• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

তিনমাস নিষেধাজ্ঞার পর আগামীকাল থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন

জসিম উদ্দিন, মোংলা (বাগেরহাট)

প্রকাশিত: ২০:০০, ৩১ আগস্ট ২০২৪

ফন্ট সাইজ
তিনমাস নিষেধাজ্ঞার পর আগামীকাল থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন

সুন্দরবন শুধু জীববৈচিত্র নয়, মৎস্যসম্পদেরও আধার। প্রতি বছর এক-দেড় লাখ জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়াল সুন্দরবনে সম্পদ আহরণ করেন। তাই মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় গত ১ জুন থেকে সুন্দরবনে জেলে ও পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। টানা তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আগামী রোববার থেকে বনজীবী ও পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন। দীর্ঘ বিরতির পর সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন খুলনার সুন্দরবনসংলগ্ন বনজীবীরা। একই সাথে নান্দনিক সাজে সাজিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে পর্যটন স্পট গুলোকে।

খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘সুন্দরবন শুধু জীববৈচিত্র নয়, মৎস্য সম্পদেরও আধার। জুন-আগস্ট মাছের প্রজনন মৌসুম। এ সময় সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ কারণে ১ জুন থেকে তিন মাসের জন্য জেলে ও পর্যটকদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। 

সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনে প্রবেশে পাস দেয়া হবে। নির্ধারিত ফরেস্ট স্টেশনগুলোকে এ বিষয়ে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। অনুমতিপত্রের মেয়াদ অনুযায়ী সুন্দরবনে অবস্থানকারী জেলেদের তালিকা বনরক্ষীদের ক্যাম্প কর্মকর্তার কাছেও থাকবে। বনরক্ষীরা তালিকা অনুযায়ী প্রতিটি খালে টহল দিয়ে অনুমোদন পাওয়া জেলের নৌকা যাচাই করে দেখবেন। তিনি আরো বলেন,সুন্দরবনে সম্পদ আহরণে ১২ হাজার নৌকা ও ট্রলারকে বোর্ড লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) দেয়া হয়। এসব নৌযানের মাধ্যমে প্রতি বছর এক-দেড় লাখ জেলে, বাওয়ালি ও মৌয়াল সুন্দরবনে সম্পদ আহরণ করেন।

No description available.

তিন মাস বন্ধ থাকায় পর্যটন স্পট ও ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র গুলোতে ছিলো শুনশান নিরতবা। সেখানে উন্মুক্ত বনে ঘুরে বেরাচ্ছে বাঘ, বানর, গুইসাপ ও হরিণ। ১ সেপ্টেম্বর থেকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন। বনের হারবাড়িয়া ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অভিক চৌধুরী জানান, কিছু দিন পূর্বে ঘূনিঝড় রিমাল ব্যাপক ক্ষতি করে বনের পর্যটন স্পটগুলোর। সেসব ক্ষতি কাটিয়ে নতুন রুপে সাজানো হয়েছে হারবাড়িয়া স্পটটি। আশা করি আগত পর্যটকরা এসব উপভোগ করে মুগ্ধ হবেন।

বনের করমজল বন্য প্রানী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, জুন, জুলাই, আগস্ট- এই তিন মাস ধরে সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিলো। পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে সবার জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ ম্যানগ্রোভ বন। তাই বনের করমজল, হারবাড়িয়া, দুবলা, কটকা, কচিখালী, আন্দার মানিক ও নীলকমলসহ সমুদ্র তীরবর্তী ও বনাঞ্চলের সবকটি পর্যটক স্পট দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। নতুন সাজে তার সৌন্দর্য যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে দর্শনার্থীদের।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের পরিচালক আবু ফয়সাল মোহাম্মদ সায়েম বলেন, ‘ বর্তমানে পর্যটকের সাড়া অনেক ভালো। কারণ দেশের পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা নেই। তাই আমরা পর্যটকদের সুন্দরবকনে স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করি প্রচুর পর্যটক আগমনের মধ্য দিয়ে আমাদের আগের কয়েক মাসের লোকসান কেটে যাবে।

এ দিকে, বনে যাওয়ার জন্য জাল ও নৌকা সংস্কারসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সেরে নিয়েছেন, মোংলা উপকুলের জেলেরা। তারা বলছেন, ‘তিন মাস বনে যেতে পারিনি। এতে খুব কষ্টে দিন কাটিয়েছি। আশা করছি ১ সেপ্টেম্বর থকে বৈধভাবে বনে যাব, মাছ ধরব; আয় করবো।
চলতি মৌসুমে মাছ ধরার জন্য সুন্দরবনের দুই বিভাগ থেকে এরইমধ্যে প্রায় ৮ হাজার নৌকার পাস নবায়ন করা হয়েছে। সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে গড়ে প্রতিবছর ২ লক্ষাধিক দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে আসেন। এ খাতে বছরে গড়ে চার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে বন বিভাগ।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: