প্রতিদিন হত্যার শিকার হওয়া সাপের ৮০ শতাংশের বেশিই নির্বিষ
রাসেলস ভাইপার আতঙ্কে বন বিভাগের হটলাইনে ঘণ্টায় আসছে অর্ধশতাধিক ফোন
![রাসেলস ভাইপার আতঙ্কে বন বিভাগের হটলাইনে ঘণ্টায় আসছে অর্ধশতাধিক ফোন রাসেলস ভাইপার আতঙ্কে বন বিভাগের হটলাইনে ঘণ্টায় আসছে অর্ধশতাধিক ফোন](https://www.bvnews24.com/media/imgAll/2024April/bv-news24-2406231311.jpg)
দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া রাসেলস ভাইপার সাপ আতঙ্কে বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ৫টি হটলাইন নম্বরের প্রতিটিতে ঘণ্টায় গড়ে ৫০টি করে কল আসছে। কোথাও কোনো সাপ দেখলেই কল করছেন সাধারণ মানুষ। অনেকে আবার সাপ মেরে কল করে পুরস্কারের টাকাও চাচ্ছে এই দফতরের কাছে। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট বলছে, ফোনে জনগণের দেওয়া তথ্য যাচাই করে তারা দেখছেন হত্যার শিকার হওয়া ৮০ শতাংশ সাপই ছিল নির্বিষ।
রবিবার (২৩ জুন) দুপুরে বাংলাভিশনকে এই তথ্য জানান বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক ছানাউল্যাহ পাটোয়ারী।
তিনি বলেন, প্রতি মিনিটে কল আসছে। একটি কল রিসিভ করে কথা বলা অবস্থায় আরো ২-৩টি কল আসছে। অধিকাংশ মানুষই আতঙ্কে কল করছে। কেউ সাপ দেখে কল করছেন কেউ সাপ দেখলে কি করবেন সেটা জানতে চাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার সাপ হত্যা করেও জানাচ্ছেন। তবে আমরা তথ্যদাতার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছবি আনিয়ে দেখছি হত্যার শিকার হওয়া সাপের মধ্যে রাসেল ভাইপার নেই বললেই চলে। মৃত সাপগুলোর অধিকাংশই নির্বিষ এবং উপকারী।
তিনি আরও বলেন, রাসেল ভাইপার বাড়ার অন্যতম কারণ প্রকৃতি থেকে তার খাদক কমে যাওয়া। এখন রাসেল ভাইপার নিয়ন্ত্রণের নামে যেগুলো মারা হচ্ছে এর মধ্যে ঘরগিন্নি, অজগর, দারাজ, শঙ্খিনিসহ বিভিন্ন প্রজাতির সাপ আছে। এদের অধিকাংশই রাসেল ভাইপারের খাদক। তারা রাসেল ভাইপারকে খেয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে। অথচ জনগণ উপকারী সাপগুলোও মেরে ফেলছে। আমরা হটলাইনে করা সবাইকে অনুরোধ করছি সাপকে না মেরে তার মতো থাকতে দিতে। কোনো সাপ নিজের জন্য কাউকে হুমকি মনে না করলে আক্রমণ করে না। আর রাসেল ভাইপার গাছেও উঠে না, ঘরেও আসে না। জমিতে যাওয়ার সময় একটু সচেতনতা অবলম্বন করলেই রাসেল ভাইপারের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। আমরা মনে করছি মানুষ যে সচেতন হয়েছে এটা ভালো দিক, তবে হত্যাটা বন্ধ করতে হবে।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসীম মল্লিক বলেন, গত তিনদিন ২৪ ঘণ্টা আমাদের ফোনগুলোতে কল আসছে। কেউ কেউ আতঙ্কে কল করছে, সমাধান চাচ্ছে। কেউ আবার শুধু শুধু কল করে আমাদের নারী কর্মকর্তাদের হয়রানি করছে এমন ঘটনাও আছে। তবে আতঙ্কে কল করা বা সাপ দেখলে কি করবে সেটা জানতে চেয়ে কল করার হারই বেশি।
যারা সাপ দেখে তথ্য দিচ্ছে আমরা তাদের বলছি ছবি পাঠাতে। কেউ মেরে ছবি পাঠাচ্ছে কেউ জীবিত ছবি দিচ্ছে। কিন্তু যাচাই করে যা দেখছি, হত্যার শিকার সসাপগুলোর ৮০ শতাংশেরও বেশি নির্বিষ বা উপকারী। তাই সাপকে না মেরে তার মতো থাকতে দিতে বা বেশি সমস্যা মনে করলে ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিতে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি। বলেন, বন্যপ্রাণী পরিদর্শক অসীম মল্লিক।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর দেশে ৬ হাজারের মতো মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়, এর মধ্যে রাসেল ভাইপারের কামড়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২শ' জনেরও কম। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য যাচাই করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশান সেন্টার এন্ড কন্ট্রোল রুম বলছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সাপের কামড়ে মাত্র ৬ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছেন তারা।
বিভি/রিসি
মন্তব্য করুন: