রমজানে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে চিকিৎসকদের ৭ পরামর্শ

প্রতীকী ছবি
শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রহমজান। এই মাসে দীর্ঘ সময় পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয় মুসলমানদের। ফলে দিনভর পানি পান না করায় অনেকের পানিশূণ্যতাসহ নানা শারীরিক জটিলতা বাড়ার শঙ্কা থাকে। তার ওপর এবার রমজান এসেছে চৈত্রের খরতাপের মধ্যে। তাই এই সময়ে পানিশূন্যতার কারণে হার্ট রেট কিংবা প্রেশার কমে গুরুতর বিপত্তি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা।
পুষ্টিবিদ ডা. রুবাইয়া রীতি বলেন, এবার রোজার সময়টায় গরম পড়বে বেশি। সে কারণে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে অবশ্যই পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে এবং ফিট থাকার জন্য দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করতে হবে।
ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়ে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করতে হবে। একই সাথে শরীরচর্চাও গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে যারা তারাবি নামাজ পড়েন সেটি তারা নিয়মিত পড়লে উপকৃত হবেন বলেও জানান এই পুষ্টিবিদ।
"অনেকেই ইফতারের পর আর খেতে চান না। এটি ঠিক নয়। রাতের খাবার খেতে হবে পরিমিত মাত্রায় এবং সেহরিও খেতে হবে। তাহলে পানির ঘাটতি কম হবে"। বলেছেন, পুষ্টিবিদ ডা. রুবাইয়া রীতি।
চিকিৎসকরা সাধারণত বয়স, উচ্চতা ও ওজন ভেদে একজন মানুষকে দিনে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৬ গ্লাস পর্যন্ত পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু রোজায় দিনে পানাহারের সুযোগ না থাকায় দীর্ঘ সময় পানি পান করা যায় না। অথচ ঘাম, পেশাব ও শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রচুর পানি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এ কারণে শরীরে পানিশূন্যতার শঙ্কা তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতি পানিশূন্যতা থেকে বাঁচতে ৭টি পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
যেসব কারণে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে:
- দীর্ঘ সময় ধরে পানি না পান করার কারণে শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে
- খাবার তালিকায় পানিসমৃদ্ধ খাবার না রাখা
- জ্বর বা ডায়রিয়ার মতো অসুস্থতাজনিত কারণে
- অতিরিক্ত ভাজা পোড়া জাতীয় খাবারের কারণেও পানিশূন্যতা হতে পারে
- ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান না করা
- ইফতারের পর অতিমাত্রায় চা কফি খেলে
- অতিরিক্ত রোদ বা গরমে থাকার কারণে
পানিশূন্যতা হলে যেভাবে বুঝবেনঃ
চিকিৎসকদের মতে, শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়লে জিহ্বা দেখে সহজে বোঝা যায় কারণ জিহ্বা শুকিয়ে যায়। এছাড়া অনেকের চোখ গর্তে চলে যায় এবং দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। এছাড়া শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা তেরি হয়।
যেভাবে মুক্ত থাকবেন পানিশূন্যতা থেকেঃ
পানিশূন্যতা থেকে মুক্ত থাকার জন্য করনীয় সম্পর্কে ৭টি পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
- ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত পানি পান করা
- সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়া
- ইফতারে ফলের রস ও ফলের পরিমাণ বেশি রাখা
- সরাসরি রোদে না যাওয়া
- অতিরিক্ত খাবার না খাওয়া
- প্রয়োজনে ডাবের পানি বা খাবার স্যালাইন পান করা
- হালকা শরীর চর্চা করা
এছাড়াও অতিরিক্ত ঠাণ্ডা পানি থেকে বিরত থাকা, দুধ চায়ের বদলে খুবই অল্প মাত্রায় রঙ চা পান করা, পর্যাপ্ত পানির পাশাপাশি খাবারে লাউ, কুমড়ো বা পেঁপে জাতীয় খাবার বেশি রাখারও পরামর্শ চিকিৎসকদের।
বিভি/কেএস
মন্তব্য করুন: