• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

প্রবল ঘূর্ণিঝড় দিয়ে আল্লাহ ধ্বংস করেছিলেন যে জাতিকে

ইমরান মাহমুদ

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ১ জুন ২০২৪

ফন্ট সাইজ

আদ জাতি, যাদের আল্লাহ দিয়েছিলেন প্রচন্ড রকমের দৈহিক শক্তি। তারা ছিলো নূহ (আ) এর ছেলে সাম এর বংশধর। কিন্তু যখন আল্লাহর আজাব আসে, তখন পৃথিবীর কোন শক্তিই তাঁর সামনে টিকতে পারে না। তারই উদাহরণ হচ্ছে এই আদ জাতি।

আদ জাতিকে বলা হয় আরব অঞ্চলের প্রথম বাসিন্দা। তারা প্রাচীন আরব অথবা ধ্বংসপ্রাপ্ত বাসিন্দা হিসেবেও পরিচিত। নূহ (আ) এর পূত্র সামের বংশধরদের একজনের মান ছিলো আদ। তাঁর নাম অনুসারেই পুরো জনগোষ্ঠী আদ জাতি নামে পরিচিতি পায়। আদ এর দাদার নাম ছিলো ইরাম। আদ ও সামুদ দুটি জাতিই ইরামের দুই শাখা। তাদের বসতি ছিল আম্মান থেকে শুরু করে হাজরামাউত ও ইয়ামান পর্যন্ত। 

আল্লাহ আদ জাতিকে প্রচন্ড শক্তিশালী করে গঠন করেন। তাদের মূল জীবিকা ছিলো কৃষিকাজ। আল্লাহ তাদের এই কাজেও বর্কত দেন এবং তাদের শষ্যক্ষেত গুলো ছিলো সবুজ শ্যামল। এ সম্পর্কে আল্লাহ কোরআনে বলেন, “আপনি কি দেখেননি, আপনার প্রতিপালক আদ জাতির সঙ্গে কিরূপ আচরণ করেছিলেন; সুদীর্ঘ দেহের অধিকারী ইরাম গোত্রের সঙ্গে? যার সমতুল্য জাতি এর আগে অন্য কোনো দেশে সৃষ্টি হয়নি।” [সুরা ফজর , আয়াত ৬-৮]

কিন্তু তারা ছিলো প্রচন্ড অহংকারী। শুধু তাই না। নূহ (আ) এর মহাপ্লাবণের পর তারাই আবার পৃথিবীতে মূর্তিপূজা শুরু করে। আল্লাহ তাদের হেদায়েতের জন্য তাদের মধ্য থেকেই হযরত হুদ (আ) কে পাঠালেন। আল্লাহ কোরআনে বলেন, “আদ জাতির কাছে আমি তদের ভাই হুদকে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, “হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা শুধু আল্লাহর উপাসনা কর। তিনি ব্যতীত অন্য কোনো উপাস্য নেই, তোমরা কি সাবধান হবে না?’ [সুরা আরাফ, আয়াত  ৬৫]

হুদ (আ) আদ জাতিকে অকের পর এক সতর্ক বার্তা দিতে থাকেন। তিনি তাদের এক আল্লাহর উপাসনা করতে বলেন, সব ধরণের মুর্তিপুজা ও শিরক থেকে তাদের দূরে থাকতে বলেন। কিন্তু তারা তবুও ঈমান আনেনি। গুটি কয়েক লোক ছাড়া পুরো জাতিই তাদের শিরক বজায় রাখে। তারা হুদ (আ) কে বলে, “তুমি কি আমাদের নিকট এ উদ্দেশ্যে এসেছে যে, আমরা যেন শুধু আল্লাহর উপাসনা করি এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণ যার উপাসনা করতো তা বর্জন করি? সুতরাং তুমি সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যে আযাবের ভয় দেখাচ্ছ তা নিয়ে আস।”  [সুরা আরাফ, আয়াত ৭০]

অর্থাৎ তারা এক অর্থে আল্লাহর সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলো। ফলশ্রুতিতে তাদের উপর নির্ধারিত আজাব এসে উপস্থিত হলো। তবে মহান আল্লাহ হছহেন অত্যন্ত দয়ালু, তাই তিনি শুরুতেই তাদের ধ্বংস করে দেননি। তিনি প্রথমে তাদের উপর অনাবৃষ্টি দিলেন, ফলে তাদের শষ্য শ্যামল ফসলের ক্ষেতগুলো শুকিয়ে গেল। শুরু হলো প্রচন্ড দুর্ভিক্ষ। কিন্তু তবুও তারা ঈমান আনলো না। এর পর আল্লাহ তাদের উপর পাঠালেন চূড়ান্ত আজাব।

তাদের উপর আঘাত হানলো প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়। যে ঝড় স্থায়ী ছিলো টানা ৮ দিন, ৭ রত। প্রচন্ড এই ঘূর্ণিঝড়ে তাদের বাগান, ঘড়-বাড়ি সব উড়ে গেল। তারা নিজেরা খুবই শক্তিশালী শারীরিক গঠনের অধিকারী ছিলো। কিন্তু এই গঠন তাদের কোন কাজেই আসলো না। তারাও সেই বাতাসে তুলার মতো উড়তে থাকলো। পুরো জাতি নির্জীব অবস্থায় উপুর হয়ে মাটিতে পরে থাকে। আল্লাহ হুদ (আ) ও তাঁর অনুসারীদের রক্ষা করেছিলেন। কিন্তু যে জায়গায় আদ জাতির উপর আজাব এসেছিলো সে জায়গা এখনও ধু ধু মরুভূমি অবস্থায়ই পড়ে আছে।

এভাবেই আল্লাহ ধ্বংস করে দিলেন আদ জাতিকে। তাদের শক্তি, সম্পদ কোনকিছুই তাদের রক্ষা করতে পারেনি। শুধুমাত্র তাদের ঈমান তাদের রক্ষা করতে পারতো। আর এই আদ জাতির ঘটনা আল্লাহ কোরআনে বর্ণনা করেছেন যেন এ থেকে আমরা সতর্ক হতে পারি।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: