নির্বাচন কমিশনকে কানা-বোবা বললেন সুজন সম্পাদক

বদিউল আলম মজুমদার
বেশিরভাগের মতামত উপেক্ষা করে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদের কানা ও বোবা হিসেবে প্রমাণ করেছে নির্বাচন কমিশন। এ অভিযোগ করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে ইভিএম নিয়ে এক পর্যালোচনা সভায় সংগঠনটির সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার দাবি করেন, ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আগামী নির্বাচনে ফলাফল নিয়ে বিপর্যয়ের শংকা তৈরি করলো কমিশন। এতে প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে বলেও মত দেন বদিউল আলম মজুমদার।
তিনি বলেন, দেশের সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যমসহ অধিকাংশ ব্যক্তিবর্গ ইভিএমের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অথচ কারো কথা না শুনে ইভিএমের কারিগরি ত্রুটি না দেখে তিনি ১৫০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা কী উদ্দেশে এমন কাজ করছেন তা আমাদের বোধগম্য নয়।
বদিউল আলম বলেন, ইভিএম একটি দুর্বল যন্ত্র। নির্বাচন কমিশন বলছে ইভিএমে কারচুপির সুযোগ নেই। এটি নির্ভুল প্রমাণের দায়িত্ব কমিশনের। ইভিএমের নিয়ন্ত্রণ বাইরের কারো হাতে না থাকলেও নির্বাচন কমিশন ও কর্তা ব্যক্তিদের হাতে আছে।
তিনি আরও বলেন, নতুন ইভিএম কিনতে হলে অর্ধ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হবে। অন্যদিকে আমরা বর্তমানে চরম সংকটে আছি। সংকট নিরসনে সাত মিলিয়ন ডলার ঋণ নিচ্ছি। এমন অবস্থায় এটি কতটুকু যুক্তিযুক্ত আমার বোধগম্য নয়।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপনে প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ইভিএমের অন্যান্য বিষয়গুলো ডিজিটাল হলেও ফলাফল তৈরি প্রক্রিয়া ডিজিটাল নয়। ম্যানুয়াল হওয়ায় অস্বচ্ছতা ও কারচুপির সুযোগ আছে। কমিশনের ৭০ থেকে ৭৫টি আসনে ইভিএমে নির্বাচন করার সক্ষমতা আছে মাত্র। অর্থনৈতিক এ সংকটে নতুন করে ইভিএম কিনে ডলার খরচ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব দাবি করেন, ইভিএমের বিভিন্ন ধাপে হ্যাকিংসহ অদৃশ্য জালিয়াতির পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে এক প্রতীকের ভোট অন্য প্রতীকেও নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মত দেন তিনি।
তিনি বলেন, নিখুঁত বায়োমেট্রিক ও এনআইডি সমস্যা থাকায় ইভিএম ব্যবহার সঠিক হবে না। মাত্র এক বছরের মধ্যে এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। এ সমস্যা মেশিনের নয় বরং সঠিক ডাটাবেজ সমস্যা। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- সুজন সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন, সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মণ্ডলসহ বিশিষ্টজনরা।
মন্তব্য করুন: