রুশ গ্যাস বন্ধ হলে তীব্র শীতের মুখে পড়বে জার্মানরা

ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সমর্থন না করায় জার্মানিতে গ্যাস সরবরাহ দিনদিন কমিয়ে দিচ্ছে রাশিয়া। রক্ষণাবেক্ষণের কথা বলে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন বন্ধ করা হচ্ছে। ফলে গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভর করে থাকা জার্মানির গ্যাসের সংকটের মুখে পড়তে হবে। যে কারণে শীতকালে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা সামলানো মুশকিল হয়ে যাবে দেশটির বাসিন্দাদের জন্য। খবর: ডয়চে ভেলে।
২০২১ সালে জার্মানিতে গ্যাসের ৫৫ শতাংশই ছিল রাশিয়া থেকে আসা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে এখন সে হার ৩৫ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই রুশ গ্যাসের উপর জার্মানির নির্ভরতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়নি। এই গ্যাসের বেশিরভাগই নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন দিয়ে সরবরাহ হয়ে থাকে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে বাল্টিক সাগরের নীচ দিয়ে সরাসরি জার্মানিতে গ্যাস আসে।
ইতোমধ্যে দেশটিতে গ্যাস সঞ্চয় এবং গ্যাসের দাম বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। ঘর উষ্ণ রাখার ব্যবস্থাপনায় থাকা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়ির মালিকরাও গ্যাসের চার্জ বাড়াচ্ছেন। বার্লিনের একটি প্রতিষ্ঠান গ্যাস বা তেলে ঘর উষ্ণ রাখার খরচ দ্বিগুণ করে দিয়েছে। ভোক্তারা সম্প্রতি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গ্যাস নিয়ে নানা ধরনের চিঠি পাচ্ছেন।
তিন হাজার হাউজিং প্রতিষ্ঠানের সংগঠন জিডিডাব্লিউ জানিয়েছে, আগামী বছরে প্রতিটি বসতবাড়িকে জ্বালানির জন্য তিন হাজার ৮০০ ইউরো বাড়তি খরচ করতে হতে পারে।
সাক্সনি রাজ্যের এক হাউজিং সংগঠন সতর্ক করে দিয়েছে, নিম্ন এবং মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের জন্য জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘‘আমরা পরিবারগুলোর জীবন নিয়ে কথা বলছি, রাজনীতিবিদদের এটা বুঝতে হবে।''
জার্মানির সবচেয়ে বড় রিয়েল এস্টেট গ্রুপ ভনোভিয়া গ্যাস দিয়ে উষ্ণ রাখা বাড়িঘরে তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। এর ফলে জ্বালানি খরচ আট শতাংশ কমবে বলে আশা তাদের। তবে জল গরম করার ব্যবস্থায় এর প্রভাব পড়বে না।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। গরম জল পাওয়ার সময় বেঁধে দেয়ার এই ঘোষণাকে অবৈধ বলে আখ্যা দিয়েছেন জার্মান নির্মাণমন্ত্রী ক্লারা গেভিৎস। ভাড়াটেদের সংগঠন জানিয়েছে, গরম জলের সরবরাহ ঠিকমতো দিতে না পারলে ভাড়াও কমানো উচিত।
রাশিয়া হঠাৎ করেই গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। কারণ হিসাবে মস্কো বলছে, জার্মান প্রতিষ্ঠান সিমেন্সের তৈরি করা একটি গ্যাস টারবাইন মেরামতের জন্য ক্যানাডায় আটকে আছে। কিন্তু রাশিয়ার উপর দেয়া নিষেধাজ্ঞার ফলে সেটিকে ফেরত আনা যাচ্ছে না।
সোমবার (১১ জুলাই) রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন পুরো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
বিভি/এনএ
মন্তব্য করুন: