রিজওয়ানার অনুরোধে সোনাদিয়া দ্বীপে হচ্ছে না অর্থনৈতিক অঞ্চল: বেজা

সোনাদিয়া দ্বীপ নিকটবর্তী সমুদ্রে রয়েছে ইরাবতি ডলফিনের বিচরণ। পাশাপাশি এই দ্বীপের সমুদ্র সৈকতেও অনেক প্রাণ-বৈচিত্র্য রয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দ্বীপের এসব প্রাণ-বৈচিত্র্যকে নষ্ট করে সোনাদিয়া দ্বীপে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। শুরু থেকেই যার বিরোধিতা করে আসছিলেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। অবশেষে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার স্বার্থে দ্বীপটিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা)। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের অনুরোধেই তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই তথ্য জানান। শুধু সোনাদিয়া নয়, মীরসরাইয়েও ইকোনমিক জোনের জন্য বনভূমি নষ্ট করা হবে না বলেও জানান তিনি। তার সেই ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী তারা ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'গতকাল আমরা (বেজা) সোনাদিয়া দ্বীপকে পরিবেশ রক্ষার্থে বন অধিদফতরকে ফিরিয়ে দিয়েছি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন আর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে ঠিকই। এজন্যই ইকোনমিক জোনগুলো করা। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি করে নয়। শোনা যায় ২০১৪ সালে সোনাদিয়া দ্বীপের সমুদ্র সৈকতে একসাথে গোলাপী ডলফিন এবং ইরাবতী ডলফিন সাঁতার কাটতো। অথচ তার ১০ বছর পর এগুলোর কোনটিই দেখা যায় না। আমি আগেও বলেছি, দেশে বিশাল বিশাল ১০০টি ইকোনমিক জোনের দরকার নাই। ঠিকভাবে জাস্ট পাঁচটা পরিবেশবান্ধব বা গ্রিন ইকোনমিক জোন করলেই দেশের চেহারা পাল্টে যাবে।
মীরসরাই ন্যাশনাল ইকোনমিক জোনের আগের মাস্টারপ্ল্যান এ সীতাকুণ্ড বনাঞ্চল ছিলো। আমরা প্ল্যান থেকে ওটাকেও বাদ দিয়ে দিচ্ছি। অলরেডি ১৬ হাজার একর জমি আছে মীরসরাইতে। এতটুকু শিল্পায়ন হলেই আড়াই লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। এ ছাড়াও কয়েক হাজার একর আছে মাতারবাড়িতে। তাই বন কেটে ফ্যাক্টরি করার আমি প্রয়োজন দেখি না। মীরসরাইতে আমরা যেই জমি অলরেডী অধিগ্রহণ করেছি সেখানে কিছু অংশে আগামী ১০ বছরে শিল্পায়নের প্ল্যান নাই। এই অব্যবহৃত জমিতে আমরা পিপিপি মডেলে ৩০০ মেগাওয়াটের সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করেছি।
শিল্পায়ন হবে, কিন্তু পরিবেশ ধ্বংস করে নয়। আমাদের নেক্সট জেনারেশনকে একটা সবুজ দেশ দিয়ে যেতে চাই আমরা।
এত স্নিগ্ধ নদী কাহার, কোথায় এমন ধুম্র পাহাড়
কোথায় এমন হরিত ক্ষেত্র আকাশ তলে মেশে
এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায়
বাতাস কাহার দেশে।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
ও সে সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি।
পুনশ্চ: রেজওয়ানা আপাকে অনেক ধন্যবাদ। পরিবেশের পক্ষে একদম আপোষহীন স্ট্যান্ড নেবার জন্যে।'
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: