রাশিয়া ইস্যুতে ন্যাটোকে পুরোনো অপকর্মের কথা মনে করিয়ে দিল চীন

রাশিয়া ইস্যুতে ন্যাটোকে পুরোনো অপকর্মের কথা মনে করিয়ে দিল চীন
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষ নিয়েছে চীন। এটি মানতে পারছে না ন্যাটো। তাই রাশিয়াকে সমর্থন না দিতে চীনের প্রতি আহ্বান করেছিলো ন্যাটো। কিন্তু ন্যাটের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে উল্টো চীন খোঁচা মেরে ন্যাটোর অপকর্ম মনে করিয়ে দিয়ে বলেছে, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে চীনা দূতাবাসে বোমা হামলা করেছিলো ন্যাটো। সেটি ভোলেনি চীন।
বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বেইজিং মিশনের এক মুখপাত্র বলেন, চীনের জনগণ সব সময় নিপীড়িত মানুষের মনের ব্যথা-বেদনাকে খুব সহজেই অনুধাবন করতে পারে। আমরা কোনদিন ভুলতে পারবো না যুগোস্লাভিয়াতে আমাদের দূতাবাসে হামলার কথা। আন্তর্জাতিক আইনের অপব্যবহারকারী কাছ থেকে কোন ধরনের ভাষণ শোনা আমাদের প্রয়োজন নেই।
দুই দিন আগে ইতালির রাজধানী রোমে ওয়াশিংটন-বেইজিং সাত ঘণ্টার বৈঠকের পর ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ চীনের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, চীন যদি রাশিয়াকে সাহায্য করে, তাহলে ফল হবে মারাত্মক। চীনকে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
আরও পড়ুন:
- যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়াকে নির্দেশ দিলো আন্তর্জাতিক বিচার আদালত
- সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী বাহিনী
ন্যাটো মহাসচিবের এমন হুঁশিয়ারির জবাবেই চীন আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটকে তাদের অতীত কুকর্মের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে ন্যাটোকে স্নায়ুযুদ্ধের অবশিষ্টাংশ উল্লেখ করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই জোট কতটুকু অবদান রাখতে পারছে, তা বিশ্লেষণ করে দেখার জন্যও সামরিক জোটটির প্রতি আহবান জানিয়েছে বেইজিং।
উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের পেছনে ন্যাটোর সম্প্রসারণ নীতিকে অনেকাংশেই দায়ী করা হয়। কারণ, রাশিয়া বারবার বলে আসছে ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিলে, তা মেনে নেবে না মস্কো। কারণ, এটি রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি।
বেইজিং ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন জানানোর পাশাপাশি মস্কোর যুক্তির সঙ্গেও একমত হয়েছে। চীর মনে করে, ন্যাটোর ইউরোপীয় সম্প্রসারণ স্পষ্টভাবে উস্কানিমূলক ছিলও। তাই চীন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরোধী ছিলও। সেই সঙ্গে এ ধরনের পদক্ষেপকে বিশ্ব বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর বলেও অভিহিত করেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে ৭ মে একটি আমেরিকান বি-২ বোমারু বিমান ব্রেলগ্রেডের চীনা দূতাবাসে বোমা হামরা চালায়। এতে তিন চীনা সাংবাদিক নিহত হন এবং কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। পুরো হামলার পরিকল্পনা করেছিলো সিআইএ। সেই সময় তারা জানায়, একটি সামরিক বহরকে নিরাপদ একটি ডিপোতে পৌঁছে নিতে বোমা হামলাটি হয়েছিলো।
এই ঘটনার জন্য তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন চীনের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছিলেন ভুলে হামলা হয়েছে। আমেরিকা ওই হামলা চালিয়েছিলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কোন অনুমতি ছাড়াই।
বিভি/এসএইচ/এজেড
মন্তব্য করুন: