নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাতিল চায় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবগুলোকে অগ্রহণযোগ্য ও বিতর্কিত আখ্যায়িত করে এসব সুপারিশমালা অবিলম্বে বাতিল ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দলটির চেয়ারম্যান এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন এবং সেক্রেটারি মুহা. নিজামুল হক নাঈমের পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানায় দলটি।
বিবৃতিতে তারা বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এমন কিছু প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে, যা এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তো বটেই, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস ও নৈতিকতার সঙ্গেও বৈসাদৃশ্যপূর্ণ। প্রস্তাবনায় এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীদের বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা ও আকাঙ্ক্ষা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। প্রতিবেদনের পরতে পরতে পরিবার ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার এক গভীর নীলনকশা আঁকা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, কমিশনের সুপারিশমালার ২৫ পৃষ্ঠায় মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিল করে নারী-পুরুষকে সমান সম্পত্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে প্রচলিত মুসলিম পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন মূলত আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত উত্তরাধিকার বিধান দ্বারা রচিত। এটিকে বাতিল করার অর্থ সরাসরি কুরআনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া। এটি শুধু শরিয়তের অবমাননাই নয়, বরং মুসলিম পরিচয়ের মূলে কুঠারাঘাত।
তারা বলেন, কমিশনের সুপারিশমালার ৯ম পৃষ্ঠায় সব ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা বাস্তবায়ন করা হলে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ সবাইকে ধর্মীয় পারিবারিক বিধান থেকে বিচ্ছিন্ন করে একটি ধর্মহীন কাঠামোয় আসতে বাধ্য করা হবে। এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার চরম লঙ্ঘন।
৯ম পৃষ্ঠায় আরও বলা হয়েছে, জাতিসংঘ প্রণীত CEDAW সনদের অধীনে বিবাহ ও পারিবারিক ক্ষেত্রে আইনের বাস্তবায়ন করা দরকার। আমাদের বক্তব্য হল, CEDAW-এর অনেক শর্ত সরাসরি ইসলামবিরোধী; যেখানে বিয়েকে শুধু একটি সামাজিক চুক্তি হিসেবে দেখা হয় এবং ইসলামী নিকাহ ও অভিভাবকত্বের মতো মৌলিক ধারণাগুলোর বিরোধিতা করা হয়।
তারা আরও বলেন, সুপারিশমালার ৯ম পৃষ্ঠার আরেক জায়গায়, নারী-পুরুষের পারিবারিক ভূমিকাকে অভিন্নভাবে দেখার প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ, ইসলাম নারী-পুরুষের মর্যাদা সমান মনে করলেও, তাদের ভূমিকায় প্রাকৃতিক পার্থক্যকে স্বীকার করে। তাই ‘নারী-পুরুষের পারিবারিক ভূমিকাকে অভিন্নভাবে দেখার’ প্রস্তাবটি ইসলামী সমাজব্যবস্থাকে বিকৃত করার অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।
এমতাবস্থায় অবিলম্বে আমরা ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ বিবর্জিত এই প্রতিবেদন বাতিল এবং বিতর্কিত কমিশন বিলুপ্ত করে এদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনা এবং সামাজিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মানুষদের নিয়ে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি করছি।
বিভি/পিএইচ
মন্তব্য করুন: