জামায়াত নেতার জানাজায় আওয়ামী লীগের এমপি (ভিডিও)

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও ২০১৮ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জোটের প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ হানিফ গত রোববার ইন্তেকাল করেছেন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সদস্য ও দিনাজপুর উত্তর সাংগঠনিক জেলার কর্মপরিষদ সদস্য ছিলেন।
গতকাল সোমবার (২৫ জুলাই) বিকেলে মেয়র মাওলানা মোহাম্মদ হানিফ এর দ্বিতীয় জানাযা অনুষ্ঠিত হয় নিজ গ্রাম উপজেলার সাতোর ইউনিয়নের বটতলী বাজার সংলগ্ন আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। জন্মস্থানের হাজার হাজার মানুষ অশ্রু সজলে বিদায় দেন তাদের মাটির প্রিয় সন্তানকে।
বীরগঞ্জের সাবেক মেয়রের দ্বিতীয় জানাযায় উপস্থিত হয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য মনোরঞ্জনশীল গোপাল বলেন, মাওলানা মোহাম্মদ হানিফ সাহেবের মুত্যু বীরগঞ্জের প্রতিটি মানুষের হৃদয়কে ব্যথিত করেছে। লোকজন আমাকে বলেছেন, পাইলট স্কুল মাঠে বীরগঞ্জের ইতিহাসে এতো বড় জানাজা আর কখনো হয় নাই। বিষয়টি হচ্ছে, সত্যিকার অর্থে তিনি একজন ভালো, একজন সৎ মানুষ, যার কাছে দল মত বিষয় ছিলো না। একজন ভালো মানুষকে হারালাম। তার সাথে যখনই এবং যতবারই কথা হয়েছে, তিনি কখনই প্রতিহিংসা পরায়ন ছিলেন না। যার কারণে তিনি সবার কাছে একজন শ্রদ্ধাভাজন মানুষ হয়ে উঠেছিলেন। আজকে নিঃসন্দেহে অনুসরণ-অনুকরন করার মতো একজন ব্যক্তিত্বকে হারালাম। আমি তাঁর মাগফেরাত কামনা করি। মহান আল্লাহ তায়ালা বেহেশতের সর্বোচ্চ স্থানে তাঁকে অধিষ্ঠিত করুন। এটাই আমাদের কামনা।
এরআগে বীরগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সকাল সাড়ে ১১টায় মেয়র মাওলানা মোহাম্মদ হানিফ এর প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেই জানাযায় হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়। স্থানীয়রা বলেন, স্কুল মাঠের কোথাও তীল ধারণের ঠাইঁ ছিলোনা। জানাযার নামাজের ইমামতি করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম।
জানাজায় বীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোশাররফ হোসেন বাবুল, উপজেলা চেয়ারম্যন আমিনুল ইসলাম, বিএনপির পৌর ও উপজেলা সেক্রেটারী ও কাহারোল উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ, বীরগঞ্জ উপজেলার এসিল্যন্ড কামাল হোসেনসহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতা এবং দিনাজপুরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, মাওলানা মোহাম্মদ হানিফ কওমী নেসাবের একজন আলেম। পড়ালেখা করেছেন হাটহাজারীতে। করতেন ইমামতি, দিতেন খুতবা। তিনি আবার জনসেবাও করতেন। একজন আলেম কিভাবে জনপ্রতিধি হন তা পৌনসভার মেয়র হানিফ সাহেব প্রমাণ করেছেন। রাজনীতি মানুষের সেবার জন্য।
তিনি বলেন, মাওলানা হানিফ জামায়াতের ইসলামীর প্রার্থী ছিলেন। একজন একেক দল করবেন। কেউ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত। এটা গণতান্ত্রিক অধিকার। সবার উদ্দেশ্য উদ্দেশ্য একটাই মানুষের সেবা করা। জামায়াতে ইসলামী মানুষের সেবা করার জন্যই রাজনীতি করে। আমাদের জানামতে তার কাছে কেউ কিছু পাবেন না। তারপরেও মেয়র হানিফের কাছে কেউ যদি কিছু পেয়ে থাকলে আমাদের বলবেন। জামায়াতে ইসলামী তার দল হিসেবে সব দেনা পরিশোধ করবে।
২০০৩ সালে নবগঠিত বীরগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মাওলানা মোহাম্মদ হানিফ। এরপর ২০১০ সালে নির্বাচনে তিনি প্রথম নির্বাচিত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০১৫ সালের নির্বাচনে দ্বিতীয় দফা মেয়র হিসেবে নির্বচিত হন। ২০১৮ সালে বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোট থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করেন।
বিভি/এনএম
মন্তব্য করুন: