খাবারের দোকানের বাকবিতণ্ডা রুপ নিলো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে

খাবারের দোকানের কর্মী এবং শিক্ষার্থীর বাকবিতণ্ডার জেরে নিউ মার্কেটে ব্যবসায়ী, দোকানকর্মী ও শিক্ষার্থীদের এই সংঘর্ষ বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ী, পুলিশ এবং শিক্ষার্থী।
নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি শাহীন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, চার নম্বর গেটের কাছে একটি খাবার দোকানে দোকানকর্মীর সাথে কয়েকজন ছাত্রের কথা কাটাকাটি হয়, এরই জেরে শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধ হয়ে হামলা চালায়। রাতে ছাত্ররা অগ্নি সংযোগের চেষ্টা করে, কিন্তু পুলিশের সঠিক সময়ে উপস্থিতির কারনে এমনটি ঘটেনি বলেও দাবি করেন তিনি।
সাখাওয়াত হোসেন নামে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, তিনজন শিক্ষার্থী নিউমার্কেটের একটি দোকানে রাতে খাওয়ার পর যা দাম আসছে তার থেকে কিছু কম দিতে চেয়েছিল। এ সময় বাকবিতন্ডার জেরে দোকানিরা ধারালো ছুরি দিয়ে শিক্ষার্থীদের আক্রমন করে। নিউ মার্কেট জোনের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার শাহেন শাহ গণমাধ্যমকে বলেন, খাবারের দোকানে ‘দাম কম দেওয়া নেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়’।
আরও পড়ুন:
- ছাত্র-ব্যবসায়ী সংঘর্ষে শতকোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা
- ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অবরুদ্ধ, হল না ছাড়ার ঘোষণা দিলেন শিক্ষার্থীরা
- শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ: সুষ্ঠু তদন্তে সমাধান চান লেখক ভট্টাচার্য
নিউ মার্কেট এলাকা ছাত্র ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের আহত হয়ে সাংবাদিক, ছাত্র, ব্যবসায়ীদের অন্তত ৩৫ জন ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসা নিচ্ছেন। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল পৌনে তিনটার দিকে বাংলাভিশনের ঢামেক প্রতিনিধি সোহেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঢামেকে চিকিৎসা নেওয়াদের মধ্যে এরমধ্যে রাহাত হোসেন ও সাদমান সাকিবসহ তিনজন শিক্ষার্থী, চারজন সাংবাদিকও রয়েছেন। এরমধ্যে দুইজন সাংবাদিকের অবস্থা গুরুতর।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে নিউ মার্কেট এলাকার বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ী-কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় হামলার শিকার হন দীপ্ত টিভির রিপোর্টার আসিফ জামান সুমিত। এসময় তাকে রক্ষা করতে গেলে বাংলা ট্রিবিউনের শাহেদ শফিক, এসএ টিভির ক্যামেরা পারসন কবির হোসেন এবং মানবজমিনের শুভ্র দেব ও এনটিভি অনলাইনের মাসুদ রায়হান পলাশও হামলার শিকার হন।
এর আগে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে রাজপথে নেমে আসেন ঢাকা কলেজের শিক্ষকরা। তারা এসে শিক্ষার্থীদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। এমন সময় শিক্ষকদের উপর হামলা করে ব্যবসায়ীরা। ঢাকা কলেজ শিক্ষক নেতা ড. কুদ্দুস শিকদার অভিযোগ করেছেন, দুই পক্ষকে শান্ত করতে ব্যাবসায়ী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন শিক্ষকরা। ব্যবসায়ীরা নেতারা শিক্ষকদের কথা দিয়েছিলেন, তারা একসংঙ্গে মাঠে এসে উভয় পক্ষকে শান্ত করবেন। শিক্ষকরা রাজপথে আসলেও ব্যবসায়ীরা আসেননি।
সরেজমিনে দেখা যায়, যখন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শিক্ষকদের শান্ত করে গণমাধ্যমের সংঙ্গে কথা বলছিলেন, তখনই তাঁদের উপর হামলা চালায় ব্যবসায়ীরা। এরপরই আবারো উত্তেজিত হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক নেতারা অভিযোগ করেছেন, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের কলেজ প্রশাসন থেকে অবহিত করা হয়েছে। তাঁদের ঘটনাস্থলে আসতে বলা হলেও তাঁরা আসছেন না। ড. কুদ্দুস শিকদার জানিয়েছেন, সংঘর্ষে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদেরকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিভি/এসআই
মন্তব্য করুন: