রাশিয়ার বিরুদ্ধে জি-সেভেন গ্রুপের কড়া বিবৃতি: ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন ঘোষণা

ছবি: পার্স টুডে
গ্রুপ জি-সেভেনের সদস্য দেশগুলো তাদের সাম্প্রতিক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল চাপের মুখে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ অব্যাহত রাখা এবং মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার ওপর জোর দিয়েছে। জি-সেভেন গ্রুপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গতকাল বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন। তারা ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইংল্যান্ড, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালির সমন্বয়ে গঠিত জি-সেভেন গ্রুপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা গত রোববার ১৬ এপ্রিল জাপানের 'কারিজাওয়া' শহরে বৈঠক করেন। তিন দিনের এই বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ইউক্রেনের যুদ্ধ। প্রথম দফা আলোচনার পর, অংশগ্রহণকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের রুশ-বিরোধী নীতির সাথে মিল রেখে ইউক্রেনের যুদ্ধের বিষয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে।
প্রকৃতপক্ষে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা সরকারগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি সামরিক বিষয়ে বিশেষ করে সব ধরনের গণবিধ্বংসী অস্ত্র পাঠিয়ে এবং সামরিক বিশেষজ্ঞ পাঠিয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে। এরই অংশ হিসেবে জাপানে জি-সেভেন গ্রুপের বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা কঠোর করাসহ সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণে একমত হয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বর্তমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে জি-সেভেনের বিবৃতি প্রকাশের অর্থ হচ্ছে যুদ্ধবাজ নীতি গ্রহণ এবং এ অঞ্চলের অশান্ত পরিস্থিতিকে আরো উস্কে দেয়া। এ ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যবিশ্ব মিডিয়াকেও ব্যবহার করছে। এদিকে, আমেরিকা ও তার মিত্রদের উস্কানিতে ইউক্রেন সরকার সেদেশের রুশ জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত দুটি প্রদেশে বসবাসকারী জনগণের বিরুদ্ধে অসাম্য যুদ্ধ শুরু করেছে। তারা দোনেস্ক ও লুহানস্কের মতো ঘন জনসংখ্যা অধ্যুষিত এলাকায় সামরিক হামলা চালিয়েছে যারা মূলত রুশ ভাষী।
মূল সমস্যা হচ্ছে, মার্কিন নেতৃত্বে পাশ্চাত্যের দেশগুলো রাশিয়ার সীমান্তের দিকে ন্যাটোর প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছিল। এরফলে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যখন পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তখন পাশ্চাত্যও রাশিয়ার বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর ইরান ও চীন প্রথম থেকেই বলে আসছে রাশিয়ার সীমান্তের দিকে পাশ্চাত্যের উস্কানিমূলক তৎপরতার কারণেই মূলত ওই অঞ্চলে সংঘাত শুরু হয়েছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর পশ্চিমা সরকারগুলো পাশ্চাত্যঘেঁষা রাজনীতিবিদদের সহায়তায় ইউক্রেনের সমস্ত সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করেছিল। আর এখন তারা ইউক্রেনের পশ্চিমাপন্থী প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সহায়তায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে ইউক্রেনকে ধ্বংস করছে। যুদ্ধের কারণে গত বছর ইউক্রেনের অর্থনৈতিক অবকাঠামো কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে। ইউক্রেন একটি শিল্পোন্নত দেশ থেকে সম্পূর্ণ রূপে কৃষিভিত্তিক দেশে পরিণত হয়েছে।
যাইহোক, এ অবস্থায় জি-সেভেন গ্রুপের বিবৃতি পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।
বিভি/ এসআই
মন্তব্য করুন: