এলিট ফোর্স র্যাবের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব)
দেশের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস দমনের উদ্দেশে গঠিত চৌকস বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ২০০৪ সালে স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে অংশ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এই বাহিনী। ২৬ মার্চ প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি বছর দিনটিকে রেইজিং ডে হিসেবে পালন করে আসছে বিশেষ এই বাহিনীটি।
বর্তমানে বাহিনীর মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পালন করছেন অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
প্রতিষ্ঠার পর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও স্ব স্ব এলাকায় গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ শুরু করে র্যাব। প্রায় তিন সপ্তাহ পর ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ) রমনা বটমূলে নিরাপত্তা দিয়ে র্যাব তাদের কার্যক্রম শুরু করে। একই বছরের ২১ জুন পূর্ণাঙ্গভাবে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু বাহিনীটি।
সময়ের সঙ্গে পাল্লাদিয়ে বেড়েছে র্যাবের জনবল ও ব্যাটালিয়নের সংখ্যা। বর্তমানে এলিট ফোর্সটির ব্যাটেলিয়ন সংখ্যা ১৫টি। যেখানে পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার ও সরকারের বেসামরিক প্রশাসনের বাছাই করা চৌকস কর্মকর্তা ও অন্য সদস্যরা তাদের দায়িত্ব পালন করছেন।
র্যাব দেশে জঙ্গিবাদ নির্মূলে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন জেএমবি তাদের শক্তি জানান দেওয়ার পরপরই মাঠে নামেন র্যাব গোয়েন্দারা। এরপর শীর্ষ জঙ্গি নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই, সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানিসহ শত শত জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। এছাড়া গুলশানের হলিআর্টিসানে জঙ্গি হামলার পর র্যাব অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়। গত এক বছরের দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমসহ বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর তিন শতাধিক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
তাছাড়া প্রতিষ্ঠার পর থেকেই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদকবিরোধী অভিযান, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের মধ্যদিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করেছে বাহিনীটি। এছাড়া বিশেষ দিনগুলোতেও তাদের নিরাপত্তা দিতে দেখা যায়।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে র্যাবের কাছে জঙ্গি ও জলদস্যু মিলিয়ে মোট ৪২১ জন অপরাধী আত্মসমর্পণ করে। তারা এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। র্যাব নিজস্ব অর্থায়নে তাদের পুনর্বাসন ভূমিকা রেখেছে। র্যাবের এই ভূমিকাকে মানবিক বিচারেও এগিয়ে রাখছেন মানবাধিকার বিষয়ে সচেষ্টরা।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ক্যাসিনো অভিযানে বড়বড় রাঘব বোয়ালদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনে বাহিনীটি। যাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ কোটি কোটি টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, মাদক, অস্ত্র ও ক্যাসিনোর সরঞ্জাম। বিগত বছরগুলোতে নানা আনুষ্ঠানিকতায় র্যাব সদর দপ্তর ও অন্যান্য ব্যাটালিয়ানে পালন করা হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এতে সাহসিকতা ও সেবা দুই ক্যাটাগরিতে কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে গেল দুই বছর করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন বন্ধ রাখা হয়। এবার ২৮ মার্চ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হবে। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন।
'রিপোর্ট টু র্যাব' মোবাইল অ্যাপস সন্ত্রাস, মাদকসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানাতে মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসী তথ্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরাধ, নিখোঁজ ব্যক্তির তথ্য, খুন, অপহরণ, মাদক, ডাকাতির বিষয়ে যে কেউ সহজে জানাতে পারে।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: