‘লেবাস পরিবর্তন করে শিবিরের ছেলেরা ছাত্র অধিকার পরিষদে যোগ দিয়েছে’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশ পরিষদভুক্ত ১৩টি ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদ নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, তারা ক্রিয়াশীল কোনো ছাত্র সংগঠন নয়। এই সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদী সংগঠন সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথে তাদের সম্পর্ক বজায় রাখছে। শিবিরের কর্মীরাই ভিন্ন লেবাস ধরে তাদের মধ্যে থাকছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে, আমরা চাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রগতিশীল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে তারাই কর্মকান্ড পরিচালনা করবে।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) সকালে মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, ২৪ এবং ২৬ মে ছাত্রদল দিক থেকে একপাক্ষিক সন্ত্রাস করা হয়েছে। ছাত্রলীগ বনাম ছাত্রদল এধরণের ঘটনা নয়। ভর্তি পরীক্ষার দিনটি বিশেষ দিন। অন্যদিনের মতো নয়। একারণে আহ্বান করবো, অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনা যেনো না ঘটে। আমরা ছাত্রলীগ সজাগ থাকবো। সবাই যেন দায়িত্বশীল করে।
এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ছাত্রদলের উপস্থিতি জানান দেয়ার মানে কি সন্ত্রাস? তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলার পরিকল্পনা করছে।
সহ-সভাপতি তিলোত্তমার ভিডিও নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সোদ্দাম বলেন, গণমাধ্যমের কাছে আহ্বান থাকবে তারা যেন সঠিক তথ্য তুলে ধরেন। যখন জীবনের প্রতি হুমকি আসছে। সয়ং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমন করেছে। তাদের বেশিরভাগ নেতাকর্মীদের মাঝে অস্ত্রসস্ত্র এবং লাঠিসোটা ছিলো। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যতটুকু প্রতিরোধ করার ততটুকুই ছাত্রলীগ করেছে। এরবাইরে কোনো ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগ সম্পৃক্ত নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ছাত্রদল প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়েছে। জাতির পিতাকে নিয়ে কুটুক্তি করেছে। এটা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে তাদের ছাত্রলীগের ‘চণ্ডীরূপ’ দেখতে হবে। বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, কেউ হিংসাত্মক আচরণ করলে প্রশাসনের সাহায্যে তাদের নিবৃত করা হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এরআগে লিখিত বক্তব্যে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২১-২২ সেশনের স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় ১২ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এসব কর্মসূচির বিষয়ে সকল ছাত্রসংগঠনের প্রতি একাডেমিক পরিবেশ বজায় রাখার অনুরোধ জানানো হয়। যদি কেউ পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয় ছাত্রলীগ তা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিহত করবেন বলে জানান সঞ্জিব চন্দ্র দাস।
লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, কর্মসূচির অংশ হিসেবে পরীক্ষার্থীদের সাহয্যার্থে তথ্যকেন্দ্র স্থাপন এবং তথ্য প্রদান, ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের মাঝে মাস্ক, কলম ও আনুষঙ্গিক শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হবে এবং পরীক্ষাকেন্দ্র পরিচিতি ও পরীক্ষার্থীদের পৌঁছে দেয়ার জন্য সার্বক্ষণিক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবে ছাত্রলীগের কর্মীরা। অভিভাবক ছাউনির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাথে আগত অভিভাবকদের বিশ্রামের সুব্যবস্থা এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য মোবাইল টয়লেটের ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি আরো জানান, দূর থেকে আগত শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে সুবিধার জন্য থাকবে ‘জয় বাংলা বাইক সার্ভিস’ নামের পরিবহন ব্যবস্থা। কলম ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় আনুষাঙ্গিক বিতরণ এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা করবে তারা। এছাড়াও পরীক্ষার হলে নেয়ার অনুপযোগী শিক্ষার্থীদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিরাপদে রাখা ও তাদের পুনরায় বুঝিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য হুইলচেয়ার ও প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সরবরাহ, অভিভাবকদের বিশ্রাম ও তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য মেডিক্যাল ক্যাম্প এবং একইসাথে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার আগের রাতে ছাত্রলীগের সাহায্যে থাকার ব্যবস্থা করা হবে বলেও সাংবাদিকদের জানান ছাত্রলীগ সভাপতি।
বিভি/রিসি
মন্তব্য করুন: