• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

অদ্ভুত কারণে দিল্লির সব মাংসের দোকান বন্ধের নির্দেশ

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ৬ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
অদ্ভুত কারণে দিল্লির সব মাংসের দোকান বন্ধের নির্দেশ

ভারতের মাংসের দোকান

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সব মাংসের দোকান বন্ধ রাখতে নগর কর্তৃপক্ষের এক নির্দেশের পর বহু দোকানে গত দুদিন ধরে মাংস বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

দিল্লির দক্ষিণ ও উত্তরের মেয়ররা যুক্তি দিয়েছেন নবরাত্রির সময় সিংহভাগ হিন্দু মাছ-মাংস অর্থাৎ আমিষ খান না এবং অনেকে তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন দোকানে মাংস দেখে তারা অস্বস্তিতে ভোগেন। তবে প্রচুর মানুষ, এমনকি অনেক হিন্দুও, মাংস বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে তাদের ক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়াতে জানাচ্ছেন। তারা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তে ভারতের বহুত্ববাদ লঙ্ঘিত হয়েছে। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের বিরুদ্ধে লড়াইতে হিন্দু দেবী দুর্গার বিজয় উদযাপন উপলক্ষে নয়দিন ধরে নবরাত্রি উদযাপন করা হয়। ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের অনেকে এ সময়ে মাংস খান না। অনেকে এমনকী পেঁয়াজ-রসুনও খান না।  

দিল্লির সরকার চালায় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি । তারা মাংসের দোকান বন্ধ রাখা নিয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়নি। 

যে দুই মেয়র ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত মাংসের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছেন তারা ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

এই নির্দেশের কড়া সমালোচনা হচ্ছে দেশটির সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকে বলছেন, কারো মাংস না খাওয়ার যুক্তিতে অন্যের মাংস খাওয়ার অধিকার বা অন্যের জীবিকার অধিকার লঙ্ঘন করা যায়না।  

ভারতের পার্লামেন্ট লোকসভার সদস্য এবং পশ্চিমা বাংলার ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী মহুয়া মৈত্র তার এক টুইটে লিখেছেন, 'ভারতের সংবিধান আমার খুশিমতো যে কোনো সময়ে খাওয়ার অধিকার দিয়েছে।' 

জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ তার এক টুইটে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন- তাহলে কি রোজার মাসে মুসলিম প্রধান এই রাজ্যে সমস্ত অমুসলিম এবং পর্যটকদের জনসমক্ষে খাওয়া নিষিদ্ধ করে দেওয়া যাবে? 

অনেকে আবার প্রশ্ন করছেন অনেক হিন্দু যখন নবরাত্রিতে পেঁয়াজ রসুনও ছোঁননা, তাহলে সেগুলোর বিক্রি কেন নিষিদ্ধ করা হচ্ছেনা। "শুধু মাংসের বেলায় এই সিদ্ধান্ত কেন?

টুইটারে একজন লিখেছেন, 'হোটেলে গিয়ে মাংস খাওয়া চলবে। অনলাইনে বিক্রেতারা মাংস সরবরাহ করতে থাকবেন। কিন্তু গরীব মুসলিমদের মাংসের দোকান খোলা রাখলেই শুধু হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে।'

দক্ষিণ দিল্লি পৌর কর্পোরেশনের মেয়র মুকেশ সুরায়ান ৪ এপ্রিল এক চিঠিতে বলেন, ভক্তরা যখন পূজা দিতে যাওয়ার সময় মাংসের দোকানের পাশ দিয়ে যান, সেসব দোকান থেকে আসা গন্ধ যখন তাদের নাকে যায়, তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং অনুভূতিতে আঘাত লাগে।   

সুরায়ান বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, 'নবরাত্রির সময়, দিল্লির ৯৯ শতাংশ বাড়িতে এমনকি পেঁয়াজ-রসুনও ব্যবহার করা হয়না। সুতরাং দক্ষিণ দিল্লিতে মাংসের দোকান খোলা থাকতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।' 

তিনি বলেন, নির্দেশ অমান্য করলে জরিমানা করা হবে। পূর্ব দিল্লির মেয়র শ্যাম সুন্দর আগারওয়াল বলেন, 'যদি কেউ এ সময়ে মাংস বিক্রি করেন, সেই মাংস হয় পচা হবে - না হয় অবৈধভাবে জবাই করা পশুর মাংস হবে। সুতরাং আমি ১৬টি পর্যবেক্ষণ দল গঠন করে দিয়েছি যারা এ ধরনের মাংস ব্যবসায়ীর ওপর নজর রাখবে এবং প্রয়োজনমত ব্যবস্থা নেবে।'

মাংসের দোকান বন্ধ রাখার জন্য দক্ষিণ দিল্লি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত কোনো নির্দেশনা জারী করা হয়েছে কিনা তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে।

অনেক দোকান মালিক এমন কোনো নির্দেশনা না পেলেও ভয়ে তারা বন্ধ রেখেছেন বলে রিপোর্ট করেছে ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। 

দক্ষিণ দিল্লিতে প্রায় ১৫০০ নিবন্ধিত মাংসের দোকান রয়েছে। যদিও সাধারণ একটি বিশ্বাস রয়েছে যে ভারতের সিংহভাগ মানুষই মাংসভোজী নন, গবেষণা বলছে সে দেশের মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ নিরামিষাশী।

ভারতের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশই হিন্দু এবং তারাই মাংসের প্রধান ভোক্তা। 

রাজধানী দিল্লির বাসিন্দাদের বড়জোর এক-তৃতীয়াংশ নিরামিষাশী, এবং দিল্লি ভারতের 'বাটার-চিকেন ক্যাপিটাল' বলে খ্যাতি পেয়েছে। খবর বিবিসির।

বিভি/এইচএস

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2