• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

মোবাইল মানির দুই দশক 

প্রকাশিত: ১৮:০৭, ৪ জুন ২০২৪

ফন্ট সাইজ
মোবাইল মানির দুই দশক 

আমরা এখন বিকাশ-নগদসহ নানা ধরনের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা দৈনন্দিন জীবনে অনেক ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আজ থেকে ২০ বছর আগে বাংলাদেশে কোথায়, কিভাবে এই সেবাগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল তা নিয়েই এই লেখা। 

তখন স্মার্ট ফোন বা মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যাপকতা ছিল না। ওয়াপ (WAP) দিয়ে অল্প কিছু হ্যান্ডসেটে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার হতো। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে ছিল শুধু ভয়েস এবং এসএমএস। উন্নত বিশ্বে পুরোদমে ইন্টারনেট ব্যাংকিং চালু হয়েছে। বাংলাদেশে তখন কেবলমাত্র দুই একটা ব্যাংক সীমিত আকারে ইন্টারনেট ব্যাংকিং চালু করেছে।

ফিনটেক( FinTech), ডিজিটাল ব্যাংক, সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (CBDC), ক্যাশলেস সোসাইটি, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস), ই-ওয়ালেট, এম-ওয়ালেট, ডিজিটাল ওয়ালেট, মোবাইল ব্যাংকিং, মোবাইল মানি, মোবাইল পেমেন্ট ইত্যাদি এখন আমরা হরমামেশাই শুনে থাকি। আমাদের দেশে ২০১০ সাল থেকে বিগত প্রায় ১৫ বছর যাবত এই খাতের কার্যক্রম ও উন্নয়ন চোখে পড়ে। 

২০০৬ সালে বৃটিশ ফরেন অফিসের শেভেনিং (Chevening) স্কলারশিপ নিয়ে ইউকে থেকে এক বছরের একটা মাস্টার্স ডিগ্রী করেছিলাম। ফান্ডিং দিয়েছিল ভোডাফোন গ্রুপ ফাউন্ডেশন(VGF)। মাস্টার্স কোর্সের নাম ছিল মাস্টার্স অব কমিউনিকেশন ম্যানেজমেন্ট ( MCM)। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে অবস্থিত University of Strathclyde এর Business school এ সেই কোর্স করেছিলাম। শুরুর ৯ মাসে  টেলিকম পলিসি এন্ড রেগুলেশন, টেলিকম ফাইন্যান্স, টেলিকম ল, ইন্টারন্যাশনাল টেলিকম ও ইন্টারনেট ইন্টারকানেকশন পলিসি, আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট( ICT4D), স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল HRM, ইত্যাদি বিষয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা হলো। ডিগ্রী শেষ করার শর্ত অনুযায়ী কোর্স শেষে তিনমাস ডিসারটেশন (Dissertation) করতে হয়েছিল। সবাইকে যার যার সুপারভাইজারের কাছে ডিসারটেশন প্রোপোজাল পাঠাতে বলা হলো। আমি প্রপোজাল দিয়েছিলাম  “Prospect of Mobile Banking in Bangladesh” এবং যা অনুমোদিত হয়েছিল।

বৃটিশ উন্নয়ন সংস্থা DFID উন্নয়নশীল দেশের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং নিয়ে ২০০৬ সালে একটা ধারনাপত্র পত্র প্রকাশ করেছিল। তারা বিভিন্ন মডেলের প্রস্তাবনা দিয়েছিল যেমন, ব্যাংক-লেড , টেলকো-লেড, নন-ব্যাংক লেড, জয়েন্ট-ভেন্চার  ইত্যাদি।বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এবং মোবাইল খাতের বিভিন্ন ডাটা সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষন করা। ব্যাংক ও মোবাইল খাতের লোকজনের সাক্ষাৎকার নেয়া। বাংলাদেশের একসেস টু ফাইন্যান্সের তখনকার অবস্থা কেমন ছিল তার বর্ননা। ব্রান্চ এবং এটিএম ব্যাংকিং পেনিট্রেশন এবং খরচের ধারনা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ। মোবাইল অপারেটর ইলেকট্রোনিক্স  প্রি-পেইড প্লাটফরম এর সুবিধা। ফিলিপাইন (স্মার্টমানি,গ্লোবক্যাশ) এবং কেনিয়ার (এমপেসা) সহ বেশকিছু কেস স্টাডি সংযুক্ত করা হয়েছিল।মোবাইল ব্যাংকিং এর প্রচলিত বিভিন্ন টেকনোলজি নিয়ে আলোচনা। 

পরিশেষে সুপারিশ করা হয় বাংলাদেশে কোন মডেল (ব্যাংক-টেলকো জয়েন্ট ভেন্চার) প্রযোজ্য হতে পারে এবং কোন কোন খাতে মোবাইল ব্যাংকিং প্রয়োগ করা যেতে পারে। তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষন করে প্রায় একশো পাতার একটা ডিসারটেশন লেখা হয়েছিল। 

২০০৭ সালের শুরুতে দেশে এসে কয়েকজন ব্যাংকারের সাথে আলোচনা শুরু করলাম এবং আমার ডিসারটেশনেপ  কপি শেয়ার করলাম। এক মোবাইল অপারেটরের হেড অব সেলস এন্ড মার্কেটিং এর সাথে কথা বললাম। কিন্তু কেউ বিষয়টা তেমন সিরিয়াসলি নিলো না। কোথায় বলতে হবে হয়তো জানতাম না।২০০৮ সালের শুরুতে টেলিকম সেক্টরেই নতুন ক্যারিয়ার শুরু করলাম এবং আস্তে আস্তে ডিবিবিএল মোবাইল ব্যাংকিং(রকেট) ও বিকাশের বিকাশ দেখতে থাকলাম। আমার সাবজেক্ট অব ইন্টারেস্ট হওয়ায় পত্রিকার রিপোর্ট গুলো চোখে পড়ে এবং এই সেক্টরের সব তথ্য রাখার চেষ্টা করি।পরে জেনেছি বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা জনাব কামাল কাদির ২০০৭ সালে আফ্রিকাতে গিয়েছিলেন মোবাইল মানি নিয়ে স্টাডি করতে।আমার অজানা হয়তো আরও অনেকেই সেই সময় দেশে মোবাইল মানি নিয়ে কাজ করেছেন। 

অল্প কিছুদিন আগে জানতে পারি অনেক অনেক আগে আমার এক বন্ধু ২০০৪ সালে গ্রামীনফোনে চাকরী করার সময় “Mobile Money” বিজনেস আইডিয়ার জন্য সিইও, টেলিনর এবং পরবর্তীতে চেয়ারম্যান, GSMA জন-ফ্রেডরিক বাকসাসের কাছে টেলিনর হেডকোয়ার্টার অজলো থেকে পুরস্কার জিতে নিয়েছিল। সেই সময়ই বাংলাদেশে মোবাইল মানির ধারনার সূত্রপাত হয়। আজকে সেই গল্পটা বলার চেষ্টা করবো। 

বন্ধুটি আমার সাথে ইইই বিভাগে বুয়েটে পড়েছে। তৃতীয়বর্ষে পড়ার সময় ১৯৯৩ সালে ঢাকা শহরের রিক্সাওয়ালাদের কিভাবে ছোট ছোট সঞ্চয়ের মাধ্যমে অটো-রিক্সার মালিক করা যায় তা নিয়ে গ্রামীনব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসকে “রিক্সা থেকে অটো-রিক্সা” শিরোনামে একটা প্রস্তাবনা পাঠিয়েছিল। ডঃ ইউনূস উত্তরে লিখেছিলেন গ্রামীনব্যাংক যেহেতু শহরে কোন কর্মকান্ড পরিচালনা করে না তাই গ্রামীনব্যাংকে সেই প্রস্তাব সংযুক্ত  করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়াও সে পরবর্তীতে “Greenhouse Care Economics” , ধারনার সূচনা করে। ডঃ ইউনূসকে পাঠানো প্রস্তাবনার তাত্ত্বিক দিক নিয়ে এইখানে আলোচনা করা হয় যা ২০০১ সালে IBA Journal -এ প্রকাশ পায়। তারপর সে “Man’s Share of Machine” এর উপর একটা পান্ডুলিপি লিখেছিল যার কপি ডঃ ইউনূস, সিপিডিসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে বিতরন করে।  

বুয়েট থেকে পাশ করার পর আমরা দুজনে এক সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ-তে ফুল টাইম এমবিএ শুরু করি।আমার বন্ধুটি পিডিবি, চিটাগাং অফিসের চাকরী ছেড়ে আইএফআইসি ব্যাংকে প্রবেশনারী অফিসার হিসাবে যোগ দেয় এবং পরে  ইভিনিং শিফটে এমবিএ করে।যদিও সেই চাকরী বেশীদিন করেনি। তবে ব্যাংকিং ট্রান্জাকশন কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে তার সম্যক ধারনা হয়।

এরপর ১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি গ্রামীনফোনের বিলিং ডিপার্টমেন্টে যোগদান করেছিল। তখন আমরা আইবিএ হোস্টেলে একসাথে থাকতাম। সেই সময় গ্রামীনফোনে সব মোবাইল ফোনের পোস্ট-পেইড বিল ছিল এবং গ্রাহকের কাছে হার্ড কপি বিল যেত। বিল প্রিন্ট করে স্ট্যাপল করে গ্রাহককে পাঠানো হতো। এই কাজে বন্ধুটি খুবই হতাশ ছিল। সেই সময় গ্রামীনফোনের মাত্র ২৮ হাজার গ্রাহক ছিল। কিভাবে গ্রামীনফোনের মার্কেট সম্প্রসারণ করা যায়, নতুন নতুন আউটলেট খোলা যায় এইগুলো নিয়ে বন্ধুটি চিন্তাভাবনা করতো এবং টপ ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলতো। বন্ধুর লিংক্ডইন এ গেলে এ সংক্রান্ত পোস্ট দেখা যাবে। 

পরবর্তীতে অবশ্য সে কোর টেকনিক্যাল টিমে যোগ দিয়েছিল। সেখানে তার রেগুলার ইন্জিনিয়ারিং কাজের পাশাপাশি, সে ভাবা শুরু করলো কিভাবে মোবাইল ফোন দিয়ে ইলেকট্রনিক্স  ট্রানজাকশন লেয়ার তৈরী করে সাধারন মানুষকে ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

সুযোগ আসে যখন ২০০৪ সালে টেলিনর গ্রুপ International Business Idea SEED 2004 প্রতিযোগীতার আয়োজন করেছিল। টেলিনরের বিভিন্ন দেশের অপারেশন থেকে নতুন ব্যবসায়িক আইডিয়া নিয়ে প্রতিযোগীতা হয়েছিল। গ্রামীনফোনের বিভিন্ন বিভাগের টিম নিয়ে নতুন নতুন বিজনেজ আইডিয়া উপস্থাপন করা হলো। প্রথম টিম টেলিনর হেড অফিসে মূল প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করার কথা। আমার বন্ধুটি একাই একটা আইডিয়া নিয়ে হাজির হলো। 

আইডিয়াটা ছিল “Mobile Money Management (MMM)”। তার এই প্রস্তাবনায় ছিল MMM provides freedom to the operators to create services related to money as long as money remains in the electronic transaction layer ( যেমনটি ছিল)। 

সেই প্রতিযোগীতায় আমার বন্ধুটি হলো দ্বিতীয়। তার আইডিয়া নিয়ে সে এত বেশী কনফিডেন্ট ছিল যে টেলিনর হেড অফিসে সে মেইল করে অনুরোধ করেছিল সে দ্বিতীয় হলেও তাকে যেন অসলোতে আমন্ত্রন জানানো হয়।

যাইহোক বন্ধুর মন খুব খারাপ হয়েছিল। তার বিশ্বাস ছিল প্রতিযোগীতায় সে প্রথম হবে। তারপর বন্ধুটি “Engineering Management” বিষয়ে জার্মানিতে মাস্টার্স করতে চলে গেল। যদিও গ্রামীনফোন থেকে এক মাসের ছুটি নিয়ে পড়তে গিয়েছিল।

জার্মানি যাওয়ার কয়েকদিনের পর ২০০৪ এর অক্টোবরে হঠাৎ সে গ্রামীনফোন থেকে ফোন পেল অজলো যাবার জন্য। সে ভেবেছিল তার মেইলের কারনে তাকে ডাকা হয়েছে । পরে জেনেছে, টেলিনরের কোন এক দেশের অপারেশন থেকে একটা টিম আসেনি সেই জন্য শেষ মুহূর্তে গ্রামীন ফোনের দ্বিতীয়কে ডাকা হয়েছিল।

সেই সময় তার কোন প্রস্তুতি ছিল না। জার্মানির মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা তখনও হয়নি। তার নিজস্ব ল্যাপটপ, কম্পিউটার কিছুই নাই। সে টেলিনরকে জানালো অজলোতে তাকে একটা কম্পিউটারের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তখন জার্মানিতে সে একদম নতুন। ভাষা জানে না, পথঘাট ঠিকমত চেনে না। তার ছোট শহর থেকে রাত বিরাতে ট্রেন বাসে করে বার্লিন যেয়ে প্লেন ধরতে হবে । বন্ধুর লিংক্ড ইনে অতিসম্প্রতি এই ভ্রমন নিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছে। 

বাংলাদেশের প্রথম হওয়া টিমও পৌছে গেল। টেলিনর বোর্ডের সামনে প্রেজেন্টেশন দিতে হবে। সুটেড-বুডেট হওয়া দরকার। কিন্তু সাথে কিছু ছিল না।বাংলাদেশ টিম বাড়ি থেকে তার স্যুট নিয়ে গিয়েছিল বলে রক্ষা।

টেলিনরের সবগুলো বিজনেস থেকে মোট ২৭০টা নতুন ব্যাবসায়িক আইডিয়া জমা পড়েছিল। শুধুমাত্র গ্রামীনফোন থেকেই ৪৪ টা আইডিয়া গিয়েছিল। অবশেষে টেলিনর বোর্ডের সামনে সেই ঐতিহাসিক প্রেজেন্টেশন দেয়া হলো। প্রেজেন্টেশন শেষ করে সারাদিন অজলোতে ট্যুর হলো। রাতে টেলিনর হেড অফিসে গালা ডিনারসহ প্রতিযোগীতার ফল ঘোষনা করা হলো। সেই International SEED-2004 প্রতিযোগীতায় টেলিনরের সকল অপারেশনের মধ্যে  আমার বন্ধুর “Mobile Money Management” এর আইডিয়া দ্বিতীয় স্থান দখল করলো। অন্য এক আইডিয়া নিয়ে টেলিনর নরওয়ে টিম প্রথম হলো। 

প্রশ্ন-উত্তর পর্বে টেলিনরের একজন বোর্ড সদস্য প্রশ্ন করেছিল, “বাংলাদেশ সরকারের ফাইন্যান্সিয়াল রেগুলেটর কি মোবাইল অপারেটরদেরকে এই ফাইন্যান্সিয়াল লাইসেন্স দিবে?” হয়তো তখন থেকেই তার একটা সন্দেহ ছিল। আমার বন্ধু উত্তর দিয়েছিল “এই আইডিয়া প্রযুক্তি নির্ভর যা আগে কখনও ছিল না, এই সেবা দিয়ে যদি প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরীব জনগোষ্ঠীকে টাকা পাঠানোসহ ব্যাংকিং সেবা দেয়া যায় তবে কেন দিবে না।” 

কিছুদিন পর সে জার্মানি থেকে মাস্টার্সে ইস্তফা দিয়ে দেশে ফিরে আবার গ্রামীনফোনে যোগ দেয়। কিন্তু কোন এক কারনে ২০০৫ এর জানুয়ারীতে গ্রামীনফোন ছেড়ে মটোরোলা এবং পরে এরিকসনে কিছুদিন কাজ করে। পাশাপাশি মোবাইল মানি ম্যানেজমেন্ট বিজনেস আইডিয়া বাস্তবায়নের জন্য টেলিনরসহ বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করতে থাকে।

সে টেলিনরকে অনুরোধ করে আন্তর্জাতিক ভাবে প্রস্তাবিত বিজনেস মডেলের পেটেন্ট করতে। টেলিনর কোন আগ্রহ না দেখালে সে নিজেই ২০০৫ সালে পেটেন্ট করার জন্য বাংলাদেশ পেটেন্ট ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে বিজনেস মডেলসহ আবেদন জমা দিয়েছিল। বিদেশে থাকার সময় পেটেন্ট অফিসে দেখা করতে না পারায় আবেদনটি ফেরত আসে। 
এ দিকে ২০০৬ সালে  টেলিনর গ্রুপ সেই আইডিয়া নিয়ে গ্রামীনফোনে একটা ফিজিবিলিটি স্টাডি এবং পিওসি করে। গ্রামীনফোন একটা টিম দীর্ঘ দিন বাংলাদেশের ফাইন্যান্সিয়াল রেগুলেটরের সাথে কাজ করেছে। কিন্তু অবশেষে তাদেরকে কোন অনুমোদন দেয়া হয়নি। ফলে,২০০৬ সালে গ্রামীনফোন মূল আইডিয়া থেকে একটা ছোট অংশ “বিল-পে” সেবা  চালু করে। একই বছর থেকে “ Mobile Money” শব্দটাও প্রথম ব্যবহার শুরু হয় এবং GSMA স্বীকৃতি দেয়। ২০০৮ সালের মে ১৪-১৫ GSMA মিশরের কায়রোতে প্রথম মোবাইল মানি সামিট আয়োজন করে। (Developing Mobile Money Ecosystem) https://www.hks.harvard.edu/sites/default/files/centers/mrcbg/programs/cri/files/report_30_MOBILEMONEY.pdf
অন্যদিকে Alliance for Financial Inclusion report(ai (afi_casestudy_mpesa_en.pdf(afi-global.org)) অনুযায়ী ২০০৫ সালে Safaricom  “The Kenyan M-Pesa” মোবাইল টেলিফোন ব্যাংকিং সেবা ধারণাপত্র প্রকাশ করে কিন্তু ২০০৭ সালে প্রথম চালু করে। সে দিক থেকে গ্রামীনফোন Safaricom এর এক বছর আগেই বিল-পে শুরু করেছিল। 

অবশেষে টেলিনর পাকিস্তান ২০০৯ সালে ইজিপয়সা (EasyPaisa) নামে এই সেবা চালু করে। GSM Mobile Money for Unbanked reports “In 2007, Telenor Group launched financial services through its company Grameenphone in Bangladesh, sparking excitement about the potential of mobile money.” জিএসএম এর রিপোর্টে ইজিপয়সার  Over the Counter (OTC) মডেলকে বর্তমান মোবাইলমানি ট্রান্সফারের ডিফ্যাক্টো বলে উল্লেখ করা হয়।পরবর্তীতে টেলিনর তাদের সবগুলো বিজনেসে এই সেবা চালু করার চেষ্টা করেছে। 

বাংলাদেশ সরকার ২০১১ সালে যখন MFS (Mobile Financial Service) লাইসেন্স গাইডলাইন পাবলিশ করে তখন দেখা যায় বাংলাদেশ সরকার ব্যাংক-লেড মডেল গ্রহন করেছে। বাংলাদেশে মোবাইল অপারেটর এসএমএস, ইউএসএসডি এবং ইন্টারনেট দেয়া ছাড়া মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে আর তেমন কোন ভূমিকা নাই। সেই কারনেই ডিবিবিএল মোবাইল ব্যাংকিং (রকেট), ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ, পোষ্ট অফিসের নগদ, ইউসিবিএল এর উপায়  ইত্যাদি দেখতে পাই।

ইতোমধ্যে আমার বন্ধুর কানাডার ইমিগ্রেশন হয়ে যায়। ২০০৭ সালে সপরিবারে কানাডা চলে যায়। কানাডার একটা নামকরা মোবাইল অপারেটরে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে চাকরী করার পাশাপাশি সে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশুনা এবং গবেষনা চালিয়ে যায়। অর্থনীতি সংক্রান্ত তার কিছু বই এবং জার্নাল পাবলিকেশন আছে। এমনকি তার একটা বই MIT Dewey লাইব্রেরীতেও স্থান পায়। বন্ধুর নাম মনোয়ারুজ্জামান (বাপি)

লেখক:
মোঃ হাসিবুর রশিদ 
পরিচালক, নভোটেল লিমিটেড 

 

বিভি/ এসআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2