বিএসএফের কোন গুলির বিচার ফ্যসিস্ট হাসিনা করতে পারেনি: সারজিস

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, যে আপনাদের কথা শুনবে, আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুুত থাকবে, জবাবদিহি করার জন্য প্রস্তুুত থাকবে তাকেই আগামী সংসদে আপনার প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করুন। একাটা জিনিস মনে রাখুন, দল আর মারকা দেখার সময় শেষ। এখন সময় যোগ্যতা দেখার।
তিনি বলেন, পঞ্চগড়-১ আসন দেশের এক নম্বর আসন। পঞ্চগড় থেকে আগামীর রাজনীতিতে সামনে থেকে বসে থাকা ভাই বোনদের সংসদে পলিসি মেকিং এ দেখতে চাই। সংসদে তাদের এমপি, মন্ত্রী, রাস্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই।
তিনি আর বলেন, বিভিন্ন সীমান্ত এলাকার মানুষকে বিএসএফের গুলিতে মরতে হয়। কোন গুলির বিচার ফ্যসিস্ট হাসিনা করতে পারেনি। যারা এই বিচার করতে দেয়নি। যারা ভারতের সেবাদাস হিসেবে ছিল, যারা ভারতের সাথে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক বেধেছিল, তাদের বিচার করতে হবে।।
শিক্ষার্থীদের বাবা মায়েদের উদ্দেশ্য করে সারজিস আলম বলেন, আপনাদের সন্তানদের শুধু ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন না দেখিয়ে তাদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে উঠতে বলুন, নাহলে একজন যোগ্য, মেধাবী, সৎ, ন্যায়পরায়ন রাজনীতিবিদ হয়ে উঠতে বলুন।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে শহীদ পরিবারের সাথে সাক্ষাত, দুর্নীতি, চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। পঞ্চগড় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রিয় সমন্বয়ক এসআই শাহীন, রাকিবুল রানা মাসুদ, জহির রায়হান, তরিকুল ইসলাম, আবু সাঈদ লিওন বক্তব্য দেন। এতে জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফজলে রাব্বি, মোকাদ্দেছুর রহমান সান, আতিকুর রহমান আতিক প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, হাজার ছাত্র জনতা শহীদের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি, কোন কালো শকুন যদি সেই স্বাধীনতাকে যেকোন রুপে আকড়ে ধরার, থাবা দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে সেই শকুনকে পঞ্চগড় থেকে শুরু করে সেই ছাত্র জনতা একসাথে এক সাথে উপড়ে ফেলতে হবে, ছিড়ে ফেলতে হবে।।
পঞ্চগড় নিয়ে কোন বৈষম্য করা হলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সাথে বাংলাদেশের সাথে সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র স্থান তেঁতুলিয়া বাংলাবান্ধা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি।।
১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ অন্য কোন দলকে ঠিকভাবে রাজনীতি করতে দেয় নি। অন্য কোন রাজনৈতিক দলকে ঠিকভাবে মত প্রকাশ করতে দেয় নি। অন্য দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা আপনার আমার মতো সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামার কারণে যদি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় তাহলে এরকম কিছু সিন্ডিকেট আমরা ফু মেরে উড়িয়ে দিতে পারবো।
এ সময় সমন্বয়করা রাষ্ট্র সংস্কার ও দেশ পুনর্গঠন করতে অন্তরবর্তীকালীন সরকারের যতটুকু সময় প্রয়োজন ততটুকু সময় দিতে হবে বলে জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবু সাঈদ লিয়ন, তারিকুল ইসলামসহ ঢাকা ও রংপুরের ১৮ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। পঞ্চগড়ের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাসহ হাজারো ছাত্র জনতা সভায় অংশ নেয়। এর আগে তারা পঞ্চগড়ের শহীদ পরিবারগুলোর স্বজনদের সাথে মতবিনিময় করেন। আহত ও নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন তারা।
আজকের পর থেকে কোন মানুষকে পোষাক বা দাড়ি টুপি দেখে জাজ করা যাবে না। মানুষকে তার কাজ দেখে মূল্যায়ন করতে হবে। কেউ অন্যায় করলে, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তাকেসহ তার আশ্রয় ও প্রশ্রয়দাতাকে সকলকে আইনের আওতায় এনে কেরানিগঞ্জে পাঠাতে হবে। আজকে যদি ফ্যাসিস্ট হাসিনা যাওয়ার পরে অন্য কোন গোষ্ঠী, কতিপয় মানুষ যদি একই কাজ করে আমরা তাকে সমর্থন দেবো না। যারা এই ফ্যাসিস্ট কায়েম করতে চাইবে, যারা আবার মামলা দিয়ে টাকার ব্যবসা শুরু করবে তাদের ছাত্র জনতা প্রতিহত করবে।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: