বন্ধ হচ্ছে মার্কিন অর্থায়নে চালিত আরবি ভাষার টিভি চ্যানেল (ভিডিও)
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসার পর প্রভাবশালী কিছু মার্কিন গণমাধ্যমকে রীতিমত নিজের প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঐতিহাসিক সংবাদমাধ্যম ভয়েস অফ আমেরিকার বাজেট সংকোচন ও কর্মী ছাটাইয়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের পদক্ষেপ নেন ট্রাম্প। তবে নিউইয়র্কের একটি ফেডারেল আদালত সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দিলে বিলীন হওয়ার ঝুঁকি থেকে রক্ষা পায় ভয়েস অফ আমেরিকা। এবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত আরবি ভাষার একটি টেলিভিশনের অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ওই সংবাদমাধ্যমের নাম আল হুররা টিভি।
আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার আল হুররা টিভির বেশির ভাগ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে প্রোগ্রাম। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় সংবাদমাধ্যমটি বেশ জনপ্রিয়। বিশ্বের ২২ টি দেশে আল হুররার প্রায় ৩ কোটি দর্শক আছেন। সম্প্রচার শুরু হওয়ার প্রায় দুই দশক পর চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনো বিষোদ্গার না করেও কেন এমন পরিণতি বরণ করতে হলো এই টিভি চ্যানেলকে?
২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন আল হুররা প্রতিষ্ঠা করে। মিডল ইস্ট ব্রডকাস্টিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চ্যানেলটি নিয়ন্ত্রণ করা হতো। ওই একই বছর বুশ প্রশাসন ইরাকের নেতা সাদ্দাম হোসেনকে উৎখাত করে। সেসময় আরব বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সাফাই গাইতেই মূলত এই চ্যানেলকে কাজে লাগানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন সংবাদের কাউন্টার সংবাদ প্রকাশ করতো আল হুররা সহ মার্কিন অর্থায়নে পরিচালিত আরও বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম।
বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, বর্তমান বাস্তবতায় এসব সংবাদমাধ্যমের পেছনে অর্থায়নকে অপচয় মনে করছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি আরব বিশ্বের জনগণের মন জয় করার ব্যাপারেও তেমন আগ্রহ নেই ট্রাম্পের। অর্থায়ন বন্ধে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আল হুররায় কর্মরত সাংবাদিক ও অন্য কর্মীরা। আল হুররা প্রধান জেফরি গেডমিন বলেছেন, তিনি মনে করেন না যে- আল হুররা ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে মার্কিন প্রশাসনের স্থগিতাদেশ তুলে নেয়া হবে। এ বিষয়ে তিনি হাল ছেড়ে দিয়েছেন। তবে স্যটেলাইট সম্প্রচার বন্ধ থাকলেও স্বল্প পরিসরে অনলাইনে কার্যক্রম চালাবে আল হুররা।
সম্প্রতি প্রভাবশালী মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিবিএসের ওপরেও চটেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চ্যানেলটিতে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনের জন্য গণমাধ্যমটিকে ‘চরম মূল্য’ দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তবে বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করছেন, ট্রাম্পের এসব পদক্ষেপের জেরে বিশ্বব্যাপী 'গণমাধ্যম যুদ্ধে' ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: