• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

‘সমুদ্র অর্থনীতি অর্জনে সমুদ্র স্বাক্ষরতার বিকল্প নেই’

প্রকাশিত: ১৯:৪৮, ২৩ এপ্রিল ২০২২

আপডেট: ২০:১০, ২৩ এপ্রিল ২০২২

ফন্ট সাইজ
‘সমুদ্র অর্থনীতি অর্জনে সমুদ্র স্বাক্ষরতার বিকল্প নেই’

প্রতীকী ছবি

আমাদের প্রয়োজনীয় ৮০ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য সাগর, নদী থেকে সংগ্রহ করা হয়। আর প্রাণিজগতের ৯০ শতাংশই সামুদ্রিক। আমরা অক্সিজেন গ্রহণ করি তার ৫০ শতাংশই সরবরাহ করে সমুদ্র। অথচ সামুদ্রিকজ্ঞানের অভাবে নির্বিচারে এখনকার প্রাণিসহ নানা প্রজাতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে। শুধু একটি চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করতে গিয়ে ১৬০০ অন্যান্য প্রাণী ধ্বংস করা হচ্ছে। এ জন্য সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে নিয়োজিতদের সঠিক প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে হবে সমুদ্রজ্ঞান। এজন্য সমুদ্র স্বাক্ষরতা কর্মসূচির বিকল্প নেই।

শনিবার মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস ও দৈনিক আনন্দবাজারের উদ্যোগে আয়োজিত “পরিবেশদূষণে ধ্বংসের পথে প্রাণিজগত” শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মূলপ্রবন্ধে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা বলেন, শুধু শব্দের কারণেই অসংখ্য প্রাণী পৃথিবী থেকে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। একটি কাকের আওয়াজ আমাদের কাছে কর্কশ শুনালেও সেটি কিন্তু কানের জন্য সমস্যা তৈরি করে না। অর্থাৎ এটি সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক সহনীয় পর্যায়ে থাকে। তবে আমরা নানা ধরনের হর্ন বা মিল-কারখানায় যে শব্দ তৈরি করছি তা কিন্তু ক্ষতিকর। এজন্য শিল্প-কারখানার শব্দ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা ছাড়া আলোক দূষণেও প্রাণি মারা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন:

সভাপ্রধানের বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন মুন্না বলেন, দেশের সমান একটি সমুদ্র থাকলেও আমাদের দেশে আলাদা সমুদ্র মন্ত্রণালয় নেই। এজন্য দেশে একটি সমুদ্র বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে পাঠ্যসূচিতে সমুদ্র, নদীবিষয়ক সিলেবাস অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।

যারা সমুদ্রবিষয়ে পড়ালেখা করে তাদের জন্য এখনো তেমন কর্মক্ষেত্র তৈরি হয়নি। ফলে দেশের ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করানো হলেও তারা ভিন্ন দিকের কর্মসংস্থানে চলে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ড. মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন মুন্না বলেন, আমাদের প্রয়োজনীয় ৮০ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য সাগর, নদী থেকে সংগ্রহ করা হয়। আর প্রাণিজগতের ৯০ শতাংশই সামুদ্রিক। আমরা অক্সিজেন গ্রহণ করি তার ৫০ শতাংশই সরবরাহ করে সমুদ্র। অথচ সামুদ্রিকজ্ঞানের অভাবে নির্বিচারে এখনকার প্রাণিসহ নানা প্রজাতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে। শুধু একটি চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করতে গিয়ে ১৬০০ অন্যান্য প্রাণী ধ্বংস করা হচ্ছে। এ জন্য সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে নিয়োজিতদের সঠিক প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, সমুদ্রকে রক্ষা করতে ২০২১ হতে ২০৩০ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ সমুদ্র দশক ঘোষণা করেছে। যাতে সামুদ্রিক বিষয়ে জ্ঞানার্জন, সম্পদরক্ষা, দায়িত্ব গঠনসহ যাবতীয় কাজে মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়। কেননা আমাদের যাতায়াতের ৯০ শতাংশ সমুদ্রকেন্দ্রিক, ওষুধ, খাদ্যদ্রব্যসহ জীবনধারণের নানা বিষয় বেশিরভাগই সমুদ্র থেকে আহরিত হয়। জলবায়ুর পরিবর্তনে ৯০ শতাংশ অবদানই সমুদ্রের। বিশ্বে বসবাসের ৯৬ শতাংশজুড়েই সমুদ্র।

পরিবেশদূষণে সমুদ্রের অক্সিজেন হার কমে যাচ্ছে। তাতে সবচেয়ে বড় প্রাণিজগত কোরাল ২০৩০ সালে ৯০ ধ্বংস হয়ে যাবে। অর্থাৎ কোরাল জাতীয় প্রাণিগুলোর ৪ ভাগের ৩ ভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

সমুদ্র বিষয়ক পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ আওয়ার সি’র মহাসচিব মুহা. আনোয়ারুল হক বলেন, সমুদ্রদূষণে প্রতিকার প্রয়োজন। সমুদ্রকে সামনে নিয়ে যেসব প্রকল্প রাষ্ট্রীয়ভাবে করা হচ্ছে তা যথাযথ হচ্ছে না। পরিবেশ-প্রতিবেশকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকল্প নির্মাণ করতে হবে। সমুদ্র দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও সমুদ্র সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে সরকারি উদ্যোগে সমুদ্র স্বাক্ষরতা কর্মসূচি পালন করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ওয়ার্ক ফর এ ব্যাটার বাংলাদেশ-(ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, প্লাস্টিকসহ নানা কারণে নদীদূষণের শিকার হচ্ছে। এতে করে নদীকেন্দ্রীক প্রাণিজগত বিলুপ্ত হচ্ছে। মাছ, পাখি, নদীমাতৃক প্রাণিজগত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাতে আমাদের জীবনধারা হুমকির মুখে পড়েছে।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাশ্মির রেজা বলেন, হাওরের মাছ শিকার করা হচ্ছে সেচে, বিষপ্রয়োগ করে। নির্বিচারে পাখী হত্যা করা হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। আমাদের এসব বিষয় থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

সংগঠনির আহ্বায়ক ফারুক আহমাদ আরিফ বলেন, নৌ, পানি, প্রাণী ও মৎস্য, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে সমুদ্রবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে ফলদবৃক্ষ রোপন রাষ্ট্রীয়ভাবেই বাড়াতে হবে। 

তিনি বলেন, আমরা দেখা মতে, গত ২০ বছরে পশু, পাখি, মাছ, বৃক্ষ ও জলজসহ অন্যান্য শতাধিক প্রাণী ধ্বংস হয়ে গেছে মানুষের পরিবেশদূষণের কারণে।

মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি ইহসানুল হক জসিম বলেন, আমাদের জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন নামে যে প্রতিষ্ঠানটি তৈরি হয়েছে সেটিও হাইকোর্টের নির্দেশে করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিকে শক্তিশালী করা হচ্ছে না। ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে না। আইনি মারপ্যাচে কাজ করতে পারছে না।

রঞ্জিত বর্মন বলেন, সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কোন প্রতিকার নেয়া হচ্ছে না। লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে চিংড়িচাষের কারণে। মানুষের খাদ্যসামগ্রিতে এটি বড় ধরনের হুমকি তৈরি করছে। অনেকে এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছে।

এমডব্লিউইআরের যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাড. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী উপস্থাপনাকালে বলেন, সমুদ্রের নীরবতা লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ চলাচলের কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আধুনিকায়ন যান নেই। এতে প্রাণিকূল বিলুপ্ত হচ্ছে।

বিভি/কেএস

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2