• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

হজের ইহরাম করার নিয়মকানুন

প্রকাশিত: ১০:২৮, ২৬ মে ২০২৩

ফন্ট সাইজ
হজের ইহরাম করার নিয়মকানুন

ইসলাম ধর্মের মূল ভিত্ত বা স্তম্ভ পাঁচটি। তার মধ্যে হজ পালন হলো একটি। অর্থাৎ প্রত্যেক সামর্থ্যবান মানুষের ওপর বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ।এই ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল হলে জীবনের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। হজ পালনে মুসলিমদের শারীরিক পরিশ্রম, মানসিক পরিশ্রম,অর্থ ব্যয়, প্রচুর ধৈয্যের পরীক্ষা দিতে হয়। পবিত্র স্থান মক্কায় ‍গিয়ে হজের ফরজ, ওয়াজিব এবং সুন্নতের সমন্বয়ে সঠিক নিয়মে এই ইবাদত করতে হয়।

হজ শব্দটির অর্থ নিয়ত করা, সংকল্প করা, গমন করা, ইচ্ছে করা, প্রতিজ্ঞা করা। অর্থাৎ নিদিষ্ট দিনে নিয়তসহ ইহরামরত অবস্থায় আরাফার ময়দানে অবস্থান করা এবং বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ করাই হচ্ছে হজ।

সঠিক নিয়ম-কানুন মেনে হজ পালন জরুরি।

হজের ফরজ ৩টি- তার মধ্যে ইহরাম বাধা একটি। ইহরাম হলো হজের প্রথম রুকন। হজ করার জন্য প্রথমেই ইহরাম বেঁধে নিতে হয়। এ কারণেই ইহরামকে হজের জন্য ফরজ করা হয়েছে। হজ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ রুকন ‘ইহরাম’ বাঁধার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হলো-

ইহরামের আগে

ইহরাম বাঁধার পূর্বেই গোঁফ, বগল ও নাভীর নিচের লোম পরিষ্কার করা, নখ কাটা, গোসল করে পাক হয়ে যাওয়া আবশ্যক। এমনকি ঋতুবর্তী নারীদেরও এ সময় গোসল করা মুস্তাহাব। সুগন্ধি ব্যবহার করাও মুস্তাহাব।

এ বিষয়ে হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি নিজে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইহরাম বাঁধার আগে তাকে সুগন্ধি মাখিয়ে দিতাম। (বুখারি, মসুলিম, হিদায়া) তবে ইহরাম বাঁধার পর সুগন্ধি ব্যবহার করা নিষেধ।

যেভাবে ইহরাম বাঁধবেন

>> প্রথমেই আত্মিক পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার জন্য গোসল করা। গোসল করা সম্ভব না হলে ওজু করা। চুল কাটার প্রয়োজন না হলে চিরুনি দিয়ে চুলগুলো পরিপাটি করে নেওয়া।

>> গোসলের পর সেলাইহিবীন দুটি কাপড় পরিধান করা। একটি হলো- লুঙ্গি (ইজার) হিসেবে এবং অন্যটি চাদর (লেফাফা) হিসেবে।

>> মীকাতের নির্ধারিত স্থানে অথবা মীকাতের নির্ধারিত স্থানের আগেই ইহরামের নিয়তে দু’রাকাআত নামাজ আদায় করা। নামাজের প্রথম রাকাআতে সুরা ফাতিহা পর সুরা কাফিরুন ও দ্বিতীয় রাকাআতে সুরা ইখলাস পড়া মুস্তাহাব। (নামাজের সময় মাথায় টুপি থাকবে, নামাজ শেষে নিয়তের আগেই টুপি খুলে ফেলা)

>> ইহরামের নিয়ত করা। যদি ওমরা জন্য ইহরাম হয় তাহলে বলবেন- ‘লাব্বাইক ওমরাতান’ (لَبَّيْك عُمْرَةً) আর যদি ইহরাম হজের জন্য হয় তাহলে বলবেন- ‘লাব্বাইক হাজ্জান’ (لَبَّيْك حَجً)

অতঃপর হজ বা ওমরা সহজে সম্পাদনের জন্য ইমাম কুদুরি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এ দোয়াটি পড়তে বলেন-

(اَللَّهُمَّ اِنِّي اُرِيْدُ (العُمْرَةَ - الْحَجَّ) فَيَسِّرْهُ لِيْ وَ تَقَبَّلْهُ مِنِّي)

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদুল উমরাতা/হাজ্জা ফাইয়াসসিরহু লি ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নি’। অর্থ : হে আল্লাহ! আমি ওমরার/হজের ইচ্ছা করছি; আপনি আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করুন।’

>> ইহরামের নিয়তের পর পরই উচ্চস্বরে চার ভাগে (প্রত্যেক ভাগ এক নিঃশ্বাসে) তালবিয়া পাঠ করা (৩ বার)
>> لَبَّيْكَ اَللّهُمَّ لَبَّيْكَ
>> لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ
>> اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ
>> لاَ شَرِيْكَ لَكَ

উচ্চারণ
>> ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক;
>> লাব্বাইক, লা-শারিকা-লাকা লাব্বাইক;
>> ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নি’মাতা লাকা ওয়াল-মুলক;
>> লা শারিকা লাকা।’

মনে রাখতে হবে

উচ্চস্বরে চার ভাগে (প্রত্যেক ভাগ এক নিঃশ্বাসে) তিনবার তালবিয়া পাঠের মাধ্যমে ইহরাম বাঁধার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যায়। তখন থেকে ইহরামকারীর জন্য হজ ও ওমরার কার্যক্রম ছাড়া স্বাভাবিক সময়ের বৈধ কাজও হারাম হয়ে যায়।

পরিশেষে

ইহরাম বাধার পর হজ বা ওমরা পালনেচ্ছুগণ বেশি বেশি তালবিয়া, দরূদ ও নিজেদের ইচ্ছা মতো দোয়া পাঠ করবে। ইহরাম বাধার পর এ দোয়া পাঠ করাও সুন্নাত-

(اَللَّهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ رِضَاكَ وَ الْجَنَّةَ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنْ غَضَبِكَ وَ النَّارِ)

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রিদাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউ’জুবিকা মিন গাদাবিকা ওয়ান্নারি’। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা করছি এবং আপনার অসুন্তুষ্টি ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সঠিকভাবে ইহরাম বেধে যথাযথভাবে হজ ও ওমরা আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিভি/এনএম

মন্তব্য করুন: