নির্বাচনের চূড়ান্ত ডেডলাইন জানালেন আসিফ নজরুল

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলাপের বিষয়বস্তু তুলে ধরে বলেছেন, আমরা বিএনপিকে ক্যাটাগরিক্যালি বলেছি, নির্বাচন কোনোভাবেই ২০২৬ সালের জুনের পরে যাবে না। যে যা-ই বলুক না কেন, এটা প্রধান উপদেষ্টার অঙ্গীকার পুরো জাতির প্রতি। এটা বার বার তিনি বলেছেন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে যমুনায় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক শেষে বের হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবনা বিষয়ে বিএনপি অত্যন্ত ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা বলেছে, ২/৩ দিনের মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে তারা বসছে। অধিকাংশ সংস্কার প্রস্তাবের সঙ্গে তারা ঐকমত্য পোষণ করে। জুলাই চার্টার অত্যন্ত তৈরি হয়ে যাবে সেটাও তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে, বিএনপি সংস্কারের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক।
ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ভিন্নমত আছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, একটা বিষয় নিয়ে একটুখানি ভিন্নমত হতে পারে, ওনারা বলেছেন ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন করলে ভাল হয়। আমরা এখানে বলেছি, আমাদের কারো কারো কথার মধ্যে যদি অস্পষ্টতা থাকে, আমাদের মধ্যে কোন কোন প্রতিষ্ঠান যে যায় বলুক না কেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে যেটা বার বার বলেছেন সেটাই আমাদের সরকারের অবস্থান। সেখান থেকে অন্য কেউ যদি বেফাঁস কথা বা নিজস্ব বিবেচনায় কথা বলেন সেটাতে তারা যেন বিভ্রান্ত না হন। ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রথম থেকেই বলেছেন ডিসেম্বর থেকে জুন।
বিএনপির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে কিছু বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, আজকে আমরা কয়েকটা বিষয় স্পষ্ট করেছি। ডিসেম্বর থেকে জুন এর মধ্যে নির্বাচন মানে আমরা ইচ্ছা করে দেরি করে করে মে বা জুন মাসে নির্বাচন করবো সেটা না। ডিসেম্বর থেকে জুন মানে হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। যদি ডিসেম্বরেই সম্ভব হয়, ডিসেম্বরে, যদি জানুয়ারি তে সম্ভব হয় জানুয়ারিতে, আমরা এভাবে বুঝিয়েছি। অকারণে একমাস, দুই মাস অতিরিক্ত ক্ষমতায় থাকলাম, মোটেই এটা না। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।
তিনি বলেন, বিএনপি থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে, সংস্কার যদি হয়ে যায় এত দেরি করার কি আছে? আমরা স্পষ্ট করে বুঝিয়েছি, জুলাই চার্টা প্রস্তুত হয়ে গেলেও আইনগত বিষয় আছে, নীতিগত বিষয় আছে সেগুলো গ্রহণ করতে সময় লাগে। যেমন ডিজিটাল সুরক্ষা আইন আমরা ২৩ বার ড্রাফট করেছি, বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে কথা বলেছি এবং বেশ কয়েকমাস সময় লেগেছে। আমরা ত জুলাই চার্টারে পিনপয়েন্ট করতে পারবো না। আমরা ত অংশীজনের সঙ্গে কথা বলবো সেজন্য কিছুটা সময় লাগবে।
জনগণের আকাঙ্ক্ষা আছে যে, সরকার বিচার করে যাক-এমন কথা উল্লেখ করে সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, আজকে বাংলাদেশে এত হাজারের অধিক জীবন দিয়েছে, ৫০/৬০ হাজার মানুষ সারাজীবনের জন্য শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিচারের যে দাবি এটা ত জনআকাঙ্ক্ষা আছে। আমরা যদি কোন বিচার না করে যাই, তাহলে আমরা মানুষের কাছে, নিজের কাছে জবাব দিবো কিভাবে? শুধু ইলেকশন, সংস্কার, বিচার ও আমাদের গৃহীত কিছু পদক্ষেপের উপর নির্ভর করে জুন টাইমলাইনটা বলা হয়।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: