আইনি বাধা নেই, মঙ্গলবার কুমিল্লা সিটি ভোটের তফসিল

আসন্ন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচন আয়োজনে কোনো আইনি বাধা নেই। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ রবিবার (৩ এপ্রিল) বাংলাভিশনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচন আয়োজনে কোনো আইনি বাধা আছে কিনা, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে কমিশনকে কিছু জানিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন আয়োজনে কোনো আইনি বাধা নেই। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এই সংক্রান্ত চিঠি আজকে (রবিবার) আমাদের কাছে আসার কথা ছিল। হয়তো কালকে পেয়ে যাবো।
৫ এপ্রিল কমিশন সভা রয়েছে, সেদিন এই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিশন সভায় আলোচ্য সূচিতে কমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়টি রয়েছে। সভায় কমিশন এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন:
- রমজানে রাজধানীর ১০ স্থানে স্বল্প মূল্যে মিলবে দুধ, ডিম ও মাংস
- রমজানের প্রথম দিনই বাড়লো এলপি গ্যাসের দাম, সন্ধ্যা থেকে কার্যকর
এর আগে ৭ মার্চ এই বিষয়ে জানতে চেয়েও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কোনো সাড়া না পেয়ে গত ৩০ মার্চ আবারও চিঠি দেয় কমিশন। ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরতি এই সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সীমানা বা ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ সংক্রান্ত কোনো জটিলতা অথবা অন্যকোনো সমস্যা বা আইনগত কোনো জটিলতা আছে কিনা সে সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল, যা অদ্যাবধি পাওয়া যায়নি। এই সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠান সংক্রান্ত পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সর্বাধিক গুরুত্ব বিবেচনায় তথ্যগুলো প্রয়োজন।
কমিশনের সিদ্ধান্তক্রমে জরুরী ভিত্তিতে তথ্যগুলো দেওয়ার জন্য পুনরায় অনুরোধ করা হয় ওই চিঠিতে।
এ দিকে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রথম বৈঠক আগামী ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। সেইদিন আইনী জটিলতা না থাকলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন, কম বেশি একশো ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি), দীর্ঘদিন আটকে থাকা কয়েকটি পৌরসভা ও স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নতুন কমিশনের প্রথম বৈঠক আগামী ৫ এপ্রিল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে। এই সংক্রান্ত সভার নোটিশ ইতিমধ্যে জারি করা হয়েছে।
সভার আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে- কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন; পৌরসভা নির্বাচন; ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন; স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য নির্বাচন ও উপনির্বাচন; এবং বিবিধ।
এর আগে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, কোনো আইনী জটিলতা আছে কিনা সেই বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। কোনো আইনী জটিলতা না থাকলে, তারা উত্তর দিলেই দুই-চারদিনের মধ্যে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, কুসিকে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় একই বছরের ১৭ মে। আইন অনুযায়ী প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর হয় নির্বাচিত করপোরেশনের মেয়াদ। সেই অনুযায়ী এই সিটির মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ১৬ মে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোটগ্রহণ করতে হয়। সেদিক থেকে গত ১৬ নভেম্বর এই সিটি নির্বাচনের সময়গণনা শুরু হয়েছে।
দুটি পৌরসভাকে একীভূত করে ২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠন করা হয়। ওই বছরই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০১৭ সালে এসে এ সিটি পাশ্ববর্তী বেশ কয়েকটি ইউপিকে অন্তর্ভূক্ত করে আয়তন বাড়ানো হয় প্রায় তিনগুণ। এতে দেখা দেয় সীমানা জটিলতা। বর্তমানে এই সিটিতে ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে।
এই সিটি করপোরেশন গঠনের পর থেকে মেয়র পদে রয়েছেন মনিরুল হক সাক্কু। গত নির্বাচনে এই সিটিতে ১০৩টি কেন্দ্রে ছিল আর ভোটার ছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। নিয়োগ পাওয়ার পরদিন তারা শপথ নিয়ে প্রথম অফিস করেন ২৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিনই এর মাঝে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে নতুন কমিশন। এরপর জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, ভোটার দিবস উদযাপন ও নানা আনুষ্ঠানিকতা করেছেন। তবে নতুন কমিশন যোগ দেওয়ার পর কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেনি নতুন ইসি। তার আগেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করার জন্য রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলের মতামত নেওয়ার জন্য ১৩ মার্চ থেকে সংলাপ শুরু করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
বিভি/এইচকে
মন্তব্য করুন: