যে রুমে আল কুরআন থাকে, সেখানে স্ত্রী সহবাস করা যাবে কিনা জেনে নিন

মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে পবিত্র কুরআন মানবজাতির জন্য এক উপহার। সঠিক পথ প্রদর্শন এবং জীবন বিধান হিসেবে আল কুরআন সর্বোত্তম দিক নির্দেশক। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর উপর দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে নাযিল হয়েছে আল কুরআন। এতে রয়েছে সমগ্র মানুষের সব ধরনের কাজের সুস্পষ্ট বিবরণ।
পবিত্র কুরআনকে সম্মান করা ও সংরক্ষণ করা আবশ্যক হওয়ার ব্যাপারে আলেমদের মাঝে কোন মতভেদ নেই। ইমাম নববী বলেন: “আলেমগণ কুরআনগ্রন্থকে সংরক্ষণ করা ও সম্মান করার ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে একমত।” [আল-মাজমু (২/৮৫)]
আলেমগণ এমন কিছু অবস্থা উল্লেখ করেছেন যেগুলোতে পবিত্র কুরআনের অপমান হয়; যেমন- কুরআনকে মাটিতে ফেলে রাখা কিংবা নাপাক জায়গায় ফেলে রাখা কিংবা পা দিয়ে মাড়ানো কিংবা থুথু ফেলা ইত্যাদি যে অবস্থাগুলো আল্লাহ্র বাণীকে অপমান করার প্রমাণবহ।
এ অবস্থাগুলোর মধ্যে যে রুমে কুরআনগ্রন্থ রাখা আছে সেই রুমে স্ত্রী সহবাস করার অবস্থাটি নেই; চাই কারো অন্য কোন রুম থাকুক কিংবা না থাকুক। অধিকাংশ মুসলমানদের ঘরে কুরআনগ্রন্থ থাকে। আলেমদের যতগুলো কিতাব দেখা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে এতে আমরা আলেমদের এমন কোন কথা পাইনি যে, যেই রুমে কুরআনগ্রন্থ আছে সেই রুমে স্ত্রী সহবাস করা যাবে না।
যদি এমন কিছু হত তাহলে অবশ্যই তারা তাদের গ্রন্থসমূহে সেটি উল্লেখ করতেন ও বর্ণনা করতেন; যেমনিভাবে তারা অন্যান্য বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন। যেহেতু তারা এমন কিছু বা এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ কিছু উল্লেখ করেননি সুতরাং এটি মূল (জায়েয) অবস্থাকে আঁকড়ে ধরা ও মূলের উপর বহাল থাকার প্রমাণ বহন করে।
এক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস (রা.)-কে জিজ্ঞেস করেছিল: আমি যে বিছানায় স্ত্রীকে সহবাস করি সেই বিছানার উপর মুসহাফ (কুরআনগ্রন্থ) রাখতে পারব? তিনি বললেন: হ্যাঁ।” [এই উক্তিটি আব্দুর রাজ্জাক তার মুসান্নাফ নামক গ্রন্থে (২/১৭১) বর্ণনা করেছেন এবং ইবনে আবু দাউদ আল-মাসাহিফ নামক গ্রন্থে (৪৪৬) বর্ণনা করেছেন]
স্থায়ী কমিটির আলেমগণকে প্রশ্নকারীর মাসয়ালাটির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি মাসয়ালা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: “বেড রুমে কুরআন ঢুকানো, ঘুমানোর আগে বিছানায় কুরআন পড়া ও একটি লোহার বক্সের ভেতরে বেড রুমে কোরআন রাখা কি জায়েয?
জবাবে তারা বলেন: কুরআনে কারীম বেড রুমে ও বিছানার উপর পড়া জায়েয; যদি ব্যক্তি জুনুবী (সহবাস উত্তর গোসল ফরয হওয়ার অবস্থা) না হয় এবং মুসহাফ থেকে পড়াকালে ওযু অবস্থায় থাকে।”
যদি বেড রুমে মুসহাফ রাখা হারাম হত; অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর মিলন যেই রুমে সংঘটিত হয়ে থাকে; তাহলে আলেমগণ সেটা উল্লেখ করতেন এবং সেটি এড়িয়ে যেতেন না। যেহেতু এটি প্রায়ই ঘটে এবং এটি মানুষের জানা প্রয়োজন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: