• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে যিনি প্রথম ছাত্রী

প্রকাশিত: ০৭:১০, ২১ অক্টোবর ২০২৪

আপডেট: ০৭:১১, ২১ অক্টোবর ২০২৪

ফন্ট সাইজ
প্রাচ্যের অক্সফোর্ডে যিনি প্রথম ছাত্রী

লীলা নাগ (ফাইল ছবি)

লীলা নাগ ছিলেন একজন বাঙালি সাংবাদিক, জনহিতৈষী এবং রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় ব্যক্তি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রী ছিলেন। ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সহকারী ছিলেন। লীলা নাগ আসামের গোয়ালপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা গিরীশচন্দ্র নাগ অবসর প্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। মাতা ছিলেন কুঞ্জলতা দেবী চৌধুরী। তার পিতৃ-পরিবার ছিল তৎকালীন সিলেটের অন্যতম সংস্কৃতমনা ও শিক্ষিত একটি পরিবার। লীলা নাগ ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মে তারিখে বিপ্লবী অনিল রায়কে বিবাহ করেন। পরবর্তীতে তিনি লীলা রায় নামে পরিচিত হন।

লীলা নাগের শিক্ষা জীবন শুরু হয় ঢাকার ইডেন স্কুলে। ১৯২১ সালে তিনি কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে বি.এ. পাশ করেন। পরীক্ষায় তিনি মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং পদ্মাবতী স্বর্ণ পদক লাভ করেন। ১৯২১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিষয়ে এমএ ভর্তি হন। ১৯২৩ সালে তিনি দ্বিতীয় বিভাগে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনিই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এমএ ডিগ্রিধারী। তখনকার পরিবেশে সহশিক্ষার কোনও ব্যবস্থা ছিল না বলে লীলা রায়ের মেধা ও আকাঙ্ক্ষা বিচার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর ড. হার্টস তাকে পড়ার বিশেষ অনুমতি প্রদান করেন।

বাঙালি নারীদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ঢাকার আরমানীটোলা বালিকা বিদ্যালয়, কামরুন্নেসা গার্লস হাই স্কুল এবং শেরে বাংলানগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (তৎকালীন নারীশিক্ষা মন্দির) প্রতিষ্ঠা করেন। ভারত বিভাগের পর লীলা নাগ কলকাতায় চলে যান এবং সেখানেও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

লীলা রায় ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন নেত্রী ছিলেন। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে ‘দীপালী ছাত্রী সংঘ’ নামে ছাত্রী সংগঠন গড়ে ভারতে প্রথম তার মাধ্যমে ছাত্রীদের মধ্যে রাজনীতি চর্চা শুরু করেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে মহিলাদের আবাস ‘ছাত্রীভবন’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনের সময় তার উপর নারী আন্দোলনের ইতিহাস রচনার দায়িত্ব অর্পিত হয়। ফরোয়ার্ড ব্লক গঠিত হলে তিনি এই সংগঠনে আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারণ আন্দোলনে কারারুদ্ধ হন। কারামুক্তির পর সুভাষচন্দ্রের নির্দেশে ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ সাপ্তাহিকের সম্পাদনার ভার গ্রহণ করেন। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে নেতাজীর অন্তর্ধানের পর তিনি ও তার স্বামী অনিল রায় উত্তর ভারতে ফরওয়ার্ড ব্লক সংগঠনের দায়িত্ব নেন। তিনি মহিলা সমাজের মুখপত্র হিসেবে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে “জয়শ্রী” নামে একটি মাসিক পত্রিকা বের করেন। লীলা রায় ছবি আঁকতেন এবং গান ও সেতার বাজাতে জানতেন। দেশভাগের দাঙার সময় তিনি নোয়াখালীতে গান্ধীজীর সাথে দেখা করেন। তিনি দীপালী সংঘ নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

১৯৭০ সালের ১১ জুন ভারতে এই মহীয়সী নারীর জীবনাবসান ঘটে।

বিভি/পিএইচ

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2