কুমিল্লায় সফল হলে সংসদ নির্বাচনেও সিসি ক্যামেরা!

ছবি: সংগৃহীত।
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আস্তে আস্তে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই জন্য প্রচলিত ব্যালটের চেয়ে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের দিকে আগাচ্ছে কমিশন। প্রযুক্তির ব্যবহারে আরো এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে ইসি। এবার ইভিএমের পাশাপাশি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে সব ভোটকেন্দ্র ও ভোট কক্ষে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। আর কুমিল্লায় সফলতা আসলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করার কথা চিন্তা করবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে আউট সোর্চিং-এর মাধ্যমে প্রায় আটশ’ সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত কল্পে এই নির্বাচনে ভোটগ্রহনের জন্য ইভিএম প্রস্তুত (ক্যাস্টমাইজেশন) করা ও বিতরণের সময় প্রার্থীর প্রতিনিধি থাকার সুযোগ দেওয়া হবে। এ নির্বাচনে সব ভোটকেন্দ্র ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় মনিটরিং এর সুব্যবস্থা থাকবে।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, কুসিকে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ মে, বাছাই ১৯ মে, আপিল ২০ থেকে ২২ মে, আপিল নিষ্পত্তি ২৩ থেকে ২৫ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৬ মে, প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ জুন।
কুমিল্লা সিটিতে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ভোটকেন্দ্রে অন্যায় হল কি হল না; ভোটের পরেও অনেক সময় অভিযোগ করা হয়– এটা সঠিক কিনা প্রমাণের জন্য সিসি ক্যামেরা সুবিধা হবে। ক্যামেরা থাকলে যারা অন্যায় করতে চায় তারা করবে না বলে মনে করি। এটা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
তিনি জানান, নির্বাচনের আগে থেকে সিসি ক্যামেরা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নির্বাচনী মালামাল যখন কেন্দ্রে যাবে, তার আগে থেকেও হতে পারে। ভোট গণনা, রেজাল্টের পর আরও কিছু সময় পর্যন্ত তা থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রের বাইরে একটি করে এবং কেন্দ্রের ভেতরে প্রতিটি ভোটকক্ষে একটি করে সিসি ক্যামেরা থাকবে। তবে ভোটকক্ষের যেখানে ভোট দেওয়া হয় সেই গোপন কক্ষে সিসি ক্যামেরা থাকবে না।
কুমিল্লায় সিসি ক্যামেরায় যদি সফলতা পান বা যদি দেখেন ভালো প্রভাব পড়ছে তাহলে সংসদ নির্বাচনেও ব্যবহারের চিন্তা করবেন কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভালো হলে তো আমরা সেটা চিন্তা করতেই পারি। ভালো জিনিসি যত হয়, ততোই তো ভালো। ভালোকে রিপ্লিকেট করাটাই তো নিয়ম।
ইসির চলমান সংলাপেও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সবার আস্থা অর্জনে সংসদ নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করার জন্য কয়েকজন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটিকে পরামর্শ দেন।
জানা গেছে, ২০১০ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ভোট ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক তখনকার বড়বড় নির্বাচনগুলোতে সিসি টিভি ব্যবহারের পাশপাশি অনলাইনেও ভোটগ্রহণ মনিটরিং করা হয়। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনসহ বেশকিছু নির্বাচনে এতে ব্যাপক সাফল্য আসে। সেই ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে পরবর্তীতে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশনও সীমিত পরিসরে অনলাইনে ভোটকেন্দ্র মনিটরিং করে। ইসির একটি টিম সার্বক্ষণিক এই বিষয়ে তৎপর থাকতো। আর পুরো বিষয়টি ইসির তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাধ্যমে দেখভাল করা হতো। কিন্তু ব্যয় বাড়ার অজুহাতে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল সিটি নির্বাচনের পর আর সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করেনি কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন।
বিভি/এইচকে
মন্তব্য করুন: