গাজায় বাংলাদেশি সাহায্য পৌঁছে দেওয়া দুই স্বেচ্ছাসেবক পরিবারের ৭ সদস্য নিহত (ভিডিও)
ইসরায়েলি আগ্রাসনের শুরু থেকে গাজায় নির্যাতিতদের জন্য সাহায্যসামগ্রী পাঠিয়ে আসছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ। যা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে কাজ করছেন স্থানীয় একদল স্বেচ্ছাসেবক। সম্প্রতি সেই দলের ২ সদস্যসহ তাদের পরিবারের ৭ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সৈন্যরা।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় শুরু হয় ইসরায়েলি আগ্রাসন। বোমার আঘাতে দিনে দিনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে থাকে পুরো গাজা। দীর্ঘ হতে থাকে মৃত্যুর মিছিল। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় ভেঙে পড়ে গাজার পুরো অর্থ ব্যবস্থা। তৈরি হয় অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর সংকট। সেই সময় থেকে দেশে অর্থ সংগ্রহ করে নিঃস্ব গাজাবাসীর জন্য তাবু, খাবার, পানি ও পোশাকসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠাচ্ছে বাংলাদেশের আলেমদের পরিচালিত সংগঠন হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ। সেই সাহায্য পৌঁছে দেওয়াই কাল হয়েছে এই দুই স্বেচ্ছাসেবকের। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের শহীদ স্বেচ্ছাসেবকদের পরিচয় প্রকাশ করেনি সংস্থাটি।
হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম বাংলাভিশনকে বলেন, আমরা মিশরে গিয়ে সেখানকার ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ও মিশরের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ণরত বাংলাদেশি তরুণদের মাধ্যমে গাজার তরুণদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছি। হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের দেওয়া সাহায্য সামগ্রী ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে তারা ১৮ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করেছেন। মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এই টিমটি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে ঘরে ঘরে সাহায্যসামগ্রী পৌঁছে দেন। কিন্তু সম্প্রতি আমাদের এই স্বেচ্ছাসেবক দলের দুইজন সদস্যসহ তাদের পরিবারের ৭ জনকে শহীদ করে দিয়েছে ইসরায়েলী সৈন্যরা।
তবে সংস্থাটি বলছে, তাদের ২ স্বেচ্ছাসেবকের মৃত্যু হলেও এখনো অব্যাহত রয়েছে সহায়তা কার্যক্রম। বিধ্বস্ত গাজায় বাসস্থান সংকট চরম আকার ধারন করায় এখন খাবার ও পানির পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে তাবু নির্মাণ। তাই এখন তাবু নির্মাণকেই এখন সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন তাদের স্বেচ্ছাসেবকরা। তবে এই কাজে প্রয়োজন বিপুল পরিমান অর্থ।
হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম আরও বলেন, আমরা এখন তাবু নির্মাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের টিমের মনোবল এখনো ঠিক আছে। তারা শহীদি তামান্না নিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতে খাবার, পানি, তাবু ও চিকিৎসাসহ সাধ্যমতো সবকিছু পৌঁছে দিচ্ছেন। এখন তাবুর প্রচুর চাহিদা। এর জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমান অর্থ।
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া’র মহাসচিব ও হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের উপদেষ্টা মুফতি মাহফুজুল হক বলেন, গাজাবাসীর জন্য আমাদের দান, সদকা, যাকাত দেওয়া উচিত। হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ বিশ্বস্ততার সাথে সাহায্যগুলো পৌঁছে দিচ্ছে। তারা যথাযথ হিসাব সংরক্ষণ এবং অডিটও করে। এদের মাধ্যমে আমরা সাহায্য পাঠাতে পারি।
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: