• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

কষ্ট পেলে গাছও চিৎকার করে সাহায্য চায়, যে কারনে আমরা শুনতে পাইনা

প্রকাশিত: ১৭:২৯, ৩১ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ১৭:৩০, ৩১ মার্চ ২০২৩

ফন্ট সাইজ
কষ্ট পেলে গাছও চিৎকার করে সাহায্য চায়, যে কারনে আমরা শুনতে পাইনা

ছবি: আজতাক.আইইন

মানুষের মতোই গাছপালারও প্রাণ আছে, আছে অনুভূতি শক্তিও। আজ থেকে ১২২ বছর আগে ১৯০১ সালে বাঙালি বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুই প্রথম গোটা বিশ্বকে জানিয়েছিলেন। বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে তাঁর এই তত্ত্ব সে সময় ঝড় তুলেছিল। তারই আবিষ্কৃত এসকোনোগ্রাফ যন্ত্রের মাধ্যমেই গাছপালারও যে প্রাণ আছে, তা বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন জগদীশ চন্দ্র বসু। বাঙালি বিজ্ঞানীর এই আবিষ্কারের স্মৃতি ১২২ বছর ফের তাজা হয়ে গেল সাম্প্রতিক একটি গবেষণার রিপোর্টে।

আপনি যদি বাগান করার বিষয়ে শৌখিন হন এবং প্রচুর গাছপালা বাগানে রোপণ করেন তবে এই প্রতিবেদনটি আপনার পড়া উচিত। জলের অভাবে বা প্রবল সূর্যের তেজে গাছপালা শুকিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতে অতিস্বনক শব্দ (ultrasonic sound) করে। এটি এক ধরনের চিৎকার, যা একজন আহত বা সমস্যায় পড়া ব্যক্তির আর্তনাদ করার মতোই ঘটনা। বৃহস্পতিবার সায়েন্টিফিক জার্নাল 'সেল'-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় এমনটাই দাবি করা হয়েছে।

প্রচণ্ড কষ্টে গাছপালার করা শব্দ শিরোনামের একটি গবেষণায় বলা হয়েছিল যে, সব গাছপালাই বিভিন্ন ধরনের শব্দ করে। এই শব্দগুলি বোঝার মাধ্যমে জানা যাবে গাছটি কোন অবস্থায় আছে, ভাল আছে নাকি কষ্টে আছে আর ঠিক কী বোঝাতে চাইছে। যদিও এতদিন গাছপালাকে নীরব প্রাণ বলেই মনে করা হতো। কিন্তু এখন এই গবেষণার পরে, একটি নতুন ধারণা সামনে এসেছে, যা উদ্ভিদজগতকে আরও ভাল করে বুঝতে সাহায্য করবে।

যেভাবে গবেষণা করা হয়েছে:

গবেষণার জন্য গ্রিনহাউসে টমেটো এবং তামাক গাছ লাগানো হয়েছিল। একাধিক গাছপালা এখানে নানা ধরনের পরিচর্যা পেয়েছে। কোনও কোনও গাছ জল পেয়েছে, উর্বর মাটি আর বাড়তি যত্ন পেয়েছে। পাশাপাশি, কিছু গাছপালায় জল দেওয়া হয়নি এবং গাছের গোড়ার মাটি খোড়ার সময় গাছের পাতায় আঘাত করা হয়। এই ভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের পরে এই গাছগুলিতে মাটিও দেওয়া হয়েছিল। 

এমনই আরও বেশ কয়েক ধাপ পেরিয়ে এটি নিশ্চিত করা হয়েছিল যে, ক্ষীণ যে শব্দ শোনা গেছে তা মাটিতে থাকা কোনও প্রাণীর নয়। শব্দটি ধরতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) সাহায্য নেওয়া হয়েছে।

The Sound Of Plants: সাউন্ড অব প্লানেট 

গবেষণায় দেখা গেছে যে, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে, গাছপালা নানা ধরনের শব্দ করে। ওই শব্দগুলি খুশিতে উল্লাস বা যন্ত্রণায় চিৎকার করার মতো মনে হতে পারে। একটি উদ্ভিদ প্রতি এক ঘন্টায় গড়ে একবার করে এমন শব্দ করে। পাশাপাশি, জল-রোদের অভাবে থাকা বা প্রচণ্ড তাপের মধ্যে থাকা উদ্ভিদ ঘণ্টায় ১৩ থেকে ৪০ বার পর্যন্ত কর্কশ শব্দ করে যা শুনে বিজ্ঞানীদের গাছপালার ‘আর্তনাদ’ বলে মনে হয়েছে।

কেন মানুষ গাছপালার করা আর্তনাদ বা শব্দ শুনতে পাচ্ছে না?

মানুষ সর্বোচ্চ ২০ কিলোহার্টজের (kHz) শব্দ শুনতে পায়। তবে এই ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হ্রাস পায়। ২০ এর উপরে ফ্রিকোয়েন্সিগুলিকে অতিস্বনক শব্দ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।  জলের অভাবে উদ্ভিদ ৪০ কিলোহার্টজের (kHz) থেকে ৮০ কিলোহার্টজের (kHz) শব্দ করে থাকে। এটি একটি খুব উচ্চ কম্পাঙ্কের (ফ্রিকোয়েন্সি) শব্দ যা আমরা শুনতে পারি না।

মানুষের কান কোন কোন শব্দ শুনতে পারে?

বেশিরভাগ গবেষণায়, এটি বিশ্বাস করা হয় যে ৬০ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দ আমাদের জন্য স্বাভাবিক বা শ্রবণযোগ্য। এর চেয়ে বেশি শব্দ কানের পর্দাকে প্রভাবিত করতে পারে। মানুষের শ্রবণযোগ্য শব্দ মাপার একক হল ডেসিবেল। পাতা ঝরে পড়ার বা শ্বাস নেওয়ার শব্দ ১০ থেকে ৩০ ডেসিবেলের মধ্যে হয়ে থাকে।  এগুলি এমনই ক্ষীণ শব্দ যা সারাক্ষণ আমাদের চারপাশেই থাকে, কিন্তু আমাদের কানে পৌঁছায় না।

অতিস্বনক শব্দ (ultrasonic sound) কী?

অতিস্বনক শব্দ বা আল্ট্রাসনিক সাউন্ড একটি ভিন্ন ধরনের শব্দ নয়, একটি সাধারণ শব্দ, তবে এটি এমন উচ্চ কম্পাঙ্কের শব্দ যা আমাদের শ্রবণের সীমার বাইরে। তবে আল্ট্রাসনিক সাউন্ড কুকুর, ইঁদুর এবং বাদুড় শুনতে পায়। 
 

বিভি/ এসআই

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2