• NEWS PORTAL

  • সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

এবারো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে জামায়াতকে নিয়ে আপত্তি

প্রকাশিত: ১৯:২৯, ১৯ মে ২০২৪

আপডেট: ১৯:৪০, ১৯ মে ২০২৪

ফন্ট সাইজ
এবারো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে জামায়াতকে নিয়ে আপত্তি

দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে দেশের সবচেয়ে বড় দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। ক্ষমতায় যেতে এই পুরো সময়ই আন্দোলনে থেকেছে দলটি। কখনো জোটবদ্ধ আবার কখনো যুগপৎ। কিন্তু আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরাতে আন্দোলনে যে দক্ষতা প্রয়োজন তা প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছে বর্তমান নেতৃত্ব। সবশেষ আন্দোলনেও সফলতা পায়নি তারা। উল্টো আন্দোলনের গতি আনতে নেতাকর্মীদের দেয়া কয়েক কোটি টাকা তস্রুফের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন মহানগর জেলার নেতাদের বিরুদ্ধে।

এদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর আন্দোলন নিয়ে আবারো মাঠে নামার চিন্তা করছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। এজন্য টানা পাঁচ দিন ধরে মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে বিএনপি। ওই বৈঠকে আন্দোলনের কর্মকৌশল এবং জামায়াতে ইসলামী ও ভারত প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, বিশ্বস্ত দলগুলো থেকে কমপক্ষে সাতজনকে নিয়ে একটি আন্দোলন পরিচালনা কমিটি করার প্রস্তাব এসেছে। কারণ দ্বাদশ নির্বাচনের আগে আন্দোলন পরিচালনায় ব্যপক সমন্বয়হীনতা এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীকে সম্পৃক্ত করতে ব্যাপকভাবে পরামর্শ এসেছে। তবে আপত্তি জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত দলগুলো। ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

গণতন্ত্র মঞ্চের একটি সূত্র জানায়, জামায়াতের সাথে আন্দোলন করতে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার তেমন আপত্তি নেই। তবে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং জেএসডির প্রতিনিধিত্ব করা দলটির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের ঘোর আপত্তি জানিয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চের এই আপত্তির সাথে তাল মিলিয়েছে বাম রাজনীতি থেকে বিএনপিতে আসা বেশ কিছু নেতা। তাদের মধ্যে লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যও আছেন।

জামায়াতের বিষয়টি নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডে আলোচনা হয়েছে। গতকাল শনিবার ভার্চয়াল বৈঠকে তাদের আপত্তিতে বিব্রত হয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। অস্বস্তিও প্রকাশ করেছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে সোমবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। 

এদিকে নতুন একটি দলের আহ্বায়ক বলেন, জামায়াতকে নিয়ে বিভাজন করা এবং মিডিয়ার মাধ্যমে বিতর্ক তুলে দেয়ায় আন্দোলন শক্তিশালী না হয়ে দুর্বল হবে। ফলে আবারো এর সুবিধা নিবে সরকার। কারণ কৌশল করেই জামায়াতকে বিএনপি এবং যুগপৎ আন্দোলন থেকে দুরে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, জামায়াতের একটি মহানগরে যে সংখ্যক কর্মী আছে, যারা আপত্তি জানিয়েছে সারাদেশেও সে পরিমান কর্মী তাদের নাই। জামায়াত আন্দোলনের ফ্রন্ট সাইটে আসলে কমপক্ষে ১০টি জেলা ও ৫টি মহানগরে ৫শ’ লোক নিয়ে কর্মসূচি পালন করতে পারবে। যাতে আন্দোলনে গতি পাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণতন্ত্র মঞ্চের একজন নেতা জানান, যুগপতের বাইরেও অনেক দল আন্দোলন করছে। এই সমীকরণেই থাকা উচিত। জামায়াতকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের কোনো বাস্তবতা নেই। এতে বিভাজন তৈরি হবে।

১২-দলীয় জোট এবং অলি আহমদের এলডিপিসহ আরও কয়েকটি দল যুগপৎ আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীকে যুক্ত করে সামনের কর্মসূচি গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে। গতকাল শনিবার মগবাজার এলাকায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলনে বিরোধিতাকারীদের বিরুদ্ধেই কথা বলেছেন অলি আহমদ।

তিনি বলেন, হাল চাষের জন্য ন্যূনতম হলেও গরু দরকার হয়। ছাগল দিয়ে চাষ হয় না। সরকারবিরোধী ৬২টি দলের মধ্যে কয়টা দল রাস্তায় নেমে মিছিল করার মতো শক্তি রাখে, তা তো বুঝতে হবে। শুধু একটা নাম নিয়ে, ঝান্ডা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাব, পেছনে স্ত্রীকে বা মেয়েকে নিয়ে দল চালাব, এরপর সরকারের সঙ্গে দালালি করব। এ ধরনের প্রোগ্রাম হলে তো সরকারের পতন হবে না।’

১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ‘জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলনে কোনো আপত্তি নেই। এখন অত্যন্ত কঠিন একটা সময় পার করছি। এ সময়ে আমরা আমাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধারের লড়াইয়ে নিয়োজিত হওয়া দরকার।

যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলোর অন্যতম সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘জামায়াতকে যুগপৎ আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার প্রস্তাব এসেছে। ভিন্নমতও আছে। এটি বিশদ আলোচনার বিষয়। এক বৈঠকেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।’

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: