষ্যে ভারতের ভেতর দিয়ে একটি বাধাহীন রুটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এখন এই সুবিধা বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশি রফতানিকারকরা লজিস্টিক বিলম্ব, উচ্চ ব্যয় এবং অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হতে পারেন। এ ছাড়া নেপাল এবং ভুটান—উভয় দেশই স্থলবেষ্টিত। বাংলাদেশের সুবিধা বাতিল করায় এই দুটি দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে। বিশেষ করে এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হবে।

অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) বিধি অনুযায়ী, স্থলবেষ্টিত দেশগুলোকে অন্য দেশে পণ্যের অবাধ পরিবহনের অনুমতি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে সংস্থাটির সকল সদস্যের। এর অর্থ এই জাতীয় ট্রানজিট অবশ্যই বাধাহীন হতে হবে এবং এসব পণ্য অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব ও ট্রানজিট শুল্ক মুক্তও থাকবে। ভারত এবং বাংলাদেশ উভয়ই জেনেভা-ভিত্তিক সংস্থাটির সদস্য। 

বিভি/টিটি

মন্তব্য করুন: