জেনেভায় জাতিসংঘের গুম বিষয়ক বৈঠক শুরু, আলোচনায় বাংলাদেশও

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় পাঁচ দিনব্যাপী গুম বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক আজ শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এই গ্রুপটি বিভিন্ন দেশের গুম পরিস্থিতির অগ্রগতি ও অবনতি নিয়ে পর্যালোচনা করে। পাঁচ দিনব্যাপী এই বৈঠকের আলোচনায় থাকছে বাংলাদেশ প্রসঙ্গও।
জাতিসংঘের এই গ্রুপটি পাঁচজন বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত। নাম‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’ তথা গুমসংক্রান্ত গ্রুপ গঠিত। গ্রুপের ৫ সদস্য হলেন- লুসিয়ানা হাজান (আর্জেন্টিনা), আউ বালডে (গিনি বিসাউ), গ্যাব্রিয়েল চিত্রোনি (ইতালি), হেনরিকস মিকেয়ভিসিয়াস (লিথুনিয়া) এবং আংখানা নীলাপাইজিত (থাইল্যান্ড)।
বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন দেশের নাগরিক হলেও তারা ওই সব দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন না। তারা স্বাধীন বিশেষজ্ঞ হওয়ায় নিজস্ব সূত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। তারপর প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কাছে শেয়ার করা হয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য। গুম সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে দেশগুলোর প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকার সুযোগ নেই।
জানা গেছে, জেনেভায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে গুম বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রতিবেদন সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গত বৈঠকের তালিকায় ৭৬ জন বাংলাদেশির নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জেনেভায় বাংলাদেশ দূতাবাস তালিকাটি ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায় জবাব দেয়ার জন্য। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উত্তরে জানিয়েছে যে, নিখোঁজ থাকার পর বেশ কয়েকজন আবার ফিরেও এসেছেন। এছাড়াও, ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে দেখা গেছে যে, নিখোঁজ কেউ কেউ ভারতে অবস্থান করছেন। তাদের অবস্থানের খবর যেসব গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে; ওই সব গণমাধ্যমের কপি এবং লিংক কমিটির কাছে দেয়া হয়।
গুমসংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপ অনেক দেশের গুম পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বিধায় তাদের পক্ষে স্বল্প সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। সে জন্যে বিষয়টি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া সময় সাপেক্ষ। প্রতি ৩ মাস অন্তর ওয়ার্কিং কমিটি বৈঠকে বসে। রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে কোনো দেশের কোনো দূতাবাসেরই কারও উপস্থিত হয়ে কিছু বলার সুযোগ নেই।
তবে বাংলাদেশ নিয়ে আজ থেকে শুরু হওয়া বৈঠকে নতুন কোন কোয়ারি চাওয়া হলে পরবর্তীতে যথাসম্ভব সরবরাহ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ গ্রুপটি এবারের সভায় ২১টি দেশের ২০১টি গুমের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ৭৬টি গুমের ঘটনা রয়েছে। গত সভার ওই রিপোর্টের জবাব বাংলাদেশ সরকার রাষ্ট্রদূত কর্তৃক পাঠিয়েছে। যেগুলোর খোঁজ পাওয়া গেছে, সেগুলো গুমের তালিকা থেকে বাদ যাবে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: