কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়া !
মানহানির মামলায় ফের নাকাল রাহুল !

ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী মানহানির মামলায় ফের আদালতে ধাক্কা খেয়েছেন। মানহানির মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে যে আবেদন রাহুল গান্ধী জানিয়েছিলেন (বৃহস্পতিবার-২০ এপ্রিল) খারিজ করে দিয়েছে নগর-দায়রা আদালত। এর ফলে আপাতত এমপি পদ ফেরত পাচ্ছেন না রাহুল গান্ধী। এর পাশাপাশি তার জেলে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গত ২৩ মার্চ গুজরাটের একটি আদালত রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে রায়দান করেছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নগর-দায়রা আদালতে আবেদন করেছিলেন রাহুলের আইনজীবী। কিন্তু অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আরপি মোগেরা আজ সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার আবেদন খারিজ করেছেন।
‘মোদী’ পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে রীতিমতো আইনি জটিলতায় পড়েছেন রাহুল গান্ধী। ২০১৯ সালে কর্ণাটকে ভোটের প্রচারে গিয়ে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, দেখা যাচ্ছে যারাই দুর্নীতি করছেন তাদেরই পদবী ‘মোদী’। নীরব মোদী টাকা লুট করে পালিয়ে গেছেন। আর যিনি তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন তিনিও একজন মোদী। দু’জনেই আবার একই রাজ্যের। এরপরই গুজরাটের বিজেপি নেতা আদালতে মামলা করেন। তারও পদবী মোদী। তিনি আদালতে বলেন, ‘মোদী’ পদবীকে রাহুল গান্ধী অপমান করেছেন।
মানহানির সেই মামলায় কংগ্রেস নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল সুরাট আদালত। তাকে দুই বছরের সাজা দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার ভিত্তিতে গত ২৪ মার্চ ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮(৩) নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের এমপি পদ খারিজ করে দিয়েছেন।
আদালত অবশ্য সাজা ঘোষণার পরই রাহুল গান্ধীকে ৩০ দিনের জন্য শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছিল। একই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল এই ৩০ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ আবেদন করারও সুযোগ পাবেন তিনি। এরপর সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই সম্প্রতি সুরাট নগর-দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সাজার উপরে স্থগিতাদেশ জারির জন্য আবেদনও জানিয়েছিলেন। কিন্তু আজ, বৃহস্পতিবার সুরাটের দায়রা আদালত রাহুল গান্ধীর সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। এর ফলে আপাতত এমপি পদ ফিরে পাচ্ছেন না রাহুল গান্ধী। একইসঙ্গে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা নেতা জয়রাম রমেশ জানিয়েছেন, দল আগামী দিনে সমস্তরকম আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সিনিয়র আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট সুরাট দায়রা আদালতের ভুল সংশোধন করবে। তিনি বলেন, রায়ের দ্বিতীয় অংশে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মানহানি করা হয়েছে, কিন্তু তিনি এতে কোনো পক্ষ নন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী মোদীও এ নিয়ে কখনো অভিযোগ করেননি। সিদ্ধান্তটিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে বর্ণনা করে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি বলেন, এটি ন্যায়বিচারের মূল নীতির লঙ্ঘন। রাহুল গান্ধীর বক্তব্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও সিনিয়র আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি মন্তব্য করেছেন।
বিভি/ এসআই
মন্তব্য করুন: