নিষেধাজ্ঞার সুযোগে সস্তায় রাশিয়ার তেল নিলো ভারত, পশ্চিমাদের ক্ষোভ

ফাইল ফটো
ইউক্রেনে যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যখন রাশিয়াকে একঘরে করতে চাইছে, তখন ভারত তদের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মাধ্যমে সস্তায় ৩০ লাখ ব্যারেল অশোধিত তেল কিনেছে রাশিয়ার কাছ থেকে। এ নিয়ে আবারও ভারতের ওপর কিছুটা মনক্ষুন্ন হয়েছে পশ্চিমারা। খবর ভারতীয় বাংলা গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা-এর।
ভারতের সরকারি সূত্র বলছে, ‘ভূকৌশলগত ঘটনা তাদের জ্বালানি নিরাপত্তাকে মারাত্মক বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। খুব স্বাভাবিক কারণেই তারা এখন আর ইরান এবং ভেনেজ়ুয়েলা থেকে তেল আমদানি করতে পারছে না। বিকল্প উৎস খুঁজতে হচ্ছে চড়া দামে। তাই তারা রাশিয়ার কাছ থেকে কম দামে তেল কেনার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি।’
তবে বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বাঁকা কথা শুনিয়েছে আমেরিকা। রাশিয়া থেকে ভারতের সস্তায় তেল কেনার উদ্যোগ নিয়ে আমেরিকা জানায়, এতে ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের উপরে তাদের চাপানো আর্থিক নিষেধাজ্ঞার শর্ত ভাঙবে না ঠিকই। তবে বিষয়টির অর্থ, ইউক্রেনে সামরিক হামলাকে সমর্থন। যা ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে।
আমেরিকার অভিযোগের জবাব দিয়ে ভারত বলেছে, ‘ভারতের আইনসঙ্গতভাবে জ্বালানি কেনা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। যে সব দেশ তেলের জোগানে স্বনির্ভর এবং যারা নিজেরাই এখনও রাশিয়া থেকে তা কিনছে, তারা আমদানিতে রাশ টানার পক্ষে যুক্তি দিলে তা বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না।’
ইউক্রেন সংঘাতের পরে অশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই বিপদ আরও বেড়েছে। ফলে অন্য রাস্তা খোঁজার জন্য চাপও বেড়েছে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির পরিমাণ খুবই সামান্য দাবি করে ভারত বলছে, ‘আমাদের মোট চাহিদার ১ শতাংশ তেলও রাশিয়া থেকে আসে না। আমাদের প্রথম দশটি তেল সরবরাহকারী দেশের মধ্যে নেই রাশিয়া। দু’দেশের সরকারের মধ্যে কোনও ব্যবস্থাও নেই এ বিষয়ে।’
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানির ৭৫ শতাংশ যায় জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্সের মতো দেশে। নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, ফিনল্যান্ডের মতো দেশগুলিও বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি করে রাশিয়া থেকে।
এদিকে রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই ভারতকে তেল রফতানির বার্তা দিয়েছে ইরান। ভারতে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আলি চেগেনি বলেছেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ফলে ভারতকে প্রয়োজন অনুযায়ী জ্বালানি সরবরাহ করতে তৈরি তেহরান।’
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন আমেরিকা ইরানের উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল পারমাণবিক চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে। তার আগে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল সরবরাহকারী ছিল ইরানই।
বিভি/কেএস
মন্তব্য করুন: