৬০ ঘণ্টায়ও নেভেনি সীতাকুণ্ডের আগুন

ফাইল ছবি
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন টানা ৬০ ঘণ্টা পেরোলেও নেভানো সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে ঝরে গেছে ফায়ার সার্ভিসের নয় সদস্যসহ ৪৯ তাজা প্রাণ। দগ্ধ ও আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ। সোমবার রাতে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আক্তারুজ্জামান বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাদের নিশ্চিত করেছেন এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কিছু কনটেইনারের ভেতরে এখনো আগুন জ্বলছে। ফলে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার সম্ভাবনা নেই।’
এদিকে, মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের ৫টি বড় ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ৪টি কেমিক্যালযুক্ত কনটেইনার নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে কনটেইনারগুলো সরিয়ে নিলেও পরবর্তী সময়ে বিস্ফোরণের আশঙ্কা রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। মূল আগুন নিয়ন্ত্রণের পরে কেমিক্যালযুক্ত এই কনটেইনার নিয়ে কাজ করবে ফায়ার সার্ভিসের বিশেষজ্ঞ ইউনিট।
এ বিষয়ে বৃহত্তর কুমিল্লা ফায়ার স্টেশনের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘টানা ৬০ ঘণ্টা আমরা কাজ করে চলেছি। এখন যে কনটেইনারগুলো জ্বলছে সেগুলোতে গার্মেন্টসপণ্য রয়েছে বলে নিভছে না। এ কারণে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। তবে আশা করছি, আজকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণ আসবে। আগুন নিভে গেলে সেখানে সরাসরি প্রবেশ করে উদ্ধার অভিযান চালানো হবে। সেখানে যদি কোনো মরদেহ থেকে থাকে তা উদ্ধার করা হবে।’
এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন লাগার পর রাসায়নিকের কনটেইনারে একের পর এক বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে বহু দূর পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। অগ্নিকাণ্ড ও ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জন হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, মৃতের সংখ্যা ৪৬ জন। এ ছাড়া দগ্ধ ও আহত ১৬৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস হোসেন চৌধুরী জানান, নিহতদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিকদের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যও রয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানি কারক সমিতির (বিজিএমই) নেতারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত আমরা ২৮টি পোশাক শিল্প কারখানার কনটেইনার পুড়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এতে ১শ কোটি টাকার রফতানিপণ্য পুড়ে গেছে। এসব কারখানার মধ্যে ১৬টি ঢাকার এবং ১২টি চট্টগ্রামের।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: