ইউক্রেনকে বিধ্বংসী ড্রোন `ফিনিক্স ঘোস্ট` দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

সংগৃহিত
দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। প্রথম দিকে কিছুটা ব্যর্থ হলেও সম্প্রতি ইউক্রেনের বন্দর শহর মারিউপোল দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী। এই শহর দখলের পর ভ্লাদিমির পুতিনের নজর পড়েছে পূর্ব ইউক্রেনে। তাঁর নির্দেশে সেখানকার ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে (যাদের একত্রে ডনবাস বলা হয়) ইতিমধ্যেই হানাদারির অভিঘাত বাড়িয়েছে রুশ সেনারা। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের উপরেই নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যৎ।’
পূর্ব ইউক্রেন রক্ষায় বেশ তৎপরও জেলেনস্কিরে সোন্যরা। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিলো রুশ বাহিনীর প্রতিরোধে তাদের আবিষ্কৃত নতুন অস্ত্র বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন ‘ফিনিক্স ঘোস্ট’ দিবে ইউক্রেনকে। পেন্টাগনের গণমাধ্যম বিষয়ক সচিব জন কিরবি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ‘ফিনিক্স ঘোস্ট’ই এক মাত্র ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চল বাঁচাতে পারে।
মার্কিন সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানানো হয়, রশিয়ার প্রতিরোধে ইউক্রেনকে ১২১টিরও বেশি ‘ফিনিক্স ঘোস্ট’ ড্রোন পাঠাবে বাইডেন সরকার। শত্রুপক্ষের ট্যাঙ্ক, বিমান বা সেনাদল মুহূর্তে ধূলিসাৎ করতে পারবে এই ড্রোন। রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এই ড্রোন প্রথম নিজের দক্ষতা প্রমাণ করতে চলেছে। এক একটি ‘ফিনিক্স ঘোস্ট’ মাত্র এক বারই ব্যবহার করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তাদের তৈরি অস্ত্রগুলোর মধ্যে ‘ফিনিক্স ঘোস্ট’ সবচেয়ে সেরা। এই অস্ত্রটিকে অন্যতম শক্তিশালী ড্রোন। এই ড্রোন এর আগে কোথাও ব্যবহার হয়নি। বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোন তৈরি করেছে মার্কিন বিমান বাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অ্যাভেক্স এরোস্পেস সংস্থা। ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত বাধার আগেই এই ড্রোন তৈরি হয়েছিল বলেও জানায় তারা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘ফিনিক্স ঘোস্ট’ তৈরি করার খরচ তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কম। কিন্তু আঘাত হানার ক্ষমতা বিপুল।
ড্রোনটির নির্মাতা অ্যাভেক্স এরোস্পেসের দাবি, এই ড্রোন যে কোনও যুদ্ধ পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ইউক্রেনের মাটিতে এই ড্রোন নিজের খেল দেখিয়ে সবাইকে চমকে দেবে।
তবে ড্রোনটির আরও বেশ কিছু সাফল্যের কথা আপাতত গোপন রাখছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
অ্যাভেক্স এরোস্পেস জানায়, এই নতুন ড্রোন পরিচালনা করা খুব সহজ। তাই এর জন্য ইউক্রেনের সেনাকে বিশেষ কোনও প্রশিক্ষণ নিতে হবে না। শুধু একটি সুইচ টিপে শত্রুদের হাল, বেহাল করতে পারবে এই নতুন প্রজন্মের ড্রোন।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে না নামলেও ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনকে ২৫ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকার সামরিক সাহায্য পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিয়েভ-মস্কো সংঘাতের চরম পর্যায়ে এসে ইউক্রেনের জন্য আরও ৮০ কোটি ডলারের (৬ হাজার ১১৭ কোটি ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা) সামরিক অস্ত্র পাঠানোর কথা ঘোষণা দিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আমেরিকা এম-৭৭৭ হাউৎজার কামান এবং হামভি সামরিক যানের মতো অস্ত্র ইউক্রেনকে পাঠাবে বলে শোনা যাচ্ছে। পাশাপাশি ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কিকে এক লাখ ৪৪ হাজার গোলা পাঠাবেন বলেও জানিয়েছেন বাইডেন।
বিভি/কেএস
মন্তব্য করুন: